Great Doctor in Kolkata: ৬৭বছর বয়সেও দুর্গম পথ পেরিয়ে বিনা পয়সায় রোগী দেখেন!গরিবের ভগবান এই ডাক্তার

।। প্রথম কলকাতা ।।

Great Doctor in Kolkata: বিনামূল্যে গরীব মানুষের চিকিৎসা তাঁর নেশা।।সেই নেশার টানে প্রতি সপ্তাহে কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনে যান এক এমবিবিএস। ট্রেনে, ভ্যান রিক্সায়, ট্রেকারে চেপে, নৌকায় দু’-দু’টি নদী পেরিয়ে, তার পর দেড় ঘণ্টা হেঁটে। তার ওপর কাঁধে থাকে ওষুধ বোঝাই তিন তিনটি ব্যাগ। হ্যাঁ, এই ৬৭ বছর বয়সেও এই কাজ করে চলেছেন। ভাবতে পারছেন আপনি! রোগী দেখেন বিনা পয়সায়। ফ্রিতে দেন ওষুধও। তা না দিলে ওষুধ কেনার টাকা এখানের দরিদ্র রোগীরা পাবে কোথায়! আপনি তো জানেন, প্রচারের আলোর অনেক দূরে থেকে সমাজের জন্য নিঃস্বার্থে কাজ করে চলেছেন অনেকেই। ব্যক্তিগত লাভ ক্ষতির হিসেব তাঁরা করেন না কখনোই।

আপনারা তো দেখছেন, অনেক চিকিৎসক শুধুই টাকার পেছনে ছুটে চলেছেন। কয়েক মিনিট রোগী দেখেই ফি নেন হাজার টাকা। লেখেন নিজের পছন্দের কোম্পানির দামি ওষুধ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরে বেরান এই নার্সিংহোম থেকে সেই নার্সিংহোমে। রোগীরা বসে থাকলেও চেম্বারে আসার সময়ের ঠিক ঠিকানা থাকে না অনেক সময়। সেই জায়গায় ব্যতিক্রম গরিব মানুষের ভগবান হয়ে ওঠা এই চিকিৎসকরা। চেনেন এই চিকিৎসককে?

ইনি ডাক্তার অরুণোদয় মন্ডল। বিরাটিতে সবাই তাঁকে দু টাকার ডাক্তার নামেই চেনেন। এখানে মাত্র দু টাকা ফি নিয়ে রোগী দেখেন তিনি। উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার প্রত্যন্ত চাঁড়ালখালি গ্রামে জন্ম অরুণোদয়ের। গ্রামের স্কুল থেকে স্কুল ফাইনাল পাশ করে টাকি সরকারি কলেজে আই এ পড়েন। এরপর ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন। এক বছর কর্মরত ছিলেন শিশুমঙ্গল হাসপাতালে। তার পরে বিরাটিতে চিকিৎসক হিসেবে প্র্যাকটিস শুরু। বিরাটির চেম্বারে এখনও বসেন তিনি। তবে ২০০০ সাল থেকে প্রতি শনি ও রবিবার ৬৭ বছরের অরুণোদয় চলে যান সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে। দু’দিনে প্রায় আড়াইশো রোগী দেখেন বিনা পয়সায়। উপলব্ধি করেছিলেন, শুধু বিনা পয়সায় চিকিৎসা করলেই হবে না। রোগ সারাতে দিতে হবে ওষুধও। সেজন্য প্রথমে কলকাতার চিকিৎসকদের চেম্বারে চেম্বারে ঘুরে জোগাড় করতেন ‘ডক্টরস্‌ স্যাম্পেলস্‌’। ভরে নিতেন তিনটি ব্যাগে। তার পর শিয়ালদহ থেকে ধরতেন ভোর পাঁচটা পাঁচের হাসনাবাদ লোকাল। দু’ঘণ্টার পথ। হাসনাবাদে নেমে ভ্যান রিক্সায় মিনিট কুড়ি। তার পর ডাঁশা নদী পেরতে হত নৌকায়। সেখান থেকে মিনিট কুড়ি ট্রেকারে চেপে পৌঁছতেন রায়মঙ্গল নদীর পাড়ে। নৌকায় নদী পেরিয়ে দেড় ঘণ্টা হেঁটে যেতেন কালিন্দি নদীর পাশে সুন্দরবনের চাঁড়ালখালিতে নিজের গ্রামে। ২০০ মিটার দূরে বাংলাদেশ। রোগী দেখতেন সেখানেই। বিনামূল্যে।

একসময় রাতে লন্ঠন, কুপি জ্বালিয়েও রোগী দেখেছেন। কারণ তখন বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি সুন্দরবনের সেই দুর্গম প্রান্তে।কয়েক বছর পরে সাহেবখালি পঞ্চায়েত এলাকায় গড়ে তোলেন ‘সুজন’ নামে সেবাকেন্দ্র। এখনও কলকাতার লেক টাউনের বাড়ি থেকে প্রতি শনিবার সকালে ট্রেনে করে হাসনাবাদ এবং সেখান থেকে অটোয় যান নেবুখালি। নৌকোয় নদী পেরিয়ে ফের অটো ধরে সাহেবখালি। রবিবার দুপুর পর্যন্ত রোগী থেকে ফিরে যান কলকাতায়। চাইলেই তিনি শুধু রোগী দেখেই লাখ লাখ টাকা উপার্জন করতে পারতেন। কিন্তু গরীব মানুষের অসহায়তা তাঁকে নাড়া দিয়েছে বরাবর। তাই বিলাস বহুল জীবন যাপন ছেড়ে জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দিলেন আর্ত মানুষের সেবায়। ভালো থাকুন ডাক্তার বাবু।আপনার এই কাজ অনেকের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠুক। কেমন লাগলো এই প্রতিবেদন? এখনই জানান কমেন্ট বক্সে।

https://fb.watch/prje55iWca/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

Exit mobile version