India-Bangladesh Rail: মাত্র ১০ ঘণ্টায় ভারত থেকে পৌঁছাবেন বাংলাদেশ! নতুন রেলপথে মজবুত বন্ধুত্ব

।। প্রথম কলকাতা ।।

India-Bangladesh Rail: মাত্র ১০ ঘণ্টায় ভারত থেকে পৌঁছে যাবেন বাংলাদেশ। কলকাতা আগরতলা হয়ে বাংলাদেশ পৌঁছাবে ট্রেন। সেপ্টেম্বর দুই দেশ পাবেন নতুন রেলপথ! উপকার মিলবে প্রচুর। মসৃণ হবে যোগাযোগ। ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্বের আর এক প্রতীক হতে চলেছে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ। ভারত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক উন্নয়নের মোড় ঘুরতে চলেছে। এই রেল পথ নিয়ে বেশ আগ্রহী হাসিনা সরকার। চাইছেন যত দ্রুত কাজ শেষ হবে ততই ভালো।

রেল পথের মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক ও উপআঞ্চলিক কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে নতুন করিডোর তৈরি হবে। আরো মজবুত হবে বাংলাদেশ এবং ত্রিপুরা তথা উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। কমে যাবে ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং কলকাতার মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব। বর্তমানে বাংলাদেশের কোন নাগরিক যদি ত্রিপুরা হয়ে কলকাতায় আসেন সময় লাগে ৩১ ঘণ্টা। অথচ এই নতুন রেলপথ তৈরি হলে সময় লাগবে মাত্র ১০ ঘন্টা। প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ৫৫০ কিলোমিটারে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় অংশে নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মূলত ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ট্রেন প্রবেশ করবে এই রেল স্টেশনের মাধ্যমে। যেখানে রয়েছে সর্বাধুনিক নানান সুবিধা। শুধু তাই নয়, এই নিশ্চিন্তপুর স্টেশনের পাশে পণ্য ওঠা নামার জন্য একটি রেল ইয়ার্ড তৈরি করা হবে। প্রচুর লাভ হবে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রেনে আসা কন্টেইনার গুলো খুব সহজেই এই স্থানের নামানো যাবে। তারপর সড়ক পথ ধরে কিংবা ভারতীয় ট্রেনে পণ্য পৌঁছে যাবে উত্তর পূর্বের নানান রাজ্যে। আশা করা হচ্ছে, এই নিশ্চিন্তপুর হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন। যেখানে থাকবে ইমিগ্রেশন কাউন্টার। এই প্রকল্প উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষদের একটি দুর্দান্ত কানেক্টিভিটি দেওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দ্বার খুলে যাবে। খুব সহজেই উত্তর-পূর্ব ভারতের স্থানীয় পণ্য এই রেলপথের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে প্রবেশ করবে। দুই দেশের মধ্যে এই রেলওয়ে প্রকল্প তৈরিতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৯৭২ কোটি টাকা।

আসলে ত্রিপুরার এই সীমান্ত দিয়ে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বাণিজ্য বৃদ্ধি করার বড় সুযোগ পাবে। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতের পণ্য রপ্তানি করা হয়। বাংলাদেশের কসবা কক্সবাজার এলাকায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হচ্ছে। এই বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি আরও সহজ হবে। কক্সবাজারের সমুদ্র বন্দর থেকে ত্রিপুরার সাব্রুমের দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকার একাধিক স্থলবন্দরের পরিকল্পনা করলেও নানান বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই বাংলাদেশ চাইছে যাতে দ্রুত রেলপথের কাজ শেষ হোক। এর ফলে দুই দেশই বাণিজ্যিক দিক থেকে লক্ষী লাভ করবে। বাংলাদেশে শুধু আখাউড়ার রেল যোগাযোগ নয়, ত্রিপুরার সঙ্গে স্থল ও বিমান পথে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে আগ্রহী শেখ হাসিনার সরকার। চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন কলকাতায়। ইতিমধ্যেই গুয়াহাটিতে এআইআইএমএস (AIIMS) চালু করার পরিকল্পনা চলছে। যেখানে উত্তর পূর্ব ভারতের বাসিন্দারা উন্নত মানের চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। ভারত চাইছে বাংলাদেশও এই সুযোগ পাক। নতুন ট্রেন চলাচল পথ শুরু হলে খুব সহজেই বাংলাদেশের মানুষ গুয়াহাটিতে আসতে পারবেন। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেল পরিষেবা, কৃষি এবং কর্মসংস্থান সহ নানান ক্ষেত্রে প্রচুর উন্নয়ন ঘটবে।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এই রেলপথ নিয়ে বহুবার বৈঠক হয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা সঙ্গে বাংলাদেশের তিনটি রেল যোগাযোগ স্থাপনের কথা বিবেচনা করে ভারতী সরকার, সময়টা তখন ২০১৭ সাল। আগরতলা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার রেলপথের জন্য সীমান্তের উভয় পারে জমি অধিগ্রহণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু করোনা আসতেই সবকিছু ওলটপালট যায়। থমকে যায় কাজ। আগরতলা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেললাইন করার জন্য দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয় ২০১৩ সালে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে, কিন্তু হয়নি। এছাড়াও জমি অধিগ্রহণে নানান সমস্যা দেখা দেয়। তবে এখন কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। ভারতের দিকে রেল লাইনের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৮৫ শতাংশ। বাংলাদেশের দিকে কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে প্রায় ৭৩ শতাংশ। ত্রিপুরার মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আশ্বাস দিয়েছেন, আগরতলা থেকে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারে এই রেললাইন হয়ত চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ হবে। সম্প্রতি দিল্লিতে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা করেছেন, সেখানেও আগরতলা থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ নিয়ে কথা হয়েছে। এছাড়াও তিনি বেলোনিয়া থেকে ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত এবং অসমের লামডিং থেকে ত্রিপুরার সাব্রুম পর্যন্ত রেল লাইন ডবল করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version