।। প্রথম কলকাতা ।।
ভারত ভার্সেস কানাডা, “কোল্ড ওয়ার” শুরু? বাড়ছে টেনশন। মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ট্রুডোর দেশ, দুদেশের বাণিজ্যে এফেক্ট পড়বে না তো? পুরোটার পেছনে ট্রুডোর কোন পলিটিক্যাল মোটিভ কাজ করছে? ঘটনার জল কতদূর গড়াতে পারে? এর পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে? কী বলছেন বিশ্লেষকরা? ভারত কানাডার সম্পর্কে বেশ বড় ধরনের চির ধরেছে। ভারতীয়দের কানাডা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে। শুধু কিনা একজন বড় বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ডের জন্য এতটা রিস্ক নিলেন ট্রুডো?
দুদেশের সম্পর্কে চরম তিক্ততা। না, এই বিরোধ কিন্তু এতো সহজে মেটার নয়! মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পলিটিক্স। তার থেকেও বড় কথা দুদেশের মধ্যে যে সিচুয়েশন তৈরি হয়েছে, সেই এফেক্ট ভারত-কানাডা বাণিজ্যের ওপর পড়ার চান্স বাড়ছে। বাণিজ্য মহলের একাংশের আশঙ্কা, এর ফলে অবাধ বাণিজ্য চুক্তির পথ আটকে না যায় কিন্তু ভারত সরকার যাকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করলো, যার বিরুদ্ধে তদন্তকারী দলের খাতায় ৪-৪টে মামলা, যে কিনা একের পর বিস্ফোরনের ঘটনায় জড়িত, সেই ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় থাকা খালিস্তানী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের জন্য কেন বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা বন্ধ করে দিল কানাডা? নিজ্জর কি ট্রুডো ঘনিষ্ঠ ছিল? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও ইক্যুয়েশন?
মনে করিয়ে দিই ভারত-কানাডা বিভিন্ন পণ্যের জন্য পরস্পরের উপর নির্ভরশীল কিন্তু তাতে কী? বিশ্লেষকদের একাংশের মতে ভারতকে কড়া নীতি নিয়ে চলতে হবে। তাতে যদি দুদেশের বাণিজ্যিক-সম্পর্ক খারাপ হয় তো হবে। বুঝতে হবে, কানাডা যা করেছে, তাতে ভালো সম্পর্ক রাখা যায় না। এটা ফ্যাক্ট। যদিও, অনেকেই মনে করছেন প্রাথমিক ভাবে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হলেও ভারত-কানাডা বাণিজ্যিক সম্পর্ক টিকে যাবে। ভবিষ্যতে মুক্ত বাণিজ্যও শুরু হবে। কেউ কেউ চীনের প্রসঙ্গ টেনে বলছেন, সাম্প্রতিক অতীতে ভারত-চীন একাধিক বার সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছেকিন্তু বেজিং এখনও দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সহযোগী। তাছাড়া, সব দেশই এখন ভারতের বাজার ধরতে চাইছে। ইন্ডিয়ান ইকোনমির গ্রাফ উর্ধমুখী, এটা জানে গোটা বিশ্ব।তারপরও ট্রুডো ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা ফ্রি ট্রেড ডিল নিয়ে আলোচনা স্থগিত রেখেছেন। কত বড় ভুল করছেন? অনুমান করতে পারছেন? এই সংঘাতের প্রভাব বাণিজ্যে পড়লে কতটা লস হবে কানাডার? শুধুই কি তাই?
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে এই যে কূটনৈতিক লড়াই, তার পেছনে বড় রাজনীতির খেলা রয়েছে। যদিও, ট্রুডোর মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিপক্কতাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখুন, ট্রুডোর সামনে কঠিন লড়াই। সমীক্ষা বলছে, ট্রুডো প্রধান বিরোধী রক্ষণশীল দলের থেকে অনেক পিছিয়ে। তাদের জনপ্রিয়তা ৪০ এর ঘরে, ট্রুডোর ২০ এর ঘরে। এদিকে ২০২৫ সালে নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে ট্রুডোকে। আর সেখানে শিখদের প্রতি ট্রুডোর দুর্বলতার কারণ তারা তার ভোটব্যাংকের বড় একটা অংশ। সেই কারণেই কী খালিস্তানি মুভমেন্ট সমর্থন করছেন ট্রুডো? এমন কোনো স্টেপ নিতে চাইছেন না; যাতে তার মূল ভোটে কোনো এফেক্ট পড়ে। বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশ্ন। তাতেই কী ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্কের ফাটল আরও বেশি চওড়া হচ্ছে? এটা নতুন কিছু নয়, অনেকেই বলছেন
ট্রুডো আগেও এরকম কাজ করেছেন ভারতের আগে তালিকায় রয়েছে চীন-জার্মানিও। কিন্তু ভারতের সঙ্গে ট্রুডো যা করলেন, করে চলেছেন তার পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে?
ছেড়ে কথা বলবে না ভারত। ট্রুডো হয়ত ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। কিন্তু তিনি খুব গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তাই, খুব তাড়াতাড়ি পজিটিভ কিছু হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে, কানাডা ম্যাচিওরড ডিসিশন নিলে সেটাই হবে দুদেশের সম্পর্ক রক্ষার একমাত্র উপায় নাহলে, কানাডা কড়া সিদ্ধান্ত নিলে ভারতকে কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে। তাতে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হলে হবে। বাণিজ্য খারাপ হলেও কিছু করার নেই সাফ কথা বিশেষজ্ঞদের। তবে, অনেকেই ভারত-কানাডার এই সমীকরণকে স্নায়ুযুদ্ধের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। পরিস্থিতি সেরকম হলে, কানাডা যে কতটা রিস্কে পড়ে যাবে, সেটা বলবে সময়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম