International Mother Language Day 2023: মুক্তিযুদ্ধের বীজ লুকিয়ে মাতৃভাষা আন্দোলনে, বাংলা বাঁচাতে গর্জে উঠেছিল বাঙালি

।। প্রথম কলকাতা ।।

International Mother Language Day 2023: দেশভাগ ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল বাঙালিকে। একদিকে সব হারানোর যন্ত্রণা, অপরদিকে কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয় নতুন ভাষা। যে ভাষার ভার বড্ড শক্ত। নিজের প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষাকে (Mother Language) ছেড়ে অন্য ভাষাকে সেদিন বাঙালি আপন করে নিতে পারেনি। তার জন্যই ঝরে ছিল তরতাজা যুবকের রক্ত। ২১শে ফেব্রুয়ারি সঙ্গে জুড়ে রয়েছে রক্তাক্ত দিনের কথা। মাতৃভাষায় কথা বলা মানুষের অধিকার অথচ সেই অধিকারকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা। বাঙালি মানবে কেন? তার বিরুদ্ধে বারংবার প্রতিবাদ করেছে। অবশেষে বেছে নিয়েছে আন্দোলনের পথ। বহু ঐতিহাসিক মনে করেন, বাংলাদেশ (Bangladesh) স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সৃষ্টির অন্যতম পদক্ষেপ ভাষা আন্দোলন। যদি ভাষা আন্দোলন না হত তাহলে মুক্তিযুদ্ধ হত অনেক দেরিতে।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। পাশাপাশি পেয়েছিল দেশভাগের যন্ত্রণা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যেখানে বাঙালিদের বাস, তাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্য ভাষা। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হলেও ভাষা নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন নিশ্চিত হওয়ার পরেই রাষ্ট্রভাষা উর্দু হবে নাকি বাঙালিদের প্রাণপ্রিয় ভাষা বাংলা থাকবে তাই নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জলঘোলা শুরু হয়। সেই সময় দাঁড়িয়ে বাঙালিরা মনে করেন, মাতৃভাষায় পরিবর্তে যদি তারা অন্য কোন ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা রূপে আপন করে নেন তাহলে তা দাসত্বের সমান। সেই বিতর্কের দানা ধীরে ধীরে ব্যাপক আকারে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। যেখানে বাঙালিরা থাকে তার থেকে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকতো আর একটা ভূখণ্ড, যাদের সঙ্গে উর্দু ভাষার সম্পর্ক। কিন্তু এই দুই ভূখণ্ডের মানুষের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। সেই সময় বাঙালি চিন্তা করতে থাকে ভাষায় যদি আলাদা হয় তাহলে কিভাবে দুটো ভূখণ্ড এক হবে। আত্ম অন্বেষণে নেমে পড়ে বাঙালিরা।

অপরদিকে মুদ্রা, ডাকটিকিট, ট্রেনের টিকিট সবকিছুতে বাংলাকে বাদ দিয়ে ব্যবহার করা হয় উর্দু আর ইংরেজি ভাষা। বিতর্কের মাঝে আগুনে ঘি ঢালে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহের বক্তব্য। তিনি ১৯৪৮ সালের ২১ শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তান সফরে এসে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। তারপর থেকে টানা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত বাঙালি বারবার বলে গেছে তারা উর্দু নয়, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেতে চায়। সেই বছরই প্রতিবাদ আরো জোরালো হয়ে ওঠে। বলা হয় ভাষা আন্দোলনে ঠিক কত জন বাঙালি যুবক শহীদ হয়েছিলেন এখনো পর্যন্ত তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা পাওয়া যায় না, তবে বারংবার যে নামগুলি পাওয়া যায় সেই তালিকায় রয়েছে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরের নাম। মাতৃভাষা নিয়ে যে আন্দোলন তৈরি হয়েছিল সেখানেই স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বপ্নের বীজ বপন করা হয়। প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি হল বাংলা ভাষার দিন। বিভিন্ন দেশে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশের ঢাকায় গেলে দেখতে পাবেন মেডিক্যাল কলেজের পাশে যে প্রথম শহীদ মিনার রয়েছে সেখান থেকে টেকনাফ তেতুলিয়ার শহিদ মিনার গুলো ফুলে ফুলে ঢেকে গিয়েছে। এই ফুল বাঙালিদের শ্রদ্ধার আর ভালোবাসা। ১৯৫২ সালে লড়াই মূলত বাংলা ভাষা তথা বাঙালির।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version