।। প্রথম কলকাতা ।।
পরমাণু যুগে বাংলাদেশ। ব্যবহার করবে মারাত্মক শক্তি। আরও দুর্ধর্ষ হয়ে উঠবে দেশটা। রাশিয়ার সঙ্গে মাখোমাখো ভাব। মেনে নিতে পারবে তো যুক্তরাষ্ট্র? রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শক্তি যোগাচ্ছেন পুতিন, নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পাল্টা মাস্টারস্ট্রোক। রাশিয়া আর বাংলাদেশ হাত মেলালে কতটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হবে? পারমাণবিক শক্তি ভুল কাজে ব্যবহার হবে না তো?
প্রচুর জল্পনা কল্পনার অবশেষে ঘটিয়ে, অবশেষে ইউরেনিয়াম মালিক বাংলাদেশ। গর্বের জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের ৩৩তম দেশ হিসেবে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রগতিতে হু হু করে এগিয়ে চলেছে দেশটা। ইতিমধ্যেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চলে এসেছে জ্বালানির প্রথম চালান। যার নেপথ্যে বড় কান্ডারী রাশিয়া। ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালিভাবে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগেও পুতিন বারংবার কথা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের পাশে থাকবেন। সাহায্য করবেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াবেন। রাশিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষেত্রে সূচনা হল নতুন অধ্যায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুটো ইউনিট রয়েছে। প্রথম ইউনিটের প্রায় ৯০% কাজ শেষ। নির্মাণ কাজ শেষ হলে উৎপাদন হবে প্রায় ২ হাজার ৪ শো মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। মাত্র একবার জ্বালানি দিলেই কেল্লাফতে। টানা ১৮ মাস কোন চিন্তাই নেই। মিলবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। নেই দূষণের বালাই। কমবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ। এই পরিকল্পনা বাংলাদেশের মাটিতে হয়ে উঠবে বড়সড় ক্লিন এনার্জির মডেল। আগামী বছরে এটি যুক্ত হবে দেশটার জাতীয় গ্রিডে। বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু হবে ২০২৫ সাল নাগাদ। বাংলাদেশ এখন ভীষণ আশাবাদী। আমুল বদলে যাবে জিডিপি। শুধুমাত্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জিডিপি আসবে ২ শতাংশ।
খটকা অন্য জায়গায়। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লি বলে কথা, সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে একটা বড়সড় প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই উদ্বেগে রয়েছে অনেকেই। যতদূর শোনা যাচ্ছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সেভাবে ভয়ের কিছু নেই। রাশিয়ার সেরা কর্মকৌশল থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রকৌলীরাও যাতে সমানভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারে, সেই পরিকল্পনাও চলছে।
রশ প্রেসিডেন্ট পুতিন একদম সরাসরি বাংলাদেশকে অভিহিত করেছেন, পরীক্ষিত বন্ধু বলে। যে বন্ধুত্বের ভিত্তি সমতা আর সম্মান। জানিয়ে দিয়েছেন,ভবিষ্যতেও রূপপুর কেন্দ্রের সঙ্গে তার দেশ পাশে থাকবে। ২০২৪ এ প্রথম ইউনিট এবং ২০২৬ সালের দ্বিতীয় ইউনিট শুরু হবে। একটা বিষয় খেয়াল করুন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্যাঁচে কিন্তু রাশিয়া এবং বাংলাদেশ। রাশিয়া-বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা কেমন ভাবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র? বাংলাদেশের এত বড় সফলতা মেনে নেবে তো? সেটা তো সময়ই বলবে।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি ব্যবহার করছে, এটা নিয়ে আবার মাথাব্যথা শুরু হয়েছে অনেকের। প্রশ্ন উঠছে, দেশটা কোনো মারণস্ত্র তৈরি করবে না তো? শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিকে ব্যবহার করবে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পথে। এভাবেই বাংলাদেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠবে আরও স্মার্ট। অটুট থাকবে বাংলাদেশ রাশিয়ার বন্ধুত্ব। এভাবেই বিশ্ব ময়দানে ভূ-রাজনৈতিক মাটি পোক্ত করছে বাংলাদেশ। আর কয়েকটা দশক গেলে, আজকের বাংলাদেশকে চিনতেই পারবেন না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম