।। প্রথম কলকাতা ।।
Holi-Dolyatra 2023: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে আঙুন রঙা পলাশ আর নানান রঙের ছটা নিয়ে হাজির হয় দোল উৎসব (Dolyatra)। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে গোটা ভারতবর্ষ এই রঙের উৎসবে সামিল হয়। হোলি (Holi) বা দোল খেলার নেপথ্যে রয়েছে প্রচুর পৌরাণিক কাহিনী এবং ধার্মিক মাহাত্ম্য। বলা হয়, কৃষ্ণের শহর মথুরা, বৃন্দাবন এবং রাধার বরসানায় বহুকাল আগে থেকেই থাকতেই হোলি খেলা হয়ে আসছে। উৎসবের এই পর্বে প্রথমে থাকে হোলিকা দহন। হোলিকা দহন হয় ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে, রঙের হোলির একদিন আগে। মন্দের ওপর ভালোর জয়ের সঙ্গেও এই উৎসবের সম্পর্ক রয়েছে।
হোলির শুভ সময়
ফাল্গুন শুক্লা পূর্ণিমা ৬ই মার্চ বিকাল ৪টে ১৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে শুরু হবে, যা ৭ই মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ৪০ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকবে। দোলযাত্রা পালিত হবে ৭ই মার্চ। হোলি পালিত হবে ৮ই মার্চ। হোলিকা দহনের শুভ সময় থাকবে ৬ই মার্চ বিকেল ৪টে ১৭ মিনিট থেকে ৭ই মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ৯ মিনিট পর্যন্ত।
বৈচিত্র্যে ভরপুর ভারতীয় জীবনধারা এতটাই সমৃদ্ধ যে এতে জীবনের প্রতিটি রঙ রয়েছে। যদি জীবনের রঙ, উদযাপন বা আনন্দের কথা হয় তবে হোলি সম্পর্কে হয়ত বলে শেষ করা যাবে না। হোলি প্রাচীন একটি উৎসব , যার সাথে মিশে আছে ইতিহাসে, জীবনের নানা রঙ, পৌরাণিক বিশ্বাস এবং সর্বোপরি জীবন দর্শন। এই সবকিছুর মিলমিশে হোলি উৎসব মানবজাতিকে আনন্দময় জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। ভারতবাসী পারস্পরিক শত্রুতা, বিভেদ ভুলে হোলি খেলেন। ব্রজভূমি মথুরা, বৃন্দাবন, নন্দগাঁও, গোকুল এবং বরসানার পাশাপাশি কাশীতে হোলি উদযাপন, রঙ্গভারী একাদশী বা চিতা-ভস্ম হোলি শুধুমাত্র ভারতে নয়, সারা বিশ্বে বিখ্যাত।
হোলির বিভিন্ন নাম
হোলি ভারতের একটি অতি প্রাচীন উৎসব, তবে এর আরও অনেক নাম রয়েছে। হোলির মতো হোলিকা বা হোলিকা বসন্ত অত্যন্ত উৎসাহের সাথে উদযাপিত হয়, এটি বসন্তোৎসব এবং কাম-মহৎসব নামেও পরিচিত। ভালোবাসা, সতেজতা, শক্তির পাশাপাশি রঙের উৎসবও বলা হয়, এই উৎসবটি ঐতিহ্যগতভাবে দুই দিন ধরে পালিত হয়। প্রথম দিনে হোলিকা জ্বালানো হয়। দ্বিতীয় দিন ধুলেন্দি, ধুর্দ্দি, ধুর্খেল বা ধুলিবন্দন নামে পরিচিত। ঢোলক ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের তালে হোলির গানের সাথে মিশে যায় মানুষের আনন্দ। এই দিন ঘরে ঘরে গিয়ে অন্যকে রাঙিয়ে দেন, আর হোলির দিন মানুষ পুরনো তিক্ততা ভুলে ভালোবাসায় আলিঙ্গন করেন। অর্থাৎ এই রঙের উৎসব সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
রঙের এই জনপ্রিয় উৎসবও বসন্তের বার্তাবাহক। ফাল্গুন মাসে পালিত হওয়ায় একে ফাল্গুনীও বলা হয়। ভারতের অনেক জায়গায় বসন্ত পঞ্চমী থেকে হোলি উৎসব শুরু হয়। একই দিনে প্রথমবারের মতো ওড়ানো হয় আবির। প্রাচীনকালে এই দিন থেকে ফাগ ও ধামার গান শুরু হয়েছে। বাগানে ফুলের একটি আকর্ষণীয় ছায়া দেখা দিতে শুরু করে। এই সুন্দর পরিবেশে গাছ-গাছালি, পশু-পাখি, মানুষ সবাই আনন্দে মেতে ওঠেন।
হোলি উৎসবের ঐতিহ্যও অনেক প্রাচীন। সময়ের সাথে সাথে এর রূপ ও উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয়েছে। প্রাচীনকালে বিবাহিত মহিলারা পরিবারের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য এটি উদযাপন করতেন। পূর্ণিমার দিনে পুজো করার প্রথা ছিল। বৈদিক যুগে এই উৎসবকে বলা হত ‘নবত্রিশ্তি যজ্ঞ’। তখন যজ্ঞে ক্ষেতের অর্ধেক রান্না করা শস্য দান করে প্রসাদ গ্রহণের বিধান ছিল। এই খাবারের নাম ছিল হোলা, তাই নাম হয় হোলিকোৎসব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম