ইসরাইলি অস্ত্রে কোন মোহ ? ভারতের ভরসা, ক্যাপচার এতোগুলো দেশ! ঠেলা বুঝছে হামাস

।। প্রথম কলকাতা ।।

ইসরাইলি অস্ত্রে কীসের টান? কীসের মোহ? বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হু হু করে ছেয়ে যাচ্ছে ইহুদীভূমির অস্ত্র। আয়রন ডোমের খেল, যে অস্ত্রের কেরামতিতে ইসরাইলের পাওয়ার বেড়েছে কয়েক গুণ। কোন দেশে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র এক্সপোর্ট করছে ইসরাইল? বন্ধু ভারত কোথায়? গাজা তো ট্রেলার, ইজরায়েলি অস্ত্রের বান্ধবী ধুয়ে মুছে সাফ হামাস? লিমিটেড গ্রাউন্ড রেডে তাহলে কী ঘটবে?একবার ভাবুন ইসরাইলি আক্রমণের পর থেকে গাজার পরিস্থিতি ভয়ংকর। অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা হামলায় নিহত অজস্র মানুষ। ইসরাইল এর সিক্রেট সুপার উইপন আয়রন স্টিং ও খেল দেখিয়েছে। আয়রন ডোমের ক্যারিশ্মা তো গোটা বিশ্বের জানা। ইসরাইলের বিভীষিকাকে অনেকে হিরোশিমার ভয়াবহতার সঙ্গে তুলনা করছেন। ইসরাইলের হাতে আরও কি কি আছে আন্দাজ নেই। খতরনাক সব অস্ত্রের ভরসাতেই হামাসের সঙ্গে লড়ছে ইহুদী ভূমি। দেশটির অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের সবচেয়ে বড় উৎস বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র।

যে ইসরাইল ধীরে ধীরে ইমপোর্ট থেকে দূরে সরছে। অস্ত্র এক্সপোর্টে মন দিচ্ছে। এসআইপিআরআইয়ের তথ্য অনুসারে, গত দশকে দেশটির অস্ত্র রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে আমদানিকে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করেছে। তেল আবিব ২০২২ এ ১ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা মূল্যের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করেছে। যার বেশিরভাগই কিনেছে আরব দেশগুলো। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, গত তিন বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ইসরাইলের যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি বেড়েছে ৫০ শতাংশ। গত দশ বছরের তুলনায় যা দ্বিগুণ। বিক্রি হওয়া এসব যুদ্ধাস্ত্রের মধ্যে ২৫ শতাংশ ড্রোন, ১৯ শতাংশ মিসাইল প্রতিরক্ষা সিস্টেম এসব যুদ্ধাস্ত্রের এক-চতুর্থাংশই কিনেছে আরব দেশগুলো। নাম উল্লেখ করা না হলেও, ২৪ শতাংশই আব্রাহাম অ্যাকোর্ডস চুক্তির আওতায় থাকা দেশগুলো কিনেছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এই তালিকায় রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। মরক্কো ও সুদানেও তেল আবিব যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করেছে বলে খবর। এছাড়া এশিয়া ও ওশেনিয়ার দেশগুলোতে ৩০ শতাংশ, ইউরোপে ২৯ শতাংশ ও উত্তর আমেরিকায় ১১ শতাংশ প্রতিরক্ষা সামগ্রী বিক্রি করেছে তেল আবিব।

আরও আছে ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে অন্তত ২৫ টা দেশ ইসরাইল থেকে মোট ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র কিনেছে। ভারত ও ইসরাইলি অস্ত্রে ভরসা রাখে। এর মধ্যে ইসরাইল থেকে সর্বোচ্চ ১.২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে ভারত, যা দেশটির অস্ত্র রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জানিয়ে রাখি, ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইসরাইল ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক বিকশিত হয়েছে। ওই বছর ইসরাইলি অস্ত্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ছিল আজারবাইজান যারা ২৯৫ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কে, তার পরে ফিলিপাইন ২৭৫ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র, যুক্তরাষ্ট্র ২১৭ মিলিয়ন ডলার ও ভিয়েতনাম ১৮০ মিলিয়ন ডলার। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিরক্ষা সামগ্রীর বিক্রি বেড়েছে। তাতে যে পিছিয়ে নেই মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সার উপাধি পাওয়া ইসরাইলও, সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে কথা। ইসরাইলের লেভেল আলাদা।

মনে করিয়ে দিই মার্কিন ও ইসরাইলি সামরিক বাহিনী যৌথ মহড়া, প্রযুক্তি উন্নয়ন কর্মসূচি ও প্রতিরক্ষা প্রকল্পে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। মার্কিন সামরিক সহায়তার সর্বোচ্চ অংশ পায় ইসরাইল। যুদ্ধ ও অস্ত্র নিয়ে গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে ইসরাইল সামরিক খাতে ২৩.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। আর হিসেব বলছে, ২০১৮-২২ মেয়াদে সামরিক খাতে দেশটির মাথাপিছু ব্যয় ২ হাজার ৫৩৫ মার্কিন ডলার, যা বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাথাপিছু সামরিক ব্যয়। একই সময় বিশ্বে মাথাপিছু সামরিক ব্যয়ের শীর্ষে কাতার। একবার ভাবুন সামরিক খাতে এত এত খরচ করছে ইসরাইল, হামাস ইহুদি ভূমিকে দুর্বল ভেবে ভুল করছে না তো? এ বছরের শেষের দিকে ইসরাইলের কাছ থেকে ৪৬ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা দিয়ে অ্যারো-থ্রি ক্ষেপণাস্ত্র কেনার কথা জানিয়ে রেখেছে জার্মানি। মোদ্দা কথা, ইসরাইল কে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো অস্ত্রের জন্য রীতিমতো ছেঁকে ধরছে। আর তাদের সাথেই যুদ্ধ চালাচ্ছে হামাস। এই জল যে কতদূর করাবে সেটা এখন থেকে প্রেডিক্ট করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version