ভারত সেরা বাংলার এই গ্রাম! যেখানে হিন্দু-মুসলিমরা একসাথে মায়ের পুজোর আয়োজন করেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

পর্যটনে ভারতসেরা হল বাংলার এই গ্রাম। যেখানে মায়ের মন্দিরের জন্য জমি দান করেছিলেন মুসলিম গ্রামবাসীরা।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির এই গ্রামের মানুষ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। জাতি-ধর্মের বিভেদ নয় ঈশ্বরের কাছে সকলে সমান। রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাগীরথীর তীরে এই গ্রামে গেলে আপনার চোখ জুড়োবে। পর্যটনে ভারত সেরা গ্রামের স্বীকৃতি পেল মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক থেকে মুর্শিদাবাদের এই গ্রামকে পর্যটনে সেরার সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। একান্ন সতীপীঠের অন্যতম মায়ের মন্দির রয়েছে এই গ্রামেই।

সতীর কিরীট বা মুকুট পড়েছিল এখানেই। ইতিহাস বলছে মিরজাফর শেষ বয়সে কুষ্ঠ আক্রান্ত হন প্রবল অনুশোচনায় তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল তাঁর বিশ্বাস জন্মায় দেবীর চরণামৃত পান করলে তিনি রোগমুক্ত হবেন। চরণামৃত যখন তাঁর কাছে পৌঁছয় তখন বাংলার নবাব শেষ নিশ্বাস নিচ্ছেন। সেই চরণামৃত মুখে নিয়েই নাকি প্রয়াত হন। সতীপীঠ হলেও এখানে ধর্ম -জাতি কোনওদিনও ভেদাভেদ হয়ে দাঁড়ায়নি। মা এখানে সবার।মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে কমিটি রয়েছে সেখানেও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। হিন্দু ভাইদের সাথে একসাথে মন্দিরের কাজে হাত লাগান। মন্দির সংলগ্ন জমিটি ছিল প্রয়াত আব্দুল হাকিম মণ্ডলের নামে তাঁর ইচ্ছা অনুসারে ছেলেরা মন্দির সংলগ্ন জমিটি দান করেছিলেন। দান করা সেই জমির একাংশেও গড়ে উঠেছে মন্দির। ভাগীরথীর কত জল বয়ে গিয়েছে এই গ্রামের সম্প্রীতির এখনও অটুট।

রাজ্যের তো বটেই, ভিন রাজ্যের থেকেও অনেক পূন্যার্থী এই গ্রামে আসেন দেবীমূর্তি দর্শন করতে। ইতিহাস বলছে, ১৪০৫ সালে দেবীর প্রাচীন মন্দিরটি ভেঙে পড়ে তার পরে ১৯ শতকে লালগোলার রাজা দর্পনারায়ণ রায় নতুন মন্দির নির্মাণ করান। এই বছর সেরা পর্যটন গ্রামের ক্য়াটেগরিতে। ৩১ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৭৯৫টি গ্রাম সেরার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। তার মধ্যে থেকে মুর্শিদাবাদের এই সতী পীঠকে বেছে নেওয়া হয়েছে সেরা পর্যটক গ্রাম হিসেবে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে কেন্দ্রের তরফে সেরা পর্যটন গ্রামের পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। দুর্গাপুজো, কালীপুজো ছাড়াও এখানে দেবীর বিশেষ পুজো হয় মাঘ মাসের রটন্তী অমাবস্যায়। পৌষ মাসের প্রতি মঙ্গলবার এখানে একটি বিশেষ মেলা বসে। সাম্প্রদায়িকতার মেলবন্ধনে উত্সবের আমেজ তৈরি হয়। এসবের জন্যই পর্যটনে আরও এক পালক যুক্ত হল বাংলার মুকুটে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version