ভর্তা দিয়েই দুই বাংলাকে জুড়ে দিলেন বাংলাদেশী বউ, নয়নার হাতের স্বাদ মুগ্ধ করবেই

।। প্রথম কলকাতা ।।

কলকাতার মেয়ে বাংলাদেশে এখন গুছিয়ে সংসার করছেন। শিকড় এপার বাংলাতে থাকলেও জীবনের বড় অংশ তো ওপারেই। এক বাংলাদেশিকে বিয়ে করে হয়ে যান ওপারের বউ কিন্তু দুই বাংলার টানই তাঁর কাছে প্রবল। তাই যতই কাঁটাতারের সীমানা থাক রান্না দিয়ে দুই বাংলাকে এক করে দিলেন নয়না আফরোজ। তাঁর কাছে রান্না মানে প্যাশন, ভালোবাসা, ভালো থাকার ম্যাজিক! রান্না নিয়ে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। শুধু হেঁশেলে নয়, নানা রকমারি পদ নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা করেছেন। শুধু খেলেই তো হবে না কী ভাবে খাবেন, কোন ভাবে সেই রান্নার আসল স্বাদ পাওয়া যাবে সে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছেন দিনরাত। বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া নানা রান্না তুলে ধরছেন বিশ্বমঞ্চে। অথচ জীবনের শুরুটা একেবারেই অন্যরকম ছিল। আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করতে করতে রান্নার প্রেমে কীভাবে পড়লেন? কীভাবে হলেন রান্নার গবেষক ? নয়নার জীবনের সেই গল্প আজ শেয়ার করব আপনাদের সাথে।

সে এক লম্বা জার্নি! পদ্মাপারের রকমারি পদ নয়নার আগ্রহ বাড়িয়েছে। বাংলাদেশের খাবারের সাথে তার গভীর পরিচয়। ওপারের গ্রাম- শহুরে জীবনে অগোছালো, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হরেক পদকে নয়নাই পৌঁছে দিচ্ছেন দেশে-বিদেশে। তার জানাগুলোকে পৌঁছে দিচ্ছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে নয়া মোড়কে তুলে ধরছেন। এবার তাঁর রান্নার সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিলোত্তমায়। কলকাতার মানুষের কাছে পৌঁছে দিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত বিভিন্ন ভর্তা ও ডাল। ওপারের স্মৃতির আবেগে ভাসতে ভাসতে নয়নার হাতের স্বাদ নিতে অনেকেই এসেছিলেন কলকাতার এই রেস্তোরাঁয়। কলকাতার সিক্স বালিগঞ্জ প্লেস রেস্তোরাঁয় পদ্মাপারের রান্নার গবেষক নয়নার হাতের স্বাদের টানে ভিড় করেছিলেন অনেকেই। রান্নার প্রতি ভালোবাসা তো তাঁর আছেই। তার সাথে বাড়তি পাওনাও রয়েছে। একেকটা পদের পিছনে হারিয়ে যাওয়া নানা অজানা গল্প জানা যায়। তাই নয়নার সাথে সীমান্ত পেরিয়ে এ পারে চলে আসে ৮ ধরনের ভর্তা।

ভর্তার উৎপত্তি কিন্তু বাংলাদেশেই। এপারের অনেকের হেঁশেলে পৌঁছলেও কেউ কেউ ভর্তার স্বাদ জানেন না। পাত পেড়ে সেই স্বাদ গন্ধ এবার কলকাতায় পৌঁছে দিলেন নয়না। সিক্স বালিগঞ্জ প্লেস রেস্তোরাঁর সাথে যৌথ উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছিল। বেগুন-কাঁচা টমেটোর ভর্তা, পাঠার মাংসের ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা জিভে জল আনা সব পদ। ১০ নভেম্বর শুরু হওয়া উৎসবের শেষ দিন ছিল ১৯ নভেম্বর। আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজের সূত্রে বাংলাদেশের কোনায় কোনায় ঘুরতে হয়েছে তাঁকে। ওপার বাংলার খাবারকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তখন থেকেই রান্নার প্রতি তাঁর প্রেম। ঠিক করেন বাংলাদেশি রান্নার সাথে পরিচয় ঘটাবেন বিশ্বের, লোকে চেখে যেন বলতে পারে!

এটাই খাঁটি বাংলাদেশের রান্না খুঁটিনাটি সব তার জানা। তাই এপার বাংলায় যাঁদের শিকড় এখনও রয়েছে লাল সবুজের দেশে। তাঁদের জিভে সেই মন ভরা স্বাদ ফিরিয়ে দিতে চান। তাই সুযোগ পেলেই এরকম উৎসবের আয়োজন করেন। গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে গিয়ে নানা পদ শিখেছেন তিনি। তাই বাংলাদেশের খাঁটি স্বাদ গন্ধ তাঁর হাতেইব্রয়েছে। তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version