আসাম ভেঙে পৃথক রাজ্য চাই, ঘনিষ্ঠ হবে বাংলাদেশ! কলকাতায় আসা কোন ব্যাপারই নয়

।। প্রথম কলকাতা ।।

ভেঙে যেতে বসেছে আসাম! তীব্র হচ্ছে আন্দোলন। বহুদিন ধরেই বঞ্চনার শিকার বাঙালিরা। আর সহ্য নয়, এবার আলাদা রাজ্য চাই। দাবি আন্দোলনকারীদের। বরাক উপত্যকা আলাদা হলে, ঘনিষ্ঠতা বাড়বে বাংলাদেশের সঙ্গে। স্মুথ হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কমবে জিনিসের দাম। কলকাতায় আসতে বড় সাহায্য করবে ঢাকার রাস্তা।

বরাক উপত্যকাকে ঘিরে বেড়েই চলেছে উত্তেজনার পারদ। ভারতের আসামে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের বসবাস। যার মধ্যে ১ কোটি ২০ লক্ষ বাঙালি। অথচ বাঙালিরাই বঞ্চিত। তাই আসাম থেকে বেরিয়ে নতুন রাজ্যের দাবি বহুদিনের, বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের(বিডিএফ)। অভিযোগ বলছে, আসামে বিপন্ন বাঙালিদের অস্তিত্ব। সমস্যা একদিনের কিংবা ১ বছরের নয়, বছরের পর বছর বাঙালিরা নিপীড়ন এবং বৈষম্যের শিকার। চরম অনিশ্চয়তায় আসামের বাঙালিরা। গ্রাস করছে একরাশ উৎকণ্ঠা। শুধু বাঙালি নয়, একই সমস্যার ভুক্তভোগী আরো বেশ কিছু ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ।

কলকাতার প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বরাক কেন আসাম থেকে আলাদা হতে চায়, তার কারণ তুলে ধরে বিডিএফ। বর্তমানে বরাক উপত্যকায় ৪৫ লক্ষ মানুষের বাস। বিডিএফ এর যুক্তি অনুযায়ী, ৪ থেকে ৬ লক্ষ মানুষ নিয়ে যদি আলাদা রাজ্য হতে পারে, তাহলে তারা ৪৫ লক্ষ মানুষ নিয়ে কেন আলাদা রাজ্য হতে পারবে না? বরাকের তিন অঞ্চলের রেভিনিউর পরিমাণ প্রায় তিন হাজার ছয়শ কোটি টাকা। এছাড়াও রয়েছে ১৫০ টি চা বাগান। বরাক ভাসছে প্রাকৃতিক তেল গ্যাসের প্রাচুর্যের উপর। তাই আসামে থেকে পৃথক হয়ে পূর্বাঞ্চল নামক একটা আলাদা রাজ্যের দাবীকে সামনে রেখে তারা কয়েক দিনের মধ্যেই নামছেন আন্দোলনে। দাবি অনুযায়ী, নতুন পূর্বাঞ্চল রাজ্য হবে আসামের তিন জেলা, করিমগঞ্জ, কাছাড় এবং হায়লাকান্দি নিয়ে।

উত্তর পূর্ব ভারতে অরুণাচল, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম ত্রিপুরা এবং মেঘালয় ঘিরে রেখেছে আসামকে। যেখানে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাসিন্দা বাঙালি, আসামে সরকারি ভাষা অসমীয়া এবং রাজ্যের সমস্ত কাজে ব্যবহার হয় সেই ভাষায়। ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এই রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। ভৌগলিক সীমানার দিকে তাকালে আসামের দক্ষিণ পূর্ব এবং পশ্চিমাংশে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে আসামের সম্পর্ক বেশ ভালো। পর্যটন, ব্যবসা বাণিজ্য তথা সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নয়ন থেকে শুরু করে প্রসারে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী আসাম। বাংলাদেশেরও বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধারাবাহিকভাবে কার্যক্রম বজায় রেখেছে আসামের মাটিতে। বাংলাদেশের সঙ্গে আসামের সংস্কৃতি এবং ভাষার মধ্যেও বহু মিল।

আন্দোলনকারীদের মতে, আসাম থেকে বরাক আলাদা রাজ্য হলে ঘনিষ্ঠতা বাড়বে বাংলাদেশের সঙ্গে। সমৃদ্ধ হবে অর্থনীতি। সহজ হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। দ্রুত ঢাকা দিয়ে পৌঁছানো যাবে কলকাতায়। আগে যে সময় লাগত ৩০ ঘন্টা, তা কমে দাঁড়াবে মাত্র ৬ ঘন্টায়। পাশাপাশি বাংলাদেশ হয়ে জলপথে প্রচুর পণ্য আনা যাবে বরাকে। ৫০% কমবে দ্রব্যমূল্য। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বরাক প্রাকৃতিক আর মানব সম্পদের অভাব নেই। যদি আলাদা রাজ্য হয় সেক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের কোন সমস্যা হবে না, বলে মনে করছে বিডিএফ।

 

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version