।। প্রথম কলকাতা ।।
গোপনে রাশিয়ার উপর নজর রাখবে ব্ল্যাক হর্নেট। সব তথ্য হবে ফাঁস, বড় রিস্কে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র এটা কী পাঠাচ্ছে? রণাঙ্গনে কিস্তিমাত করবে ইউক্রেন? পশ্চিমাদের প্ল্যানে নাস্তানাবুদ হবে রাশিয়া? ব্ল্যাক হর্নেট আসলে কী? কারা তৈরি করে? কেনই বা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ব্ল্যাক হর্নেট পাঠাচ্ছে ইউক্রেনে?
মোক্ষম চাল দিয়ে দিল পশ্চিমা বিশ্ব। কীভাবে মোকাবিলা করবেন পুতিন? বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র সামরিক ড্রোন ব্ল্যাক হর্নেট। যুদ্ধে এটাই এখন ইউক্রেনের তুরুপের তাস। গোপনে নজরদারি চালাতে, বিভিন্ন গোয়েন্দা কার্যক্রমে ব্যবহার করতে ইউক্রেনকে ব্ল্যাক হর্নেট ন্যানো ড্রোন পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু, রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ এই ড্রোন ইউক্রেনে পাঠাচ্ছে কেন?
ব্ল্যাক হর্নেট ন্যানো মূলত অত্যাধুনিক চালকবিহীন ড্রোন। যা একটানা সর্বোচ্চ ২৫ মিনিট আকাশে উড়তে পারে। গতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২১ কিলোমিটার। পাখির মতো দেখতে এই ড্রোনের ওজন মাত্র ১৭ থেকে ১৮ গ্রাম। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ মিলিমিটার এবং প্রস্থ প্রায় ২৫ মিলিমিটার। ব্ল্যাক হর্নেটের ভেতরে থাকে ডিজিটাল ডাটা লিংক। ফলে ১.৬ কিলোমিটার দূর থেকে এই ড্রোনের মাধ্যমে আশপাশের এলাকার উচ্চ মানসম্পন্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ এবং তথ্য সংগ্রহ করা যায় অনায়াসেই!
ক্ষুদ্রাকার ও শব্দ কম হওয়ায় ব্ল্যাক হর্নেট কে কাবু করা দুঃসাধ্য। মূলত নজরদারি ও স্বয়ংক্রিয় আকাশযান, সাঁজোয়া যানের সরঞ্জাম, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত ব্যবস্থা এবং অগ্নিনির্বাপণ ক্যামেরার জন্য এই ড্রোন পরিচিত। দাম কিরকম? একটি ব্ল্যাক হর্নেটের দাম আনুমানিক ২ লাখ মার্কিন ডলার। এটা অবশ্য বর্তমান মূল্য নয়, ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই দামে ১৬০টি ব্ল্যাক হর্নেট কেনে। এই দামের মধ্যেই রিমোট কন্ট্রোলার, টাচ স্ক্রিন, চার্জযোগ্য ব্যাটারি দেওয়া হয়েছিল।
২০১৩ সালে প্রথমবার যুদ্ধক্ষেত্রে এই ড্রোনের ব্যবহার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এর ব্যবহার শুরু হয় ২০১৫ সালে। বর্তমানে ব্ল্যাক হর্নেট ব্যবহার করে নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু, কোন অস্ত্রে কাবু হয় ব্ল্যাক হর্নেট? বিশেষভাবে তৈরি আরএলকে–এমটি ভালদাই ব্যবহার করে এটিকে ধ্বংস করা সম্ভব। ভালদাই মূলত একটি বিশেষ রাডার, ছোট ও ক্ষুদ্রাকার নজরদারি ড্রোন ধ্বংসের লক্ষ্যেই এটি তৈরি করা। এছাড়া ড্রোনবিধ্বংসী অস্ত্রব্যবস্থা পিএআরএস–এস স্তেপাশকা ব্যবহার করে ব্ল্যাক হর্নেটকে ধ্বংস করা সম্ভব! স্তেপাশকা প্রায় ১০ কেজি ওজনের মূলত একটি ড্রোন বিধ্বংসী বন্দুক। এটি ব্যবহার করে ড্রোন ভূপাতিত করা যায়। এতেও কাজ না হলে, স্টুপোর নামে বিশেষ একধরনের বন্দুক দিয়ে ব্ল্যাক হর্নেটকে ধ্বংস করা সম্ভব।
এতে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক প্রযুক্তি আছে, যা দিয়ে ড্রোন নিয়ন্ত্রণ বা ভূপাতিত করা যায়। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ব্ল্যাক হর্নেট কে মোকাবেলা করতে রাশিয়া কে যে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে, সেটা বুঝতে বিশেষ অসুবিধা হচ্ছে না। তাহলে কী সেইমতো প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশবাহিনী? কারণ, ন্যানো ড্রোন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র এই দফায় ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে আরো ৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তার ঘোষণা করেছে। যেসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ দেবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে। নাসমাস, স্টিঙ্গার, প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল, স্ট্রাইকার, টো ও জ্যাভেলিন, হাউৎজার কামানের গোলা, হিমার্স রকেট–ব্যবস্থা এবং ২ কোটি ৮০ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম