।। প্রথম কলকাতা ।।
মুইজ্জুর একটা ক্লিক, উল্টে গেল মালদ্বীপ। ভারতের এতো দামী সম্পদ কে কোথায় সরিয়ে দিল রাতারাতি? শপথ নেওয়ার পরই মুখোশ খুলল মুইজ্জুর। মোদীর সঙ্গে রিভেঞ্জের খেলা? মাস্টারপ্ল্যান কী চীনের? অপারেট করছেন জিং পিং? ঘনাচ্ছে রহস্য যেতে যেতেও নয়াদিল্লি কোন মাস্টারস্ট্রোক গেঁথে দিল মালদ্বীপে? সাগরের বুকে সেধিয়ে যাচ্ছে মুইজ্জুর মালদ্বীপ? দেশটার গায়ে পঙ্গপালের মতো এগুলো কি ফিট করে দিলেন? কতবড় সর্বনাশ ডেকে আনলেন নিজেই বুঝতে পারছেন না মুইজ্জু। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর শপথে যান নি নরেন্দ্র মোদী। তাহলে কি সেই ঘটনার রিভেঞ্জ নিতেই এতো বড় স্টেপ নিলেন মুইজ্জু? নাকি সবটাই প্রি প্ল্যান্ড?বড় আপডেট আসছে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্র থেকে। শপথ নেওয়ার এক দিন পরেই মালদ্বীপ থেকে ইন্ডিয়ান আর্মির জওয়ানদের সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানালেন মুইজ্জু। একেবারে ১৮০ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে ঘুরে গেলেন রাতারাতি।
ভারত বিরোধী প্রচার করে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতেছেন মহম্মদ মুইজ্জু! মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার ছিল তাঁর নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার! কিন্তু ভোটে জেতার পর ভারত বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসেন মুইজ্জু। সাফ জানিয়ে দেন, আগামী দিনে ভারত, চীনের মতো দেশের সঙ্গে একই সঙ্গে কাজ করবে মালদ্বীপ কিন্তু, শপথ নেওয়ার পরই খেলা ঘোরাচ্ছেন মুইজ্জু। অলরেডি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছেন মুইজু। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ভূবিজ্ঞানমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তাঁর সঙ্গে দেখা করেই সরকারিভাবে সেনা সরানোর অনুরোধ করেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু কত বড় ভুল করছে মালদ্বীপ সেটা বুঝতে পারছেনা।
মালদ্বীপে বিদেশী সেনা বলতে আছে শুধু ইন্ডিয়ান আর্মি।
যে সেনা গেছিল মালদ্বীপেরই দুর্দিনে, অসময়ে। সেই দেশের গৃহযুদ্ধ ঠেকাতে প্রায় চার দশক আগে ইন্ডিয়ান আর্মি গেছিল। তারপর থেকে দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে ভারতীয় সেনা মালদ্বীপের ফোর্সকে ট্রেনিং দেওয়ার পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। গত বেশ কয়েক বছর ধরে মালদ্বীপের এক্সক্লুসিভ নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। ভারতীয় সেনার ৭০-৭৫ জন জওয়ান। ২০১০ ও ২০১৩ সালে ভারত মালদ্বীপকে দুটি হেলিকপ্টার উপহার দিয়েছিল। এরপর ২০২০ সালে তাদের একটি ছোট এয়ারক্র্যাফট-ও দেওয়া হয়।
বলা হয়েছিল, মালদ্বীপে উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান চালাতে এবং আপদকালীন মেডিকেল ইভ্যাকুয়েশনে এগুলো ব্যবহার করা হবে। তাহলে কি অসময়ের উপকার ভুলে গেল মালদ্বীপ? মুইজ্জুর এই ডিসিশন কিন্তু ভারত মালদ্বীপ দীর্ঘ সম্পর্কে কালো ছায়া ফেলবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এদিকে বহু বছর ধরেই ভারত চীন সমান তালে কূটনীতির জাল বিচার ছিল মালেতে। শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং ভারত মহাসাগরের একেবারে কেন্দ্রে থাকা মালদ্বীপ ভূরাজনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে দিয়ে যে জাহাজ চলাচলের রুট বা শিপিং লাইনগুলো আছে তার মাঝামাঝি খুব স্ট্র্যাটেজিক অবস্থানে থাকা মালদ্বীপে ভারতের প্রভাব বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর নয়া দিল্লি। নয়া দিল্লির দিক থেকে ভারত মহাসাগরের কিন্তু বিরাট গুরুত্ব রয়েছে সেক্ষেত্রে মালদ্বীপের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আশা ছিল ভারতের। জেতার পরে চীনপন্থী মৈত্রকে অভিনন্দন ও জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপরেও মুইজ্জু খেলছেন নিজের মতো করে। তাই মুইজ্জুর মালদ্বীপ থেকে ইন্ডিয়ান আর্মি সরানোর ডিসিশনে ভারত কি রিঅ্যাকশন দেবে, আর কি একশন নেবে সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন।
বরাবরই চিনপন্থী হিসাবে পরিচিত মুইজ্জু। তিনি মসনদে বসলে ভারতকে নিশানা করতে পারেন এই আশঙ্কা ছিলই আগে থেকে। তাহলে কী ভারতের সেনা সরিয়ে চিনের প্রতি সমর্থন জানাবেন মুইজ্জু? এই প্রশ্ন উঠছে দেশের অন্দরেই। প্রেসিডেন্টের সাফ উত্তর, “শুধু ইন্ডিয়ান আর্মি নয়। চিন বা অন্য কোনও দেশের সেনাকেই মালদ্বীপে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না। তাই কদিন আগেই সেখানে মোতায়েন চীনের পিএলএ আর্মিকেও সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন মুইজ্জু। তার দাবি তিনি চান না তাদের দেশে অন্য কোনও দেশের আর্মিই থাকুক। তবে ভারতের সেনা সরানো নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা জানায়নি মালদ্বীপ। যদিও কূটনৈতিক মহলের একাংশের দাবি চীনকে নিয়ে বর্তমানে মইজ্জু যা বলছেন সেটা লোক দেখানোও হতে পারে। কারণ তিনি চীনপন্থী নেতা হিসেবেই পরিচিত। যদিও মইজ্জুর দাবি তিনি আসলে মালদ্বীপপন্থী। তাই তারা ভারত, চীন এবং অন্যান্য সমস্ত দেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চাইছেন এটা হতে পারে, আবার এটাও হতে পারে মইজ্জু চাইছেন না ভারত-চীন দ্বন্দ্বে মালদ্বীপের মতো ছোট্ট দেশ জড়িয়ে যাক। তবে এখন থেকেই কিছু নির্দিষ্ট করে প্রেডিক্ট করা যাচ্ছে না। সময় বলবে মুইজ্জু চীন সম্পর্কে যে কথা বলছেন সেটা আদৌ কাজে করে দেখাচ্ছেন কিনা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম