Bangladesh: হাসিনার দেশে ভারতই শেষ ভরসা! কূট-পেঁয়াজ-নীতি

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh: হাসিনার দেশে ভারতই শেষ ভরসা। পদ্মার ওপারে পেঁয়াজের বাজারে যখন আগুন জ্বলছে, তখন জল ঢালতে ভারতকেই পাশে পেল শেখ হাসিনার দেশ। রাতারাতি পাল্টে গেল ছবিটা। ভারত থেকে আমদানি শুরু হতেই বাংলাদেশে হুড়মুড়িয়ে দাম কমলো পেঁয়াজের। খুশি কি বাংলাদেশের ক্রেতারা? অসময়ে বন্ধুই বন্ধুর পাশে থাকে প্রমাণ করলো ভারত। মাত্র আড়াই মাস, ভারত থেকে পেঁয়াজ যায়নি বাংলাদেশে। আর তাতেইসা ধারণের নাগালের বাইরে চলে গেছিল হেঁশেলের ‘মাস্ট হ্যাভ’ জিনিসটার দাম। অনেক চেষ্টা করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ফের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আর তাতেই সব ঠাণ্ডা। ১০০র ঘরে গিয়ে দাঁড়ানো পেঁয়াজের মূল্য এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বাজারে ৬২, ৬৫ কিংবা ৬৮। মানে এই আড়াই মাসে কতটা মুনাফা লুটেছে অসাধু গোষ্ঠীরা, আন্দাজ করতে পারছেন তো? না, কল্পনারও অতীত।

শুরু হয়েছিল মার্চে। সরকার ইমপোর্ট পারমিট না দেওয়ায় গত মার্চে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়েছিল বাংলাদেশে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি। আর এতেই বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছিল অস্বাভাবিক হারে। গত সোমবার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রক। ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকছে বাংলাদেশে। বিভিন্ন জাতের দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। দামগুলো শুনলে চমকে যাবেন। থেকে পেঁয়াজ আমদানি এর আগে কি দাম ছিল আর বর্তমানে কি দামে বিক্রি হচ্ছে পার্থক্যটা একবার শুনুন এবং বুঝুন।

বর্তমানে পাবনার পেঁয়াজ প্রতি পাল্লা মানে ৫ কেজি বিক্রি করা হচ্ছে ৩৭৫ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে, কেজিতে ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা ফরিদপুরের পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি করা হচ্ছে ৩১০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকায়, কেজিতে যা পড়ছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকা। রাজশাহীর পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি করা হচ্ছে ৩৭৫ টাকায়, যা কেজিতে পড়ছে ৭৫ টাকা। আর, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩২৫ টাকায়, যা কেজিতে পড়েছে ৬৫ টাকা। অথচ ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরুর আগে এই বাজারেই প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকারও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। মোদ্দা কথা, অসাধু ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে যা হাতিয়ে নেওয়ার তা নিয়েছে। তাই এখন দাম কমলেও ক্রেতাদের দুঃখ ঘুঁচছে না। আড়াই মাস ধরে যেভাবে পকেট কাটা গেছে মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর, সেই দায় নেবে কে? প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশে।

সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের একাংশের সাফ কথা মে মাসের মাঝামাঝি সময়েই যদি এই আমদানির সিদ্ধান্ত নিতো বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় তাহলে হয়তো এভাবে ক্রেতাদের ভুগতে হত না। সেই পেঁয়াজ ভারত থেকেই আমদানি হল, কিন্তু হল অনেক পরে। এতে কি হলো, সমস্যা বাড়লো সাধারণ মানুষের। যদিও নয়া দিল্লি প্রমাণ করে দিয়েছে ভারতই, বাংলাদেশের অসময়ের বন্ধু।
তাই চরম বিপদের দিনেও ত্রাতার ভূমিকা গ্রহণ করেছে ভারত। কিন্তু, আপাতত সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ক্রেতারা। বলছেন, যেভাবে দাম বেড়েছিল, সেভাবে দাম কমেনি। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে পেঁয়াজের দাম এখনও নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরেই রয়েছে । তবে, যেভাবে পেঁয়াজের দাম রেঞ্জ এর মধ্যে আসতে শুরু করেছে তাতে আমজনতার অসন্তোষ বেশিদিন টিকবে না। এটা হলফ করে বলা যায়। কিন্তু, ভারতকে যে বাংলাদেশি পাঠক-দর্শকরা উঠতে বসতে গাল দেন, তারা এবার কী বলবেন? নিশ্চয় এটা বলবেন যে ব্যবসার স্বার্থেই তো ভারত পেঁয়াজ রপ্তানী করলো বাংলাদেশে?

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version