।। প্রথম কলকাতা ।।
Kolkata: কালী মন্দিরের প্রসাদে চাউমিন। কুহু অমাবস্যায় দেবীর বিশেষ পুজো। কলকাতাতেই এই চাইনিজ কালীবাড়ি।
যাকে আপন করে নিয়েছেন চীনা নাগরিকরাও। ১৮০০ এর দশক থেকে শুরু হয় কলকাতায় চিনাদের আনা-গোনা। ভারতের স্বাধীনতার আগে থেকে কলকাতায় চীনাদের বসবাস। আগে তাঁরা থাকতেন কলকাতার পুরোনো চীনা বাজারে। সেখান থেকে তাঁরা চলে আসেন ট্যাংরা এলাকায়। চীনাদের বসতি গড়ে উঠতে থাকে ট্যাংরা তপসিয়া অঞ্চলে। ইন্দো-চীন যুদ্ধের পর তারা শুরু করে চামড়ার শিল্প।
কিন্তু ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে ফিরে যান অনেকেই। কিন্তু যাঁরা ফিরে যাননি তাঁরা তৈরি করেন রেস্তোঁরা। মোটামুটি নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু হয় কলকাতায় চাইনিজ খাবার। এরপর থেকে চাইনিজ খাবার মিশে যায় বাঙালির সাথে। নিজেদের সংস্কৃতির সাথে বাঙালি সংস্কৃতি আঁকড়ে ধরে চীনারা। তারই একটি উদাহরণ এই ট্যাংরার চীনা কালী মন্দির। ষাট বছর আগে একজন চীন এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এখন তার তৃতীয় পুরুষ এই মন্দিরের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। কলকাতার চীনাপট্টির বাসিন্দারা সময়ের তালে কালীভক্ত হয়ে উঠেছেন।
এমনিতে চীনারা বেশিরভাগই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের। কলকাতার চীনা নাগরিকরাও তাই। যিনি মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন তিনিও ছিলেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভুক্ত। কথিত আছে, আগে এই মন্দিরের জায়গায় ছিল একটি কালো পাথর। যাকে সিঁদুর মাখিয়ে পুজো করতেন এখানকার ভক্তরা।একবার এক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। বহু চিকিৎসককে দেখিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এই সময় ওই শিশুর মা-বাবা তাকে পাথরটির কাছে নিয়ে আসে। তারপর সে সুস্থ হয়ে যায়।তারপরই এখানে মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে কালীমন্দিরটি তৈরি হয়েছে, সেটি গ্রানাইট পাথরের।
এই মন্দিরে দেবীর পুজোয় এক অদ্ভুত রীতি রয়েছে। অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে এখানে হাতে তৈরি কাগজ পোড়ানো হয়। দীপাবলির সময় এই মন্দিরের সামনে চাইনিজ ধূপকাঠি জ্বালানো হয়। দেবীর মূর্তির পাশে রয়েছে মহাদেবের মূর্তিও।কার্তিক বা কুহু অমাবস্যায় এখানে দেবীর বিশেষ পুজো হয়। ভোগ দেওয়া হয় খিচুড়ি, সবজি, পায়েস, মিষ্টি ও ফল। চীনারাও ওই ফলই খান। মন্দিরের প্রসাদ বা ভোগ হিসাবে চাউমিন, সবজিও দেওয়া হয়। শুধু প্রসাদেই ফারাক নয়, এই কালী মন্দিরে গেলেই টের পাওয়া যাবে অন্যান্য কালী মন্দিরের সঙ্গে তফাত
শক্তির দেবীর প্রতি টান থেকেই ধর্মের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে চিনা বৌদ্ধরা জ্বালেন মোমবাতি। মাথা ঠেকান দেবী কালীর চরণে। বিপদ দূর করতে হিন্দু-চিনা একসঙ্গে মা কালীর সামনে পুজোয় বসেন। সব ধর্ম মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় মন্দিরে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম