।। প্রথম কলকাতা ।।
Village of Blind in Maxico:এই গ্রামে জন্মালেই অন্ধ হয়ে যায় মানুষ। অভিশপ্ত এই গ্রাম একটা মাছির দাস। কেন মেক্সিকোর গোটা গ্রামজুড়ে মানুষ, পশুপাখি সকলেই অন্ধ? এই গ্রামে বসতি গড়াটাই ছিল সবথেকে বড় ভুল। অনেক অদ্ভুত গ্রামের নাম তো শুনেছেন কিন্তু মেক্সিকোর এই গ্রামটার(mysterious village exists in Mexico) গভীরে ঢুকলে যেন গায়ে কাঁটা দেয়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম নাকি এই গ্রামে একেবারে অন্ধ। জন্মানোর সময় সুস্থ সবল বাচ্চা কিন্তু কিছুদিন গেলে কার অভিশাপ নেমে আসে? নেপথ্যে কি কোনও দেবতার অভিশাপ নাকি এটাই ন্যাচরাল?
মেক্সিকোর এমন রহস্যে ভরা গ্রামটির নাম টিলটেপেক। মেক্সিকোর ঘন অরণ্যের মধ্যে ছোট্ট একটি গ্রাম।এই গ্রামেই থাকেন শ’তিনেক জাপোটেক জাতির মানুষ। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে এই গ্রামের প্রতিটি মানুষ দৃষ্টিহীন। তারা চোখে একেবারেই দেখতে পান না। শুধু তাই নয়, দৃষ্টিহীন গ্রামের প্রতিটি পোষ্য জীব জন্তুও! দৃষ্টিহীন বাবা-মায়ের কোলে শুয়ে পৃথিবীআলো দেখে শিশুরা। কিন্তু, তার মেয়াদ খুব বেশিদিনের নয়। ধীরে ধীরে তাদের দৃষ্টিশক্তি চলে যেতে থাকে। অচিরেই দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে অন্ধকার নেমে আসে তাদের জীবনেও।
এই গ্রামেই রয়েছে লাবজুয়েলা নামে একটি গাছ। মূলচ এটাকে অভিশপ্ত মনে করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের বিশ্বাস, তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয় ওই লাবজুয়েলা গাছই। তাই রীতিমত এই গাছকে ভয় পান তারা
কিন্তু কয়েক যুগ পরই তাদের ভুল ভেঙে যায়। কোন গাছ নয় এই গ্রামের ওপর রয়েছে অন্য কিছু অভিশাপ। কেন ওই গ্রামের মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন, তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও বিজ্ঞানীরা তদন্ত শুরু করে।
লাবজুয়েলা গাছের যে গল্প গ্রাম জুড়ে ছড়িয়ে আছে তা নিয়েও তদন্ত করে তারা। কিন্তু দেখা যায়, ওই গাছের সঙ্গে এদের দৃষ্টিহীনতার কোনও সম্পর্কই নেই! তাহলে? কেন এমন বিপদ দেখা যায় গ্রামজুড়ে?এই গ্রামে সাকুল্যে ৭০টি কুঁড়েঘরে বসবাস করেন। জাপোটেক নামের এক উপজাতী গোষ্ঠীর শ’তিনেক মানুষ। বিজ্ঞানীরা তাদের ওপর অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারেন, আসলে এই গ্রামের ওপর ছায়া রয়েছে এক প্রজাতির মাছির। মানে ঘন অরণ্যে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’(Black fly) নামে বিষাক্ত মাছি রয়েছে। যা টিলটেপেক গ্রামেও প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায়। এই বিষাক্ত মাছির কামড়ে জীবাণু সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণেই শিশু থেকে বুড়ো এবং পশুরাও ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। পশুদের অন্ধত্বের কারণও ওই ব্ল্যাক ফ্লাই। তবে, এটাই যে আসল কারণ তা সেখানকার মানুষ মানতে চান না।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/721531880169412/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
স্বাভাবিকভাবে এরপরই মেক্সিকো সরকার এই গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। দৃষ্টিশক্তি হারালেও নিজের মাটিকে, নিজেদের ভিঁটেকে হারাতে এরা রাজী নন। তাদের অন্য এলাকায় পুনর্বাসনের চেষ্টা সরকার করলেও নতুন জায়গায় থাকতে পারেননি তারা। জঙ্গলে ঘেরা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রামে’ই ফিরে এসেছেন। তাই প্রশাসনও শেষপর্যন্ত হাল ছেড়ে দেয়। কিন্তু এটাও শোনা যায় মেক্সিকো প্রশাসন নাকি এখন ওই এলাকাটিকে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’ মুক্ত করার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম