Iran-Israel Conflict Effect: ইরান ইসরায়েলের যুদ্ধে ফেঁসে গেল ভারত-বাংলাদেশ, প্রচুর ক্ষতি

।। প্রথম কলকাতা ।।

Iran-Israel Conflict Effect: মারাত্মক যুদ্ধ বাঁধবে ইরান আর ইসরায়েলের মধ্যে। তক্কে তক্কে আছে দুই দেশ। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আর দেরি নেই! বিশাল এফেক্ট পড়তে চলেছে ভারত আর বাংলাদেশে। ইরান ইসরায়েলের যুদ্ধে বড় লস। যা ক্ষতি হতে চলেছে ভাবতেও পারবেন না। আবারো বাংলাদেশের উপর আসতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ। মধ্যপ্রাচ্যে থাকা বাংলাদেশিরা সাবধান।

সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলটে চলে প্রাণঘাতী হামলা। ইসরায়েলের ধারণা, লেবানন আর সিরিয়ায় নিজেকে আড়াল করে অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান। তাই রাগও কম ছিল না। অবশেষে দুই পক্ষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হল এই যুদ্ধের ইঙ্গিত। ইরান জানে, তার পায়ের তলার মাটি ঠিক কতটা শক্তিশালী। তাই তো ইসরায়েলের মতো দেশে প্রায় ৪০ টার মতো মিসাইল আর দুটো বিস্ফোরক ড্রোন ছোঁড়ার সাহস পেয়েছে। অর্থাৎ ইরান বুঝিয়ে দিল, তারা প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত। ইসরায়েলকে ছেড়ে কথা বলবেন না। আর এভাবেই সত্যি হল যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা। যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু বলেই দিয়েছিল, ইসরায়েলের উপরে ইরান হামলা করতে চাইছে। আর তখনই হুঁশিয়ারি দিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সুরক্ষা দেবে। ইসরায়েলকে সমর্থন করবে। ইরানকে কখনোই সফল হতে দেবে না। কিন্তু দেখুন, ইরান কম শক্তিশালী দেশ নয়। মধ্যপ্রাচ্যের যতগুলি শক্তিশালী দেশ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ইরান। দেশটার ভাঁড়ার সজ্জিত অত্যাধুনিক অস্ত্রে। যদি ইসরায়েল আর ইরানের যুদ্ধ হয়, তাহলে সেটা হবে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। আঁচ পড়বে গোটা মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। একটার সঙ্গে একটা জুড়ে রয়েছে। যদি এশীয় দেশের কথা বলি, তাহলে ভারত এবং ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও এই অনাগত যুদ্ধের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

গোটা বিশ্ব জানে, এর ফলাফল কতটা ভয়াবহ হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই বড় বড় পরাশক্তির রাষ্ট্র নেতারা বেশ উদ্বিগ্ন। এই যুদ্ধ বাঁধার বিপক্ষে। তড়িঘড়ি সামলাতে চাইছে পরিস্থিতি। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রীকে ফোন করে পরিস্থিতি শান্ত করতে চেষ্টা করেছেন। পশ্চিম এশিয়ায় কূটনীতির মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখার পক্ষে ভারত। এমনি থেকেই ভারত যুদ্ধ নয়, শান্তির পক্ষে। একইভাবে ইরান এবং ইসরায়েলের উত্তেজনার নিরসন চায় বাংলাদেশও।

এবার আসা যাক এই যুদ্ধের এফেক্টের কথায়। যুদ্ধ বাঁধলে ভারতের উপর বড় প্রভাব পড়তে চলেছে। বাদ যাবে না বাংলাদেশও। ইরান এবং ইসরায়েল দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের ভালো সম্পর্ক। গত বছর জি টোয়েন্টি সম্মেলনে ঘোষণা হয়েছিল ভারত মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ আর্থিক করিডোরের কথা। যার লক্ষ্য, এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে একটা সংহতি গড়ে তোলা। যার মধ্যে যুক্ত থাকবে একাধিক স্টক হোল্ডার। বর্তমানে এই উদ্যোগ একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই জায়গাটায় ভারত কিন্তু বড় ধাক্কা খেতে পারে। পাশাপাশি সমস্যার মুখে পড়তে পারে ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যিক বিষয়। প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে পারে ভারত-ইসরায়েল-সংযুক্ত আরব আমিরশাহী আর আমেরিকার সম্পর্ক। তাই এই বিষয়ে ভারত কিন্তু একেবারেই হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।

