কাঁটার বর্মে ঢাকা থাকেন পুতিন ? বুলেটপ্রুফ ছাতাই জিওনকাঠি, সঙ্গে ঘোরে বডি ডাবল, ঘিরে রাখে খতরনাক ফোর্স

।। প্রথম কলকাতা ।।

কাঁটার বর্মে নিজেকে ঢেকে রাখেন পুতিন? থাকেন মাটির নীচের কোন গোপন গুহায়? সারাক্ষন ঘিরে রাখে এক ধুরন্ধর স্পেশাল ফোর্স। কিভাবে বিষ মাখানো অস্ত্রে ঘায়েল করে শত্রুকে? ছুঁতে গেলেই কারেন্টের ঝটকা? এই বুলেটপ্রুফ ছাতাই পুতিনের জিওনকাঠি। জানেন? গুপ্তঘাতক থেকে কোন মন্ত্রে নিজেকে রক্ষা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন? কেন সঙ্গে সঙ্গে ঘোরেন পুতিনের ডিটো কপি? প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ফাঁস পুতিনের সেফটি সিকিউরিটির এ টু জেড। পুরোটা জানলে বুঝবেন পুতিনের জীবনের কত দাম। পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাবান রাষ্ট্রপ্রধান। রহস্যের আরেক নাম ভ্লাদিমির পুতিন। ৭১ বছরের পুতিন গোটা পৃথিবীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। কাছে এগোনোর কথা ভাবলেও, আপনি বড় ভুল করবেন। কারণ ২৪ টি ঘন্টা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঘিরে থাকে নিরাপত্তার দুর্ভেদ্য বলয়। এই প্রাচীর ভেদ করে পুতিনের কাছে পৌঁছানোর ভুল করলে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যেতে হবে। ঢুকতে যাবেন নি ত্রিসীমানাতেও। পুতিন বলে কথা। যাকে ঘিরে রয়েছে সুরক্ষার একের পর এক পরত।

তাহলে, জানিয়ে রাখি ভ্লাদিমির পুতিনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ফেডারেল প্রটেকটিভ সার্ভিস। আনুমানিক যার সদস্য সংখ্যা ৫০ হাজার।তারা নিজেদেরকে মাস্কেটিআর বলে পরিচয় দেন।অপারেশনাল সাইকোলজি, কষ্ট সহিষ্ণুতা, প্রচন্ড ঠান্ডা ও গরম দুটোই সহ্য করার মতো তুখোড় ক্ষমতা এগুলো দেখেই তাদেরকে নিয়োগ করা হয়।বয়স হতে হয় ৩৫ এর কম। উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি থেকে ৬ ফুট ২ ইঞ্চি পর্যন্ত। ওজন ৭৫ থেকে ৯০ কেজির মধ্যে। গেরিলা যুদ্ধ থেকে সামরিক মনস্তত্ত্ব, এসবই যে দেহরক্ষীদের নখদর্পণে। ডিউটিতে থাকা অবস্থায় তাদের হাতে একটা বিশেষ ব্রিফকেস থাকে, যা আসলে বিশেষ এক ঢাল। থাকে অত্যাধুনিক অস্ত্রসস্ত্র ও। প্রয়োজনে শত্রুকে শেষ করে দিতে সঙ্গে রাখে বর্মভেদী বুলেট ভরা নাইন মিলিমিটার এসআর ওয়ান ভেক্টর পিস্তল। এরকম একটা পিস্তল পুতিন এর কাছেও থাকে।

