।। প্রথম কলকাতা ।।
বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে। ন্যাটো আর রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাবে কি? চেক সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফের আশঙ্কা সত্যি হলে কি হবে? ন্যাটো বনাম রাশিয়া, সামরিক শক্তি বেশি কার? যুদ্ধ হলে জিতবে কে? কি বলছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা? এই ন্যাটোকে নিয়েই যত বিপত্তি, অন্তত রাশিয়ার তেমনই দাবি। কারণ, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া যখন সেনা মোতায়েন করা শুরু করেছিল, তখন থেকেই রুশ অবস্থানের বিরোধিতা করে আসছে এই আন্তর্জাতিক সামরিক সংগঠন, ন্যাটো। যে ন্যাটোর নেতৃত্বে রয়েছে আমেরিকা।
তাহলে, সেই ন্যাটো আর রাশিয়া যদি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে পরিস্থিতি? ইতিমধ্যেই, চেক সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল কারেল রেহকা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ হতে পারে, এই যুদ্ধ অসম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে, যুদ্ধ বেধে গেলে কি হবে? সামরিক শক্তির দিক থেকে ন্যাটো আর রাশিয়া কে কোন পজিশনে রয়েছে?
ন্যাটোতে ৩০ টি দেশের সদস্যপদ রয়েছে। সদস্য দেশগুলোর সব মিলিয়ে ৫০ লক্ষ ৪১ হাজার সেনাবাহিনী রয়েছে। ন্যাটোর মোট যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ২০ হাজার ৭০০। ন্যাটোর নৌসেনাও যথেষ্ট শক্তিশালী। ন্যাটোর কাছে মোট ২ হাজার ৪৯ টি রণতরী রয়েছে। ন্যাটোর সাঁজোয়া গাড়ির সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৪ হাজার। ন্যাটোর কাছে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৬৫ টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে ন্যাটোর শক্তি অনেকটাই বেশি।
অন্যদিকে, রাশিয়া এককভাবে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী দেশ। ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সামরিক শক্তি বেড়েছে। রাশিয়া অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরির পাশাপাশি বিশ্বের অনেক দেশকে সেই অস্ত্র সরবরাহ করে। রাশিয়ার মোট সেনাবাহিনীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ৩৫ হাজার। রাশিয়ান যুদ্ধ বিমানের সংখ্যা ৪ হাজার ১৭০। রাশিয়ার কাছে মোট ৬০৫ টি যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে। রাশিয়ার সাঁজোয়া গাড়ি সংখ্যা ৬০ হাজার। তবে পারমাণবিক অস্ত্রের নিরিখে রাশিয়া এককভাবে ন্যাটোর ৩০ টি দেশেকে হারিয়ে দিয়েছে। রাশিয়ার কাছে মোট ৬ হাজার ২৫৫ টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেশকরা বলছেন, সামরিক শক্তিতে রাশিয়ার থেকে এগিয়ে থাকলেও ন্যাটো যদি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া খুব মুশকিল হবে। কারণ ২০০৮ সালের আর্থিক মন্দার পর ন্যাটোর সদস্য ৩০ টি দেশের মধ্যে ২০ টি দেশের আর্থিক অবস্থা খারাপ। তার ওপরে ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহামারির কারণে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশেগুলো তথা আমেরিকার আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। তাই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া আরও কঠিন। বাইডেন ইতিমধ্যেই ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ইউক্রেনের যুদ্ধে আমেরিকা অংশগ্রহণ করলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য।
তবে, এটাও ফ্যাক্ট যদি রাশিয়া ইউক্রেনে পরমাণু হামলা চালায়, তবেই ন্যাটো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে পারে। তাই, সেই যুদ্ধে কে জিতবে তা নিয়ে এখনই সিদ্ধান্তে আসা মুশকিল। উল্লেখ্য, ইউক্রেন কিন্তু রাশিয়ান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মস্কোতে ড্রোন হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে রাশিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, যেহেতু ন্যাটো জোট ইউক্রেনকে শক্তিশালী এবং দূরপাল্লার অস্ত্রশস্ত্র দিচ্ছে। তাই, ড্রোন হামলার ঘটনায় যখন ইউক্রেনের দিকে আঙুল তুলছে রাশিয়া তখন ন্যাটো জোট স্নায়ু-চাপে ভুগতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। সেক্ষেত্রে যুদ্ধ আরও তীব্রতর হওয়ার চান্স থাকছে। যখন তখন বিপজ্জনক পথে যেতে পারে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম