Saktigarh Lyangcha: গর্ভবতী মেয়ের আবদারেই সৃষ্টি ল্যাংচা, এমন নাম কেন? বাবার ভালোবাসা সেরা

।। প্রথম কলকাতা ।

Saktigarh Lyangcha: বাবার কাছে গর্ভবতী মেয়ের আবদার, “বাবা রসে ডুবিয়ে ভাজা মিষ্টি খাব”। মেয়ের আবদার বলে কথা, ব্যাস সেই আবদারেই তৈরি বাঙালির প্রিয় ল্যাংচা। মুখে দিলেই, ” আহা “! কি পরম তৃপ্তি। বাঙালি অথচ শক্তিগড়ের ল্যাংচার নাম শোনেননি, তা আবার হয় নাকি। আচ্ছা এই ল্যাংচার নাম ল্যাংচা হল কেন? অন্য কিছু তো হতে পারত? আর এই ল্যাংচাকে নিয়ে এত মাতামাতি করারই বা কি আছে? আসলে পুরো হিস্ট্রিটা শুনলে আপনার মাথা ঘুরে যাবে। আপনিও এই মিষ্টির প্রেমে পড়তে বাধ্য।

মূলত কালো বা বাদামি রঙের রসে টইটুম্বুর ল্যাংচা। ময়দা, চিনি, ছানা প্রধান উপাদান। আঁতুড়ঘর বাংলার শক্তিগড়। কলকাতা থেকে বর্ধমান যাওয়ার পথেই পড়বে শক্তিগড়। অনেকেই এই যাতায়াতের পথে একটু দাঁড়িয়ে যান, শুধুমাত্র ল্যাংচা খাবেন বলে। শুধু কি শক্তিগড়! এর সঙ্গে বিশেষ ভাবে জড়িয়ে নদীয়ার কৃষ্ণনগরের নাম। আর এখানেই তো রয়েছে আসল টুইস্ট। বাবা মেয়ের গল্প। জড়িয়ে দুই রাজ পরিবারের নাম।

সবথেকে জনপ্রিয় জনশ্রুতি বলছে, বর্ধমানের রাজপুত্রের বিয়ে হয়েছিল কৃষ্ণনগরের রাজকন্যার সাথে। রাজকন্যা অন্তঃসত্ত্বা হলে কৃষ্ণনগরের রাজা মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যান। স্বাভাবিকভাবেই, রাজপরিবারে তখন আনন্দের যেন শেষ নেই। কিন্তু রাজার মেয়ে হারিয়ে ফেলেন মুখের রুচি। কিচ্ছুটি খেতে ভালো লাগতো না। ওদিকে রাজা পড়েন মহা দুশ্চিন্তায়। বড় বড় হাকিম কবিরাজকে ডেকেও কোন লাভ হয়নি। রাজকন্যা তার বাবার কাছে আবদার করেন, শ্বশুরবাড়িতে তাকে এক ময়রা কালো রঙের ভাজা মিষ্টি খাইয়েছিলেন। যেটা ছিল রসে ডোবানো। সেই মিষ্টি খেলেই তার মুখে রুচি ফিরবে। তবে তার নাম জানা ছিল না। রাজা সঙ্গে সঙ্গে দলবল পাঠিয়ে সেই ময়রাকে খুঁজতে পাঠান। রাজা তার মেয়ের আবদারের জন্য জমি জমা দান করলেন বর্ধমানের পুবে চারকোষ দূরে থাকা বড়শুল গ্রামে। কিন্তু ময়রার একটি পায়ে ছিল সমস্যা। ভালো করে হাঁটতে পারতেন না। তিনি সেই অবস্থায়, গ্রাম বাংলার চলতি ভাষায় লেঙচে লেঙচে এসেছিলেন মিষ্টি তৈরি করতে। ব্যস, তারপর থেকেই মিষ্টির নাম হয়ে গেল ল্যাংচা। আবার অনেকে বলেন, ওই ময়রা কৃষ্ণনগর থেকে বর্ধমান এসে নিজের দোকান খোলেন। সেখানেই বিক্রি শুরু করেন ল্যাংচা। যার প্রধান উপকরণ ছিল ছানা ময়দা আর চালেরগুঁড়ি, কখনো বা মেশানো হতো খোয়া ক্ষীর। এই ময়রার ভিয়েন থেকে রোজ এক মন করে মিষ্টি যেত বর্ধমানের রাজবাড়িতে।

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে কিংবা ২ নং জাতীয় সড়ক ধরে যখন শক্তিগড় ঢুকবেন দেখবেন, সব দোকানের নামের সঙ্গে জুড়ে আছে ল্যাংচা শব্দ। কারো নাম ল্যাংচা নিকেতন, কেউ ল্যাংচা স্টেশন, ল্যাংচা হাট, ল্যাংচা প্লাজা, স্পেশাল ল্যাংচা আরো কত কি। দেখুন, মিষ্টি প্রেমী বাঙালির ভাঁড়ারে কিন্তু মিষ্টির সংখ্যা কমতি নেই। তাই মিষ্টি বাঙালিকে বুঝতে গেলে বাংলার মিষ্টিকে না জানলেই নয়। কারণ প্রত্যেকটা মিষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

https://www.facebook.com/100069378195160/posts/701800918809175/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz

Exit mobile version