এই মন্দিরে মা দুর্গা নিজের হাতে ভোগ রাঁধেন, আরও নানা অলৌকিক কাণ্ড জানলে গায়ে কাঁটা দেবে

।। প্রথম কলকাতা ।।

৫০০ বছরের পুরনো ঝাড়গ্রামের কনক দুর্গা মন্দির। এখানে অষ্টমীর ভোগ নিজেই রাঁধেন মা দুর্গা। অবাক হচ্ছেন? দেবীর এখানে রুদ্র রূপ অষ্টমীতে একবার দর্শনে সব বিপদ দূর হবে। পুজোর চারদিন অদ্ভুত ভোগ মাকে নিবেদন করা হয়। এই মন্দিরে দুর্গাপুজোর চারটি দিন দেবী জাগ্রত হয়ে যা করেন জানলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ডুলুং নদী। সেখানেই গভীর জঙ্গলের মধ্যে এই কনকদুর্গা মন্দির।

অষ্টধাতুর দেবী অশ্বারোহিণী চতুর্ভুজা। মন্দিরের আশপাশে প্রকৃতি তার সব রূপ যেন ঢেলে দিয়েছে। এই কনক দুর্গার মন্দিরেও ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হয়। পুজোর চার দিন বিশেষ রীতি মেনে মাকে তুষ্ট করা হয়ে আসছে। দেবী এখানে এতটাই জাগ্রত যে শোনা যায় পুজোর সময় মা নিজের ভোগ নিয়েই রেঁধে নেন। এখনও রীতি একই রয়ে গেছে ষষ্ঠীতে ডুলুং নদী থেকে ঘট ভরতি জল আসে। সারারাত মন্দিরের বাইরে বেলগাছের নিচে থাকে সেই ঘট। সপ্তমীর সকালে কলসির জল দিয়ে ঘট শুদ্ধ করে হোম আরতির পর গৃহপ্রবেশ করানো হয়। অষ্টমীর রাতে মন্দির সংলগ্ন গভীর জঙ্গলে বিশেষ পুজো হয়। যেখানে থাকেন শুধুমাত্র রাজপরিবারের বর্তমান সদস্যরাই।

না অন্যান্য মন্দিরের সঙ্গে এই দুর্গাপুজোর ভোগের পদ মিলবে না। মহাষ্টমীতে হাঁসের ডিমের ভোগ দেওয়া হয়। নতুন মাটির হাঁড়িতে জল ও অন্য়ান্য সামগ্রী দিয়ে শালপাতায় হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে উনুনে চাপিয়ে দেওয়া হয়। উনুনে তিনটি কাঠে আগুন জ্বেলে ঘরের দরজা বন্ধ করা হয় তালাচাবি দিয়ে। বছরের পর বছর এই নিয়ম মানা হয়ে আসছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস দেবী স্বয়ং এসে ভোগ রান্না করেন। চার দিন দেবীকে হাঁসের ডিম, মাছ পোড়া শাক ভাজা ও পান্তা ভাতের ভোগ নিবেদন করা হয়। ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড়ে সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহের স্বপ্নে দেখা দেন দেবী দুর্গা। দেবীর নির্দেশ মতো রানির হাতের সোনার কাঁকন দিয়ে রাজা নির্মাণ করান এক দেবীমূর্তি। নাম হয় কনক দুর্গা।

দুর্গাপূজার চারটে দিনের মধ্যে দেবীকে দর্শন করতে চান? জেনে নিন কিভাবে যাবেন? ঝাড়গ্রাম থেকে চিল্কিগড়ের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার৷ সেখান থেকেই অনেক ট্রেকার চিল্কিগড় যায়৷ চাইলে অটো বুক করেও ঘোরা যায়৷ দশমীতে হয় রাবণ পুজো। মশাল জ্বালিয়ে রাবণরুপী কলাগাছকে তীর মারার প্রতিযোগিতা হয়। পুরোনো মন্দিরে নয়, এখন পুজো হয় নতুন মন্দিরে৷ তবে এখনও পুরোনো মন্দির রয়েছে পাশেই। দেওয়ালে ফাটল আর গাছের শিকড়কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহ্যের কনকদুর্গা মন্দির।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version