।। প্রথম কলকাতা ।।
When Doctor is God: ডাক্তার ভগবান, তা আবার প্রমাণ হয়ে গেল। মুখের টিস্যু থেকে হাড় আলাদা হয়ে গিয়েছিল। অ্যাক্সিডেন্টে ক্ষতবিক্ষত শিশু এখন পুরো সুস্থ। না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। পাঁচ মাসের ছোট্ট মেয়ে ট্রমা কাটিয়ে ফিরে পেল জীবন।
সবাই যখন ক্রিসমাস উদযাপনে ব্যস্ত, তখন পাঁচ বছরের ছোট্ট গীতাঞ্জলি বাবা-মায়ের সঙ্গে বাইকে করে বেরিয়েছিল। বাইকে সজোরে ধাক্কা মারে একটা ট্রাক। গীতাঞ্জলি ছিটকে পড়ে রাস্তার অপরদিকে। ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় মুখ। না, গীতাঞ্জলির জীবন থেমে থাকেনি। মনের জোর আর মেডিকা হাসপাতালের সহযোগিতায় সে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। ফিরে এসেছে ট্রমা থেকে। তার মুখ দেখে মনেই হবে না, সে এক ট্র্যাজিক দুর্ঘটনার শিকার ছিল। মুহূর্তের বদলে গিয়েছে গীতাঞ্জলি জীবন। আর এখানে স্যালুট জানাতে হয় চিকিৎসকদের। পাশে ছিল মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, যেটি পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রাইভেট হসপিটাল চেন। এখন ভাবছেন, একে প্রাইভেট হসপিটাল, তার উপর প্লাস্টিক সার্জারি বলে কথা। নিশ্চয়ই খরচের অঙ্কটাও অনেক। কিন্তু এমনটা নয়। গীতাঞ্জলির বাবা পেশায় সামান্য হকার। আর্থিক দিক থেকেও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ পাশে দাঁড়িয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে চলেছে এক অসম্ভবকে সম্ভব করার লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে সফল প্রত্যেকে। এই ছোট্ট মেয়েটার সাহসের গল্পটা একবার শুনে নিন।
ঝাড়খন্ডের গিরিডিতে পাহাড় ঘেরা সুন্দর প্রকৃতির মধ্যে গীতাঞ্জলি আর তার বাবা-মায়ের হ্যাপি ফ্যামিলি। অ্যাক্সিডেন্ট এর পর গীতাঞ্জলিকে দ্রুত নিয়ে যায় যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। কিন্তু গীতাঞ্জলীর প্রয়োজন ছিল স্পেশালাইজড চিকিৎসার। তখন দ্রুত নিয়ে আসা হয় মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ডঃ অখিলেশ কুমার আগারওয়ালের অধীনে চলে চিকিৎসা। তড়িঘড়ি শুরু হয় পুরোদস্তুর ফেসিয়াল রিকনস্ট্রাকশন। অস্ত্রপ্রচার চলে টানা দু’ঘণ্টা ধরে। তারপর পাঁচ সপ্তাহের রিহ্যাব।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/714171537572113/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
কিন্তু পুরো বিষয়টা যতটা সহজ ভাবছেন ততটা কিন্তু সহজ ছিল না। ছিল প্রচুর অনিশ্চয়তা। গীতাঞ্জলির মা সাধারণ গৃহবধূ। বাবা সাধারণ একজন হকার। অস্ত্রোপচারের জন্য এত পরিমাণ টাকা যোগাড় করা মুখের কথা নয়। ঠিক সেই সময় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাদের পাশে দাঁড়ায় হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট। আর ওদিকে গীতাঞ্জলির নিজের লড়াই তো রয়েছে। তার মুখের হাড় থেকে টিস্যু পুরো আলাদা হয়ে গিয়েছিল। ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার মুখের ডান দিক, চামড়া, চোখের মণি আর নাক। বয়স মাত্র ৫, কিন্তু গীতাঞ্জলির মনের জোরও কম নয়। তারিফ করতে হবে গীতাঞ্জলি সাহসকে। যে সাহস দেখে আরও বেশি মনের জোর পেয়েছেন চিকিৎসকরা। তার চিকিৎসার অন্যতম দিক ছিল দৃষ্টি শক্তিটা বাঁচানো। অস্ত্রোপচারের সময় তাকে অনেকক্ষণ চোখ খুলে রাখতে হয়েছে।। গীতাঞ্জলি এখন সুস্থ। তবে নিয়মিত চেকআপের মধ্যে রয়েছে। এখন গীতাঞ্জলি চোখ খোলা বন্ধ করতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। নাকের অংশের ক্ষতটা পুরোপুরি ঠিক হয়েছে। পুরো বিষয়টার উপর নজর রেখেছে মেডিকা হাসপাতাল। গীতাঞ্জলির বাবা বিকাশ গুপ্তা জানান, তিনি এই অবস্থায় যেভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন, তাতে মেডিকার কাছে চিরকাল ঋণী হয়ে থাকবেন। তাদের জন্যই তার মেয়ে ফিরে পেয়েছে নতুন জীবন।