Mahalaya: তর্পণ কেন করা হয়? জেনে নিন তর্পণের সঠিক নিয়ম!

।। প্রথম কলকাতা ।।

Mahalaya: মহালয়ার ভোরে পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে কেন তর্পণ করা হয় জানেন ? সঠিক পদ্ধতিতে তর্পণ করা দরকার, অন্যথায় রুষ্ট হন পূর্বপুরুষেরা, জেনে নিন তর্পণের সঠিক নিয়ম! আর কেন করা হয় তর্পন? তর্পণ শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। আর মহালয়ার দিন প্রচুর মানুষকে গঙ্গাঘাটে তর্পণ করতেও দেখা যায়। প্রাচীনকাল থেকেই এই সময় প্রয়াত পূর্বপুরুষের আত্মা পৃথিবীর খুব কাছে বিরাজ করে বলে বিশ্বাস করা হয়।

তর্পণ শব্দটি এসেছে ত্রুপ থেকে। এর মানে সন্তুষ্ট করা। ভগবান, ঋষি ও পূর্বপুরুষের আত্মার উদ্দেশে জল নিবেদন করে তাঁদের সন্তুষ্ট করাকে তর্পণ বলা হয়। ভগবান ও পূর্বপুরুষের আত্মার নাম উচ্চারণ করে তাঁদের কাছে সুখ-শান্তি প্রার্থনা করা হয়। হিন্দু শাস্ত্রগ্রন্থ অনুযায়ী, সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করলে পিতৃপক্ষের সূচনা হয়।বিশ্বাস করা হয় পিতৃপক্ষের এই সূচনায় তাঁদের পূর্বপুরুষরা পিতৃলোক ত্যাগ করে তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মের গৃহে গিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। পরে যখন সূর্য আবার যথাসময়ে বৃশ্চিকরাশিতে প্রবেশ করে তখন তাঁরা আবার পিতৃলোকে পুনর্গমন করেন। আর পূর্বপুরুষরা যেহেতু তাঁদের গৃহে অবস্থান করেন তাই তর্পণের মাধ্যমে এইসময় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়।

এবছর, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পিতৃপক্ষ। যা ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে। তর্পণ করার মাধ্যমে পূর্বপুরুষরা মোক্ষ লাভ করে থাকেন। পাশাপাশি অন্ন-জল পেয়ে তৃপ্ত পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদে পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ হয় ও পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শাস্ত্র মতে পিতৃদোষ অশুভ ফলাফল প্রদান করে। এর প্রভাবে পরিবারের ষ উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি হয়। বছরের একটি সময়ই তারা মর্ত্যে আসেন কিছু পাওয়ার আশায়। তাঁরা আশা করেন, বছরের একটি দিন অন্তত সন্তানের সেবা পাবেন। সর্বসম্মতভাবে মহালয়ার দিনটিকেই তর্পণের দিন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। ঐ দিন পিতৃপুরুষকে জলদান করাটাই শাস্ত্রসম্মত।

এবার জেনে নিন কিভাবে করবেন তর্পণ?

জলে নেমে পূর্ব দিকে মুখ করে তর্পন করা উচিত। পিতৃ ও মাতৃ তর্পণের সময় জল, তিল, চন্দন, তুলসীপাতা ও ত্রিপত্রী দান করবেন। আর অন্যান্য তর্পণের সময় তিলের পরিবর্তে ধান বা যব দান করতে পারেন। আর চন্দন, তিল ও যব না থাকলে কুরুক্ষেত্র মন্ত্র পাঠ করে জলে তুলসী পাতা দিয়ে তর্পণ করতে হয়।

পিতৃপক্ষে শুধু বুড়ো আঙুল দিয়ে পূর্বপুরুষদের জল দেওয়া হয়। মহাভারত এবং অগ্নিপুরাণ অনুসারে, পূর্বপুরুষদের বুড়ো আঙুল দিয়ে জল নিবেদন করলে তাদের আত্মার শান্তি হয়। শাস্ত্র অনুসারে হাতের বুড়ো আঙুলের সঙ্গে যে অংশ থাকে তাকে পিতৃ তীর্থ বলে। তর্পণের সময় বুড়ো আঙুল থেকে জল নিবেদন করা হলে তা পিতৃ তীর্থ হয়ে পিণ্ডে পৌঁছায়। কথিত আছে এর দ্বারা পূর্বপুরুষদের আত্মা সম্পূর্ণরূপে তৃপ্ত হয়। তাদের জলের অভাব দূর হয়। অবশ্যই খুব ভক্তি ভোরে জলদান করবেন। তাহলেই পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ পাবেন এবং সুখ শান্তি বিরাজ করবে আপনার পরিবারে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version