জীবন বাজি রেখে চলন্ত ট্রেন থামাল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র, বাঁচল শত শত প্রাণ

।। প্রথম কলকাতা ।।

মুরসালি, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। বাড়ি যাওয়ার সময়, চোখে পড়ে লাইনের পাশে কিছুটা মাটি সরে গিয়েছে। যেখান থেকে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টা বুঝে উঠতে না উঠতেই দেখে, দূর থেকে ছুটে আসছে আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ওই কিশোর মুহূর্তে দেরি না করে, পরনে থাকা লাল জামা খুলে হাতে নিয়ে দৌড়াতে থাকে ট্রেনের দিকে। তাও আবার রেললাইন দিয়ে। কাজটা অত্যন্ত ঝুঁকির। কিন্তু তখন কি হবে, আর কি হবে না, আগ পিছু কিছুই ভাবেনি। তখন একটাই লক্ষ্য, ট্রেনটাকে কোন মতে থামাতে হবে। রেললাইনের ওই গর্তের কাছে ট্রেনটা আসলে সর্বনাশ। প্রাণ চলে যেতে পারে বহু মানুষের। মুরসালির উপস্থিত বুদ্ধিতেই বেঁচে গেল শত শত প্রাণ।

কয়েক মাস আগেই ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। যা মানুষের কাছে দগ দগে ঘায়ের মতো। ট্রেন দুর্ঘটনা যে কতটা ভয়ঙ্কর কতটা মারাত্মক তা সবার জানা। এবার বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শিয়ালদা থেকে শিলচরগামী আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ট্রেনটিতে ছিল কয়েক শো মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার ভালুকা রোড স্টেশনের কিছুটা দূরে। ট্রেনটি বড় দুর্ঘটনা বেঁচে গিয়েছে শুধুমাত্র পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মুরসালির উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসিকতায়। সে নিজের প্রাণের মায়া করেনি। নিয়েছে বড় ঝুঁকি। শুক্রবার দুপুরে সাড়ে তিনটা নাগাদ টিউশন থেকে ফিরছিল। তখনই তার চোখে পড়ে লাইনের পাশে কিছুটা মাটি সরে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়েছে। যদি ট্রেনটি গর্তের কাছে আসলে ঘটে যেতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

সে ভালো করেই জানত, লাল রং বিপদ সংকেত। সেই রং দেখালে ট্রেন নিশ্চয়ই দাঁড়িয়ে যাবে। তাই দেরি না করে নিজের গায়ের লাল গেঞ্জি খুলে দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা ট্রেনের দিকে ছুটতে থাকে। অপর দিকে ট্রেনের চালক লাল সংকেত দেখে এমারজেন্সি ব্রেক কষেন। মাঝপথে থামিয়ে দেন ট্রেনটি। ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখেন সত্যি লাইনের মাটির সরে গিয়েছে। দ্রুত খবর দেওয়া হয় রেলকর্মীদের। জায়গাটি মেরামত করা হয়। মুরসালির কাণ্ডে অবাক পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সবাই। তার সাহসিকতাকে বাহবা না দিয়ে পারা যায় না। গোটা গ্রাম তার কাজে গর্বিত।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version