Saffron Container Farming: জাফরান চাষ হচ্ছে মাটি ছাড়া কন্টেইনারে, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের কৃতিত্বে অবাক দেশ

।। প্রথম কলকাতা ।।

Saffron Container Farming: জাফরান (Saffron) বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে স্বর্গরাজ্য কাশ্মীর (Kashmir)। জাফরান চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু এবং মাটির অত্যন্ত প্রয়োজন। কোনোরকম খুঁত থাকলে জাফরান কখনোই চাষ করা সম্ভব নয়। এবার এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার (Software Engineer) আশ্চর্য টেকনিকে কন্টেইনারে (Container) চাষ করলেন জাফরান। ভারতকে সর্বদা একটি কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেখানে কমবেশি প্রতিটি রাজ্যের মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত, তাও আবার ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে। যদিও বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে নানান কৌশলে চাষ করা হয়ে থাকে। কিন্তু তারপরেও বহু কৃষক তাদের মনোযোগ এবং শক্তি সনাতন পদ্ধতিতে কাজে লাগান। এই গতানুগতিক ধারণার বাইরে গিয়ে পুনের শৈলেশ মোদক (Shailesh Modak) মাটি ছাড়া পাত্রে আবিষ্কার করে ফেললেন জাফরান, যাকে বলা হয় লাল সোনা ।

উচ্চশিক্ষিত শৈলেশ মূলত নাসিকের বাসিন্দা। তিনি পুনেতে পড়াশোনা শেষ করে গত ১৫ বছর ধরে সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। শৈলেশের স্ত্রীও একজন সফল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। এনারা চাইলেই বিদেশেও চাকরি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর খাদি গ্রাম শিল্পে একটি কোর্স করেন। তারপর নতুন পদ্ধতিতে জাফরান চাষ শুরু করেন। অবাক করার বিষয় হল, শুধুমাত্র একটি ঘরে কিছু পাত্রে মাটি ছাড়াই তিনি জাফরান চাষ করেছেন। শৈলেশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও ঐতিহ্যবাহী কৃষি পদ্ধতিকে একেবারেই অস্বীকার করেননি। সাধারণত জাফরান চাষ করতে গেলে পরিবেশ জনিত যে বাধার সম্মুখীন হতে হয়, সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিকল্প হিসেবে কন্টেইনারকে বেছে নিয়েছেন। আপাতত শৈলেশ এই পরীক্ষায় সফল, জাফরান পাওয়া যাচ্ছে ৮×৫ ফুট পাত্রে।

শৈলেশ প্রথমে কাশ্মীরে গিয়ে সেখানকার কৃষকদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। কয়েকদিন কাশ্মীরে থেকে জাফরান চাষের পদ্ধতি ভালো ভাবে বুঝে যেন। গত ছয় বছর ধরে তিনি এই পরীক্ষা করছেন। এ্যারোপনিক পদ্ধতিতে এই সফল পরীক্ষা করা হয়েছে। ৩২০ বর্গফুট পাত্রে অন্যান্য সবজির সাথে জাফরানও রোপণ করেন। গাছের কন্দের বৃদ্ধির জন্য তাপমাত্রা একটি নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে বজায় রাখা হয়। কাশ্মীরের মতো, এই পাত্রে বিভিন্ন কৌশল যেমন এয়ার সার্কুলেটর, চিলার, এসি, ডিহিউমিডিফায়ার, চারকোল ভিত্তিক আর্দ্রতা বৃদ্ধি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। অবস্থার উপর নির্ভর করে কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষণের জন্য লাল, সাদা এবং নীল আলো সরবরাহ করেছেন। বর্তমানে পুনেতে শৈলেশ এই পাত্র প্রস্তুত করেছেন। আকার অনুযায়ী একটি ট্রেতে চারশ থেকে ছয়শ কন্দ লাগানো হয়েছে। বর্তমানে অর্ধেক বাক্সে প্রায় পাঁচশ কেজি কন্দ সহজেই জন্মাতে পারবে।

কন্টেইনার ফার্মিংয়ের সুবিধা

শৈলেশের পাত্র তৈরি থেকে কন্দ আনা পর্যন্ত খরচ হয়েছে আট লাখ টাকা। বর্তমানে জাফরানের দাম প্রতি গ্রাম ৪৯৯ টাকা, সে অনুযায়ী বাজারদর অনুযায়ী প্রতি কেজি ৬ লাখ ২৩ হাজার ৭৫০ টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শৈলেশ মোদক আজকের তরুণ কৃষকদের আধুনিক কৃষি গ্রহণের কথা বলেছেন এবং কৃষির বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে আধুনিক চাষাবাদ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তার কন্টেইনার ফার্মিংয়ের আরও নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version