।। প্রথম কলকাতা ।।
Juice Jacking: তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান যুগে মানুষের জীবনের একটা অবিচ্ছেদ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ যত প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছেন ততই নিত্য নতুন প্রতারণার ফাঁদ (Fraud) তৈরি হচ্ছে। আরও বেশি সতর্ক হচ্ছে সাইবার অপরাধীরা (Cyber Criminals)। এক সময় আপনার কাছ থেকেই আপনার ফোনের ওটিপি (OTP) জেনে নেওয়ার মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা জমাপুঁজি শূন্যে এসে দাঁড়াতো। কিন্তু এখন সেই সব প্রতারণার ধরন অতীত। বর্তমানে শুধুমাত্র একটা চার্জার কেবল দিয়েই আপনার ফোনে (Phone) থাকা সমস্ত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারবে অপরাধীরা।
এই নতুন প্রতারণা ফাঁদের নাম জুস জ্যাকিং (Juice Jacking)। নামটা শুনে বেশ মজার বলে মনে হলেও ব্যাপারটা কিন্তু অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। সারাদিনই আমরা প্রায় ফোনে কোন না কোন কাজ করতে থাকি। বিল পেমেন্ট করা থেকে শুরু করে টুকিটাকি বাজার দোকানের পেমেন্ট, অফিসের কাজ, ব্যক্তিগত কাজ গেম খেলা সহ আরও কত কী? রাস্তাঘাটে বেরিয়ে অথবা কর্মস্থলে কিংবা ট্রেনের সফর করার সময় অনেকেই নিজের ফোনের চার্জার সঙ্গে রাখতে ভুলে যান। এমনও হয় যে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় ফোন চার্জ করার পরেও একটা সময় ফোনের ব্যাটারি ডেড হওয়ার মুখে এসে দাঁড়ায় । সেই সময় আপনি স্টেশনে, শপিংমলে কিংবা এয়ারপোর্টে।
ঝটপট সেখানে থাকা চার্জিং পয়েন্টে গিয়ে ফোন চার্জ করে নেন। এই পাবলিক চার্জিং পয়েন্টগুলি (Public Charging Point) হল বড়সড় প্রতারণার ফাঁদ । কারণ ওই পাবলিক চার্জিং পয়েন্ট গুলির মধ্যে সাইবার অপরাধীরা লাগিয়ে রাখছেন মাইক্রোচিপ। যখনি আপনি চার্জার কেবলটি (Charger Cable) আপনার ফোনে লাগাচ্ছেন তখনই সেটি ফোনের মধ্যে থেকে সমস্ত তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে হ্যাকারদের হাতে। আর সেই তথ্যগুলিকে কাজে লাগিয়ে কী কী হতে পারে তা অবশ্যই কারও অজানা নয়। শুধুমাত্র পাবলিক চার্জিং পয়েন্ট নয় অন্যের পাওয়ার ব্যাঙ্ক ব্যবহার করাও বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়।
তাঁর কথায়, রাস্তাঘাটে এয়ারপোর্টে, বাসস্ট্যান্ডে, স্টেশনে কিংবা শপিংমলের কোন জায়গায় থাকা পাবলিক চার্জিং পয়েন্ট গুলির ইউএসবি কেবলে চার্জ না দেওয়াই শ্রেয়। কারণ ইউএসবি কেবলের মতো দেখতে ওএমজি কেবল সেখানে ব্যবহার করা হতে পারে। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে সনাক্ত করা সম্ভব নয়। ওই কেবলে যদি মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ চার্জ দেওয়া হয় তাহলে সমস্ত ডেটা খুব সহজে হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব। আর একই সঙ্গে যে কোন ব্যক্তির ডিভাইসে ইন্সটল হয়ে যেতে পারে ম্যালওয়ার।
কলকাতার সাইবার ক্রাইম (Kolkata Cyber Crime) অফিসাররা এই নতুন তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রতারণা চক্র সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা ফ্রি ওয়াই-ফাই (Free WI-FI) না ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ হিসেবে জানানো হয় যে, ওই ফ্রি ওয়াই-ফাই কানেকশনের মাধ্যমে যে কোন ডিভাইসে ঢুকে পড়তে পারে ম্যালওয়ার। আর এই ম্যালওয়ারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা যেকোনো ব্যক্তির ই-মেইল, পাসওয়ার্ড, ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য লুটে নিতে পারে। এছাড়াও সেই ব্যক্তির গতিবিধির উপর নজরদারি রাখতে পারে। অথাৎ বলা যায়, বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নতি মানুষকে যতটা আধুনিক করে তুলেছে ততই বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতারিত হবার ঝুঁকি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম