।। প্রথম কলকাতা ।।
ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী এই কালী মা। উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম বোল্লা কালী। নৈহাটির বড়মা থেকে কম জাগ্রত নয়। একই মায়ের কতই রূপ। এই কালীর কাছে মানত করলে অবশ্যই মানতে হবে বিশেষ নিয়ম। প্রতি বছর ৫-৬ হাজার বলি হয় বাহারি ভোগ নয় সাধারণ এই মিষ্টি খেত ভালোবাসেন বোল্লা কালী। যতই কষ্ট হোক। সামনে থেকে একঝলক মায়ের দর্শনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন লক্ষ লক্ষ পূর্নাথী। মায়ের মহিমা জানেন?
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার। দূরে বোল্লা গ্রামে মায়ের মন্দির। উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম কালীর পুজোয় আয়োজনে কী কী থাকে? অন্য কোন ভোগ নয়, কোন বিশেষ মিষ্টি মায়ের ভীষণ প্রিয়? মায়ের প্রধানমুর্তির পাশেও ছোট ছোট কালী মূর্তিকে পুজো করা হয় কেন? বোল্লা কালী আপনার মনস্কামনা শুনবেনই। উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বোল্লা রক্ষাকালী পুজো। জানলে অবাক হবেন এই পুজোয় সব থেকে বেশি চাহিদা থাকে বাতাসার। পুজোর কয়েক দিন কয়েক হাজার কুইন্টাল বাতাসার প্রয়োজন হয়। তাই পুজোর অনেক আগেই বাতাসা তৈরি করতে কারিগররা মালদা থেকে চলে আসেন বোল্লায়। দূর দূরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা বোল্লা রক্ষাকালীর কাছে আসেন। পুজোয় তারা ভোগ হিসেবে বাতাসা দিয়ে থাকেন।
রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার পুজো হয় মা বোল্লার। এই কালী ভীষণ জাগ্রত। দেবীর কাছে মানত করলে আপনাকে মানতেই হবে এই নিয়ম। বোল্লা কালীর কাছে মনস্কামনা জানাতে চান? তবে পুজোর দিন আপনাকেও একটি কালী মূর্তি এনে মায়ের পাশে রাখতে হবে। এই পূজাতে গেলেই দেখতে পাবেন মন্দির প্রাঙ্গণ লাগোয়া আটচালায় মানতের আরও শতাধিক ছোট কালী মূর্তি। মনস্কামনা পূরণ হলেই সোনা রুপোর গয়না মাকে পরিয়ে দেন ভক্তরা। নৈহাটির বড়মার সেই গয়না আপনারা দেখেছেন নিশ্চয়ই। এই বোল্লা কালীকেও সোনা রুপোর অলঙ্কার নিয়ে পুজো দিতে লম্বা লাইন পড়ে।
কথিত আছে, তৎকালীন জমিদার মুরারীমোহন চৌধুরী কোনও একটি মামলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ওই সময় বোল্লা কালীর কাছে মানত করেই জমিদার মামলায় জিতে যান। তারপর থেকে বোল্লা গ্রামে ঘন জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় ওই জমিদারের সৌজন্যে পুজিত হয়ে আসছেন বোল্লা কালী। তবে বোল্লা নামকরণের পিছনে উঠে এসেছে সেকালের এক বিখ্যাত জমিদার বল্লভ মুখোপাধ্যায়ের নামও। তাঁর নামেই এলাকার নাম বোল্লা হয়েছিল বলেও শোনা যায়। আবার শোনা যায় একসময় এই গ্রামে ডাকাতদের অত্যাচার শুরু হয়েছিল তখন দেবীর কালী ভয়ঙ্করী রূপ ধারণ করেন। মায়ের ভীষণ রূপ দেখা মাত্রই ডাকাতরা পালিয়ে যায়। তখন থেকেই বোল্লা কালী পুজোর শুরু হয়।
ভক্তদের বিশ্বাস সমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ করেন বোল্লা কালী। তাঁর আশীর্বাদে জীবনে সুখ, শান্তি আসে। তিনদিন ধরে মেলা চলে এই পুজোকে ঘিরে। শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নয়, পাশের রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসেন এই উৎসবে। বিশালাকার বোল্লা কালীর পুজোয় লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় প্রতিবছর।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম