জলের তলায় ভারত-রাশিয়ার খাজানা! মেরিটাইম করিডরে টাকার বৃষ্টি, ভ্লাদিভোস্টকের ফাঁদে চীন

।। প্রথম কলকাতা ।।

জলের তলায় ভারত-রাশিয়ার বিপুল খাজানা। একটা করিডরেই বদলাবে দুদেশের ভাগ্য, বসে বসে হাত কামড়াচ্ছে চীন। ইস্টার্ন মেরিটাইম করিডরে কী আছে জানেন? কিভাবে টাকার বৃষ্টিতে ভাসবে নয়াদিল্লি – মস্কো? চীনের বিষনজর, ভ্লাদিভোস্টকেই রহস্যের বীজ। পুতিনকে বাঁচাতে কোন স্ট্র্যাটেজি ভারতের হাতে? তেলের উপর ডিসকাউন্ট এখন অতীত। আপাতত করিডরেই জুড়ছে ভারত রাশিয়ার ভাগ্য। দুদেশের ভবিষ্যৎ। একেই বলে গোল্ডেন টাইম। বন্ধু চীনকে ফাঁকি দিয়ে কী করে বসলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন? ভারতের দাম কত জানেন?

তাহলে খোলসা করে বলি ভারত রাশিয়ার মধ্যে তৈরি হচ্ছে নতুন বিজনেস করিডর। নতুন রুট একেবারে তৈরি। মনে করিয়ে দিই, চলতি বছরের অক্টোবরে প্রথমবারের জন্য ভারতের চেন্নাই এবং রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক বন্দরের মধ্যে জাহাজের ট্রায়াল হয়েছিল। যা পুরোপুরি সফল হয়েছে। এই সমুদ্র পথটা সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় ব্যবহার করা হলেও পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায়। যে রুটে ট্রায়াল চলাকালীন চেন্নাই থেকে ভ্লাদিভোস্টক বন্দরে পৌঁছতে সময় লেগেছে মাত্র ১৭ দিন।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ইস্টার্ন মেরিটাইম করিডোর ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনবে, আনবে জোয়ার। এই জাহাজের ভরসায় অপরিশোধিত তেল, কয়লা, এলএনজি এবং সার ব্যবসা বাড়বে। বিরাটের চান্স আছে ।কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়ে দিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি ইস্টার্ন মেরিটাইম করিডর দিয়ে ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। কমে যাবে দূরত্ব?

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে অনুমান ছিল যে চেন্নাই বন্দর এবং ভ্লাদিভোস্টকের মধ্যে জাহাজ চলাচল করতে ১৬ দিন সময় লাগবে। বাস্তবে সেই সময় লেগেছে ১৭ দিন। আর এখন রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলে যেতে ভারতের ৪০ দিন সময় লাগে। সেক্ষেত্রে এই করিডর দিয়ে চলাচল শুরু করলে অর্ধেকেরও কম সময়ে পণ্য আদান প্রদান করা সম্ভব হবে। রুশ কর্মকর্তারা চাইছেন, ভারত তাদের সুদূর পূর্বাঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়াক। কেন? হিসেবটা বুঝতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, ওই সমস্ত এলাকায় চীনের তৎপরতা উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্লাদিভোস্টক সংলগ্ন এলাকায় চীনা বংশদ্ভূত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে, কি ভ্লাদিভোস্টককেই নিশানা চীনের? বন্ধুত্বের নামে মোক্ষম চাল দিলেন শি জিং পিং? চালবাজ চীনের ছকে নাজেহাল রাশিয়াও?নেপথ্যে বেইজিং এর কোন উচ্চাকাঙ্খা? দেখুন, চীনের যা স্বভাব তাই তো করবে। যেমন ভারতের ক্ষেত্রে অরুণাচল প্রদেশের কিছু এলাকা ঘিরে ভারত ও চীনের মধ্যে রয়েছে বহুদিনের পুরনো দ্বন্দ্ব। ঠিক তেমনই রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক।

এই ভ্লাদিভোস্টকের দিকে চীনের নজর বহুদিন ধরেই। আর তাই, ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে চীনের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্ব গভীর হলেও,তাতে বিপদ দেখছেন পুতিন। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ভ্লাদিভোস্টক নিয়ে চিন্তা বাড়ছে মস্কোর। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে, ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভারতের শরণাপন্ন রাশিয়া। ওই অঞ্চলে নিজেদের দখল বাড়ানোর চেষ্টা চীনের। তাই রাশিয়া চাইছে ভারত সেখানেই নিজেদের অস্তিত্ব বাড়িয়ে তুলুক। আসলে ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক যে ভালো নেই তা জানে গোটা বিশ্ব। আর সেই ইস্যুকেই কাজে লাগাচ্ছে রাশিয়া। চীনের নজর সরাতে ব্যবহার করছে ভারতকে। না, ফেরায়নি ভারত। ভ্লাদিভোস্টকে ভারত একটা স্যাটেলাইট শহর তৈরি করার প্ল্যানিং করছে। স্যাটেলাইট টাউন হলো ছোট বা মাঝারি আকারের শহর, যা একটি বড় শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরত্বে থাকে। স্যাটেলাইট টাউন তৈরির নজির পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশেই রয়েছে। এবার রাশিয়ায় এই উপশহর তৈরির পরিকল্পনায় মোদী। তাতে সুবিধা কি হবে?

দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে যাতায়াতেও সুবিধা হবে কিন্তু চীন পরম বন্ধু রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টককে নিজেদের বলে দাবি করে কেন? আজ নয় কয়েক বছর আগে থেকেই রাশিয়ার এই শহরকে নিজেদের বলে দাবি করে চীন। সেই সময় বিষয়টাকে বিশেষ আমল দেয় নি মস্কো। কিন্তু পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে এই মুহূর্তে মস্কোর জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ভারত ও রাশিয়া নয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাপান, ফিলিপাইন মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর কম্বোডিয়া থাইল্যান্ড ইন্দোনেশিয়া ভিয়েতনাম নেপাল ও তাইওয়ান সহ কুড়িটি দেশের বিভিন্ন অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে, সে সব দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে চীন। তাই চীনের কাছে নিখাদ বন্ধুত্বের আশা করা শুধুই বোকামি। ফলে, রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টকের প্রতি চীনের নজর অস্বাভাবিক নয়। বরং এটাই এক্সপেক্টেড।

 

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version