তাছাড়া পুতিন যেখানে সফরে যান সেই লোকেশনে ঘটে যাওয়া এবং সম্ভাব্য অপরাধ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয় অন্তত এক মাস আগেই। বন্যা বা ভূমিকম্পের আশঙ্কা সহ সফরের দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে রাখা হয়। সেখানে যেন রিমোট কন্ট্রোল বিস্ফোরণ ঘটানো না যায় তার জন্য পর্যাপ্ত জ্যামিং ডিভাইসও সেট করা হয়। সেই এলাকার সমস্ত ফোন আর ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও থাকে নজরদারিতে। পাবলিক প্লেসে রক্ষীরা ভ্লাদিমির পুতিনকে কয়েক স্তরে ঘিরে রাখে।তার সবচেয়ে কাছে থাকে তার ব্যক্তিগত রক্ষীরা।তারা প্রত্যেকেই যে কোনো হামলাকারীকে ধরাশায়ী করতে সক্ষম। দ্বিতীয় স্তরে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা চারদিকে থাকা সম্ভাব্য আক্রমণকারীর উপর নজর রাখে। তৃতীয় স্তরে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা অযাচিত ব্যক্তিদেরকে পুতিনের কাছ থেকে যথেষ্ট দূরে সরিয়ে রাখতে নিয়োজিত। এই তিন স্তরের নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে থাকে মিনিটে চল্লিশটা গুলি ছুড়তে সক্ষম নাইন এমএম গার্জা পিস্তল।

না এখানেই শেষ নয়। পুতিনের নিরাপত্তার নিয়োজিত চতুর্থ সার্কেলটি স্নাইপার রাইফেল নিয়ে শত্রু নিকেশে সবসময় প্রস্তুত থাকে। পুতিন যেখানে যান সেখানের আশপাশের জায়গার উঁচু ভবনগুলোতে তাঁরা অস্ত্র হাতে তৈরি থাকেন। যদি কেউ ভুলেও পুতিনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন, তাহলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আগন্তুককে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হবে। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট এর মিলিয়ন ডলার দামী গাড়িটা পৃথিবীর অন্যতম নিরাপদ বাহন। বুলেটপ্রুফ গাড়ি তো অবশ্যই। কেমিক্যাল গ্যাস অ্যাটাক প্রুফ ও।সর্বাধুনিক কমিউনিকেশন সিস্টেমে সমৃদ্ধ গাড়িটিতে ভ্রমণের সময়, পুতিনের পেছনে ছোটে একটি সশস্ত্র এসকর্ট গাড়ি। তাতে সেনাবাহিনীর সেরা সদস্যরা সর্বক্ষণ মোতায়েন থাকেন। আর্মার্ড ভ্যান ভর্তি একে ৪৭ রাইফেল, ড্রাগন অফ স্নাইপার রাইফেল আর অ্যান্টি ট্যাংক গ্রেনেড লঞ্চার ধারী সেনা দল। পোর্টেবল অ্যান্ড এয়ারক্রাফ্ট মিসাইল সিস্টেম ও সঙ্গে থাকে। এতো গেল স্থলপথের কথা।

আর আকাশ পথে ভ্রমণের জন্যেও আছে ৫০৪ মিলিয়ান ডলার ব্যয়ে এক স্পেশাল বিমান। ৮৭ টি টেলিফোন সহ এই বিমানে আছে ভিডিও টেলি কনফারেন্স সিস্টেম এবং অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেম এর মতো সর্বাধুনিক সব সামরিক প্রযুক্তি। রাষ্ট্র পরিচালনার যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে এই বিমানেই। কটা বিষয় স্পষ্ট বিশ্বের যত ক্ষমতাবান মানুষই হন না কেন, পুতিনের কাছে যাওয়ার আগে তাঁকে চার দফার তল্লাশি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। তবে শুধু নিরাপত্তা রক্ষী নয় সঙ্গে থাকেন একজন খাদ্য পরীক্ষক ও। যেসব খাবার পুতিনকে পরিবেশন করা হয় তাতে জীবানু বা বিষ আছে কিনা তা চেখে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা আছে। সব সময় সঙ্গে থাকেন একজন দক্ষ চিকিৎসক। মনে রাখবেন পুতিনের মাথায় ধরার ছাতাটিও বুলেটপ্রুফ কেভলার ফেব্রিক দিয়ে তৈরি। এমনকি সঙ্গে থাকেন অবিকল পুতিনের মতো দেখতে বডি ডাবল। যাতে বিপদের সময় হামলাকারীর চোখে ধুলো দেওয়া যায়। সবমিলিয়ে এক কঠিন সুরক্ষাবলয়ে নিজেকে ঢেকে রেখেছেন পুতিন। যে মানুষটি রাশিয়ার শেষ কথা। যে পুতিন গত ২৩ বছর ধরে রাশিয়ায় কার্যত দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে থাকার পর এবার ফের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version