শুধু ভারতই বা কেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই এফেক্টেড হবে। যদি বাংলাদেশের কথা বলি, বড় সমস্যার মুখে পড়তে পারে। এমনি থেকেই বেশ কয়েক মাস হয়ে গিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত। হামাস আর ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যে অস্থিরতা চলছিল, ও তা আরো বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়বে জ্বালানি তেলের দাম। এমনি থেকেই তো বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট রয়েছে। সেই সংকট মেটাতে হিমশিমও খাচ্ছে। এরপর যদি জ্বালানি তেলের দাম আরো বাড়ে, তাহলে ধাক্কা খেতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতি। কান টানলে মাথা টানার মতো, প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের উপর। তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে বাড়বে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা মানেই কিন্তু সেখানে কর্মসংস্থান কমবে। বাংলাদেশের বহু মানুষ প্রবাসী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশে কাজের সঙ্গে যুক্ত। যদি কর্মী ছাটাই এর ঘটনা ঘটে, রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে বড়সড় আঘাত খাবে বাংলাদেশ। কূটনৈতিক চাপেও পড়তে পারে। কারণ, বহুবার দেখা গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নিজের বন্ধু বলয় বাড়াতে বাংলাদেশকে হাতে রাখতে চাইছে। এটা মূলত একটা ভূ রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি। কোথাও গিয়ে, যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে প্রেসার ক্রিয়েট করবে, যাতে বাংলাদেশ ইরানের বিপক্ষে থাকে, আর ইসরায়েলের পক্ষে যায়। যদিও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। নিজেদের সিদ্ধান্ত নেবে নিজেদের মতো করে। কিন্তু একটা দুমুখো কূটনৈতিক চাপে পড়তে পারে দেশটা।

বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বিষয়টা নিয়ে বেশ আশঙ্কায় রয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, এভাবেই যুদ্ধের সূচনাটা হয়ে গেল। কারণ ইসরায়েল পাল্টা প্রতিশোধ ঠিকই নেবে। এমনটাই বলছে অতীত অভিজ্ঞতা। এখানে আরও একটা বড় ব্যাপার আছে। ইরান ইসরায়েলে আক্রমণ করার পর, পরোক্ষভাবে হুমকি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। বলে দিয়েছে যেন যুক্তরাষ্ট্র এই বিরোধ থেকে দূরে থাকে। কিন্তু এটা কি সম্ভব বলুন? যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর ইসরায়েলের পাশে থাকার জন্য। তার উপরে ইরানের সাথে সম্পর্ক মোটেই ভালো নয়। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের এই কথা জাস্ট তোয়াক্কাই করবে না। উল্টে ইরানের হামলার কঠোর নিন্দা করেছে এবং তলে তলে ইসরায়েলের সাথে পাল্টা হামলার হয়তো প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে।

https://youtu.be/F28-HrAK4LA?si=9rO67KgRc8iFrp1c

কয়েকদিন ধরেই ইরান বারবার বলছিল, তারা ইসরায়েলের উপর প্রতিশোধ নেবে। আর সেটা করেও দেখালো। ইসরায়েল সেই আক্রমণ ঠেকালো আয়রন ডোম দিয়ে। ইরান একদিকে বুঝিয়ে দিল, তারা পাল্টা আক্রমণ করতে জানে। আরেক দিকে, গোটা পরিস্থিতি সামলাতে আর গোটা বিশ্বের কাছে ভালো সাজতে যুক্তরাষ্ট্রকে জানাল, কেবল আত্মরক্ষার জন্য ইসরায়েলের উপর হামলা চালিয়েছে। আপাতত দুই দেশ চুপ করে আছে ঠিকই। কিন্তু যে কোনো মুহূর্তে একে অপরের উপর অতর্কিত হামলা চালাতে পারে। তাই থমথমে গোটা পরিবেশ। বাতাসে ছড়িয়েছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক। ইসরায়েল বলেই দিয়েছে, তারা সময় করে ঠিক ইরানের থেকে এই হামলার সঠিক মূল্য বুঝে নেবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এটাও কিন্তু হুঁশিয়ারি। সম্মুখ চ্যালেঞ্জ। এবার অ্যাকসেপ্ট করার অপেক্ষা।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version