পূর্ব ভারতের বৃহত্তম শিবলিঙ্গ বাংলায়, ৯ ফুট উঁচু! জল ঢাললেই পূরণ হবে মনের ইচ্ছা

।। প্রথম কলকাতা ।।

পূর্ব ভারতের বৃহত্তম শিবলিঙ্গ আছে বাংলায়। কষ্টিপাথরে তৈরি। উচ্চতা প্রায় ৯ ফুট। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে তবেই বাবার মাথায় জল ঢালতে পারবেন। মহাদেব এখানে ভীষণ জাগ্রত। সবার উপর সদয়। গেলে মন খারাপ নিয়ে ফিরতে হবে না। পূরণ হবে মনের সব ইচ্ছা। শিবলিঙ্গের বয়স অনেক। তাই ভক্তরা মহাদেবকে বলেন বুড়ো শিব। শ্রাবণ মাসে আছে বিশেষ মাহাত্ম্য। কোথায় আছে এই মন্দির? এত বড় শিব লিঙ্গের নেপথ্যে কোন রহস্য কাজ করছে?

ভক্ত এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, এটি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং পূর্ব ভারতের বৃহত্তম শিবলিঙ্গ। মন্দিরটি রয়েছে নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার মাজদিয়ায়। রেল স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে। যা বহন করছে বহুদিনের ইতিহাস আর ঐতিহ্য। মন্দিরটি আছে উঁচু বেদির উপর। মন্দিরের শীর্ষদেশ ছত্রাকার। শ্রাবণ মাস কিংবা মহা শিবরাত্রিতে ৯ ফুট উচ্চ শিবলিঙ্গের জল ঢালতে ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ ভক্ত। মন্দিরের চূড়াটা সাজানো হয় একটু অন্য রকম করে। কাঁসর ঘন্টা আর ভক্তদের কণ্ঠস্বরে গমগম করে মন্দির চত্বর। কেউবা মাথায় ছাতা, আবার কেউ বা মাথায় ঘোমটা দিয়ে লম্বা লাইনে অপেক্ষা করেন, বাবার মাথায় জল ঢালবেন বলে। হাতে থাকে কাঁসার বড় ঘটি। সাজিতে থাকে ফুল আকন্দ বেলপাতা।

আগে নদীয়ার এখানে প্রায় ১০৮ টা মন্দির ছিল। প্রথম শিব মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল ১৭৫৪ সালে। কালের নিয়মে টিকে আছে মাত্র তিনটে মন্দির। তবে ভক্তদের ভক্তি একই রয়েছে। বিন্দুমাত্র কমেনি। এখানে দুটি শিব মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে একটি রাম সীতার মন্দির। শোনা যায় বর্গীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র কৃষ্ণনগর থেকে তার রাজধানীর সরিয়ে আনেন এখানে। তৈরি করেন শিবনিবাস। সেই অনুযায়ী গ্রামের নামও শিবনিবাস। এছাড়াও কথিত আছে, দেবাদিদেব শিব মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের স্বপ্নে বলেছিলেন, তাঁর রাজধানী এখানে স্থানান্তরিত করতে। তাই রাজা এখানে শিব মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরের তিন দিকে রয়েছে চূর্ণী নদী। মূল শিবমন্দিরটিকে বলা হয় রাজরাজেশ্বর মন্দির। গায়ে অসাধারণ গথিক শিল্প রীতি। শিবলিঙ্গের মাথায় জল দুধ দেওয়ার জন্য দুইটি সিঁড়ি আছে। একটি ওঠার জন্য, একটি নামার জন্য। লাইন দিয়ে পালা করে শিবের মাথায় ভক্তরা জল ঢালেন। ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় মন্দির। ভক্তরা এই স্থানকে কাশীর সমান পবিত্র বলে মনে করেন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version