প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই আজ প্রতিষ্ঠিত ঝাড়গ্রামের মৃৎশিল্পী বিকাশ!

।। প্রথম কলকাতা‌ ।।

অক্ষমতা বাধা নয়! প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই আজ প্রতিষ্ঠিত ঝাড়গ্রামের মৃৎশিল্পী বিকাশ। অনুপ্রেরণা যোগানোর এক অনন্য কাহিনী। অক্ষমতা কখনোই চলার পথে বাঁধা হতে পারে না। তা আরও একবার প্রমান ্করলেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ বিশাল। পেশায় মৃৎশিল্পী তিনি। গতো ৩০ বছর ধরে তিনি গড়ে চলেছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, গণেশ সহ বিভিন্ন ঠাকুরের মূর্তি। কানে শুনতেও পান না মুখে কথাও বলতে পারেন না। জন্ম থেকেই মূক ও বধির। এই প্রতিবন্ধকাকে পরোয়া না করেই একের পর এক নিখুঁত কাজ উপহার দিচ্ছেন মৃৎশিল্পী বিকাশ বিশাল। এককালে খেলার ছলে বানিয়ে ছিলেন কালীর মূর্তি।আর এখন তিনিই প্রতিষ্ঠিত মৃৎশিল্পী।

আনুমানিক ১৯৮৫ সাল। ঝাড়গ্রাম শহরে রাধানগর এলাকায় মামার বাড়িতে খেলার ছলে কালী ঠাকুর তৈরি করেছিলেন বিকাশ। আর সেই কালি ঠাকুরকে পুজো করেছিলেন সকলে। সেই থেকেই নিজের চেষ্টায় ঠাকুর তৈরি করা শুরু। বিকাশ কোথাও ঠাকুর তৈরি করার কাজ শেখেননি। পরিবারের কেউ কোনদিনও ঠাকুর তৈরির কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন না। তাও বিকাশ বছরের পর বছর ধরে গড়ে তুলেছেন একের পর এক নিখুঁত মূর্তি।

ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ব্লকের ধর্মপুর এলাকায় 30 বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন ৪৮ বছরের মৃৎশিল্পী বিকাশ বিশাল। কেবল একার নয়, পরিবারের বাকি সদস্যদেরও রুজি-রুটি জোগাচ্ছেন তিনি।বিশেষভাবে সক্ষম হয়ে উঠেছেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। প্রতি বছর এলাকার একাধিক দুর্গা পূজা মন্ডপে ঠাকুর তৈরির বরাত যেমন পান তেমন লক্ষ্মী, কালী, সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করে। নিজের জেলা ঝাড়গ্ৰাম ছাড়িয়ে একাধিক জায়গায় যোগান দেন। এবছর বিকাশ চারটি মণ্ডপের ঠাকুর তৈরির দায়িত্ব নিয়েছেন।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা’কে হার মানিয়েছে তাঁর মনোবল। তাঁর ঐশ্বরিক প্রতিভাকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা’কে হার মানিয়ে নিখুঁত কাজ মন কাড়ে ক্রেতাদের। নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত মৃৎশিল্পী। মূক ও বধির মৃৎশিল্পীর হাতেই তৈরি হচ্ছে মায়ের অপরূপা মূর্তি। মৃৎ শিল্পী বিকাশ বিশাল এর শিল্পী হয়ে উঠার বাস্তব কাহিনীও সত্যিই অনুপ্রেরণা জোগায়।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version