।। প্রথম কলকাতা ।।
International Mother Language Day: বাঙালি প্রাণের ভাষা বাংলা ভাষা। নিজেদের মাতৃভাষাকে (Mother Language) নিয়ে আজ গর্ব করার দিন। ভাষার অধিকার ছিনিয়ে নিতে হয়েছিল জোর করে। ঝরেছিল প্রচুর যুবকের তরতাজা রক্ত। খালি হয়েছিল মায়ের কোল। পৃথিবীর যে প্রান্তে বাঙালি থাকুক না কেন একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাতে ভোলেন না। ভাষা দিবস এক আলাদা আবেগ, তাই তো মনে বারবার বেজে ওঠে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলতে পারি”। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (International Mother Language Day) হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি (21 February) স্বীকৃতি পেয়েছিল। ভাষা দিবস উপলক্ষে কলকাতা (Kolkata) থেকে ঢাকা (Dhaka), সেজে উঠেছে নানা আয়োজনে। ২০২৩ এ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার থিম ‘ বহুভাষিক শিক্ষা- একটি বহুভাষিক বিশ্বের শিক্ষাকে রূপান্তরিত করার প্রয়োজনীয়তা”।
বাঙালির কাছে একুশে ফেব্রুয়ারির আলাদা আবেগ রয়েছে। মধ্যরাত থেকে একুশের গান বাজছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ভাষা শহীদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষ খালি পায়ে হেঁটে চলেছেন। হাতে ফুল, পরনে কালো পোশাক। রাত ১২টা ১ মিনিটে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদে স্পিকার, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনৈতিক, উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা সহ অনেকে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ একুশে ফেব্রুয়ারির উদ্দেশ্যে এখানে জড়ো হয়েছেন। ঢাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শহীদ মিনারে প্রবেশের আগে রয়েছে চারটি নিরাপত্তা তল্লাশি।
কলকাতার রাজপথও ভাষা দিবস উপলক্ষে সেজে উঠেছে। তিন দিন ধরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি। একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল হতেই কলকাতার রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতিকে। বীর ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় ও স্মরণে প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে ” নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই”। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছে নিউটাউন উৎসব ও মেলা কমিটি। রাজপথে সবাই একসাথে পা মিলিয়েছেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সদস্যদের সঙ্গে। তারপর শহীদদের উদ্দেশ্যে সবাই পুষ্পস্তবক সহ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগ হয়েছিল। ভারত পেয়েছিল দেশভাগের যন্ত্রণা। অপরদিকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে শুরু হয় অন্য সমস্যা। জোর করে বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় উর্দু ভাষা। বাঙালির পক্ষে যা মেনে নেওয়া অসম্ভব ছিল। অবশেষে পরিস্থিতি চূড়ান্ত আন্দোলনের রূপ লাভ করে। ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাঙালি যুবক সালাম, বরকত, রফিক, সফিউর, জব্বারসহ প্রচুর বীর সন্তান। ১৯৫৬ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম