ভারতের সিদ্ধান্তে জ্বলছে বিশ্বের চালের বাজার! কি হাল বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের? চাল পাবে তো?

।। প্রথম কলকাতা ।।

ভারতের একটা সিদ্ধান্তে জ্বলছে বিশ্বের চালের বাজার। মাথায় হাত আমেরিকা সহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যের। আর পাবে না সস্তার বাসমতি। জারি কড়া নির্দেশিকা। কি হাল বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের? চাল পাবে তো? কতটা বিপদে? কারসাজি করলেই কিন্তু মুশকিল।

সেদ্ধ চালের পর সাময়িক ভাবে কোপ পড়ল বাসমতি চালেও। টন প্রতি ১২০০ ডলারের নিচে বাসমতি চাল আর বিদেশ যাবে না। থাকবে দেশের মধ্যেই। তবে এর বেশি দামের চাল রপ্তানিতে কোনো বাধা নেই। চালের দাম পৌঁছাতে পারে রেকর্ড উচ্চতায়। হিসেব বলছে, ২০২২ সালে শুধু মাত্র ভারত রপ্তানি করেছিল ৭.৪ মিলিয়ন টন সেদ্ধ চাল। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রপ্তানি করেছে প্রায় ৪৭৯ কোটি ডলারের বাসমতি চাল। আন্তর্জাতিক বাজারে যে পরিমাণ চালের যোগান হয়, তার ৪০% দেয় ভারত। তার ওপর ভারত রপ্তানিতে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় চাহিদা বেড়েছে অনেকটা। চালের মূল্য সূচক গত ১২ বছরে পৌঁছেছে সর্বোচ্চ উচ্চতায়।

চালের উপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার ফল ভুগবে গোটা বিশ্ব। সাধারণত আফ্রিকা এবং এশিয়ার দরিদ্র ভোক্তারা ভারত থেকে নেয় অবাসমতি চাল। সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী চালের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশের বেশি। আসলে অবাসমতি চালের উপর রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার পর গোটা বিশ্ব বাজারে ভারতের বাসমতি চালের আমদানি বাড়ছিল। বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে নতুন উদ্বেগ। ভারতের চাল রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ সহ বহু রাষ্ট্র। গত বছরই ভারত ১৪০টি দেশে চাল রপ্তানি করেছিল ৪২ মিলিয়ন টন। আফ্রিকার বহু দেশ আমদানির ৮০ শতাংশ এবং ৪২ টা দেশ মোট আমদানির অর্ধেক চাল পায় ভারত থেকে। ভারতের অধিকাংশ বাসমতি চাল যায় যুক্তরাষ্ট্র আর মধ্যপ্রাচ্যে। সেই তালিকায় রয়েছে ইরান, ইরাক, ইয়েমেন, সৌদি আরব, আরব আমিরাত সহ বহু দেশ। এই দেশগুলোতে ভারত রপ্তানি করেছিল প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন বাসমতি চাল। বুঝতেই পারছেন, ভারতের একটা সিদ্ধান্তে কত বড় ধাক্কা খেল আন্তর্জাতিক চালের বাজার। মূলত দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম এবং সরবরাহ ঠিক রাখতে এমন সিদ্ধান্ত।

এর প্রভাব কি পড়বে বাংলাদেশে? বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর দাবি, এখনো পর্যন্ত দেশটাতে চালের মজুদ পর্যাপ্ত। যদি না কোন কারসাজি হয় তাহলে দাম বাড়বে না। এবছর বোরো ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কৃষকদের ঘরে যথেষ্ট পরিমাণে উঠবে আমন ধান। আপাতত আমদানি প্রয়োজন হবে না। কিন্তু কৃত্রিম সংকট যদি তৈরি হয় তাহলে অস্থির হয়ে উঠবে বাজার। তখন ভরসা করতে হবে আমদানির উপর। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে প্রতি বছর চালের উৎপাদন খুব ভালো। তারপরেও চাল আমদানি করতে হয়। যার অধিকাংশটাই যায় ভারত থেকে। ২০২২-২৩ অর্থবছর দেশটা চাল আমদানি করেছে প্রায় ১০ লক্ষ ৫৬ হাজার টন। যদিও এখনো বাংলাদেশে চালের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল। তবে আর যাই হোক বন্ধু রাষ্ট্র বলে কথা। বিপদের সময় চাল তো অবশ্যই পাবে। ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে ৭টি পণ্যের কোটা নিয়ে আলোচনা চলছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version