বাংলাদেশীদের জন্য মার খাচ্ছে কলকাতার ব্যবসা, লস হচ্ছে প্রচুর! পর্যটক শূন্য মারকুইস স্ট্রিট

।। প্রথম কলকাতা ।।

বাংলাদেশীদের জন্য মার খাচ্ছে কলকাতার ব্যবসা! লস হচ্ছে প্রচুর। ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কলকাতায় আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন ওপার বাংলার মানুষ! কিন্তু কেন? যে মারকুইস স্ট্রিট ছিল এক টুকরো বাংলাদেশ, সেই এলাকা এখন পর্যটক শূন্য। কি বলছেন বাংলাদেশের পর্যটকরা? তারা কেন আসতে চাইছেন না কলকাতায়? তাহলে কি কলকাতা পছন্দ হচ্ছে না বাংলাদেশীদের? কোন অভিযোগে আসছেন না মারকুইস স্ট্রিটে? জানুন কি বলছেন।

কলকাতার মারকুইস স্ট্রিট। যখনি যাবেন দেখবেন গম গম করছে এলাকা। ব্যস্ততার সঙ্গে বাজার দোকান রাস্তায় বাংলাদেশী পর্যটকদের ভিড়। কিন্তু হঠাৎ সেই মারকুইস স্ট্রিট এখন পর্যটক শূন্য। অথচ এই জায়গার অর্থনীতি নির্ভর করছে পর্যটকদের উপর। আর সেখানেই এখন ধস। কারণ জানতে ঢুঁ দিল ‘প্রথম কলকাতা’র ক্যামেরা।

মার্কুইস স্ট্রিটকে এক টুকরো বাংলাদেশ বললে খুব একটা ভুল হবে না। এখানে পর্যটকদের জন্য মানি এক্সচেঞ্জ থেকে শুরু করে থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। কলকাতার সঙ্গে বাংলাদেশের ভাষা সংস্কৃতির প্রচুর মিল। বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া বহু জিনিস পাবেন এই বাজারে। রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে যে লোকটার সঙ্গে আপনার দেখা হবে, সেও কিন্তু কথা বলবে খুলনা কিংবা কুমিল্লার ভাষায়। এখানকার ব্যবসায়ীদের মূল অবলম্বন বাংলাদেশের মানুষ। ১০ মিনিট হাঁটা দুরত্বেই রয়েছে নিউমার্কেট। যেখানে বড় অঙ্কের ব্যবসা হয় বাংলাদেশের পর্যটকদের ঘিরে।

মধ্য কলকাতার বুকে বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য বিখ্যাত এই স্ট্রিটের দুই ধার জুড়ে রয়েছে শত শত দোকান হোটেল। অথচ কয়েকদিন ধরে এলাকাটা পর্যটক শূন্য। এখানে বাংলাদেশীদের আসার প্রবণতা কমছে। যারা আসছেন তারা নিতান্ত প্রয়োজনে। ভ্রমণ বা কেনাকাটার জন্য পর্যটকদের সংখ্যা তলানিতে। মানি এক্সচেঞ্জের দোকানগুলো একদম ফাঁকা। লোকজন নেই। ‘প্রথম কলকাতা’র প্রতিনিধি মারকুইস স্ট্রিটে কয়েকজন ব্যবসায়ী এবং পর্যটককে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা গেল আসল কারণ।

তারা জানান, মূলত দুই দেশের বর্ডারে হ্যারাসমেন্টের শেষ নেই। বেনাপোল পেট্রাপোলে পোহাতে হচ্ছে হাজারো ঝঞ্ঝাট। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই পা ব্যথা। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পেতে সময় লাগত ৩৫ থেকে ৪০ মিনিটে, এখন সময় লাগছে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টা। একই অবস্থা ভারতের ইমিগ্রেশনেও। তারপর ভিসা পেতে পোড়াতে হচ্ছে বিস্তর কাঠখর। আগ মেডিক্যাল ভিসা তিন থেকে চারদিনে হয়ে যেত। এখন সময় লাগছে এক সপ্তাহ। টুরিস্ট ভিসার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে এক মাস।। তারপর বর্ডারে একরকম টাকার রেট, কলকাতায় আরেক রকম। ভারতে টাকার মান পড়ে যাওয়ায় ফেল করছে বাংলাদেশীদের বাজেট। কলকাতায় বাংলাদেশের ১০০ টাকা ভাঙালে পাওয়া যাচ্ছে ৭৩ রুপি মতো। বিমান ভাড়া অনেকটা বেশি। ট্রেনের টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে না। হোটেল ভাড়া আগের থেকে বেড়েছে অনেকটা। পরিবহন গুলো একদম ফাঁকা যাচ্ছে। যার পুরোটাই নির্ভর করে বাংলাদেশি পর্যটকদের উপর। মার খাচ্ছে ব্যবসা। সমস্যা কমাতে বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে ঘোজাডাঙা বর্ডারের কথা। হোটেল পাড়ার সেই জমজমাট বাজার যেন এখন সুখ স্মৃতি। এই মুহূর্তে দরকার সরকারি উদ্যোগ। সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশের মানুষ কলকাতায় আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version