গাজার মতো সুড়ঙ্গে ছেয়ে যাচ্ছে পাতাল ? হিমবাহের ভেতর-সাগরের নীচে ভয়ানক চক্রব্যূহ, গায়ে কাঁটা দেবে

।। প্রথম কলকাতা ।।

গাজার মতো সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক? জানেন?  মহাসাগরের নীচে-হিমবাহের ভেতর; মাকড়সার জালের মতো গিজগিজ করছে সুড়ঙ্গ। বিশ্বজুড়ে এতো এতো টানেল তৈরির হুজুগ কীসের? সুড়ঙ্গের ভেতর এক অন্য জগৎ! কী ঘটে সেখানে?রাজপ্রাসাদ থেকে আস্ত শহর, পৃথিবীর বাইরের হিসেব চলে বিশ্বের দীর্ঘতম এই ৫ সুড়ঙ্গের ভেতর?না দেখলে আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না!পুরোটা শুনলে জানলে আপনার গায়ে কাঁটা দেবে।সুড়ঙ্গের ভেতর বেড়ে যাচ্ছে গোপন কানেকশন। মাটির তলায় ভরসা বাড়ছে গোটা বিশ্বের। মহাসাগরের নিচে, হিমবাহের ভেতর, নদী বা সমুদ্রের তলায়, কিংবা মাটি খুঁড়ে তৈরি করা সুড়ঙ্গের ম্যাগনেটিক পাওয়ার মানুষকে দিনে দিনে আরও বেশি আকর্ষণ করছে। বিশ্বজুড়ে অসংখ্য টানেল, আপনার হিসেবের বাইরে। যেমন সাগরের নীচে জাপানের সেইকান টানেল। কী ঘটে চলেছে এর ভেতর?

সেইকান বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। জাপানের সুগারু প্রণালির মধ্য দিয়ে গেছে সেইকান ডুয়েল গেজ রেলপথ। ১৯৮৮ সালে চালু হওয়া সেইকান টানেল ৫৩.৮ কিলোমিটার লম্বা, সাগরের তলদেশে যার দৈর্ঘ্য ২৩.৩ কিলোমিটার। যা জাপানের হনসু দ্বীপকে হোক্কাইডোর সঙ্গে যুক্তকরেছে। বর্তমানে এই টানেল দিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হয়। টোকিও থেকে সারোপ্পো পর্যন্ত যে বুলেট ট্রেন, সেটাও এই টানেলের ভেতর দিয়েই ছুটে চলেছে। সাগরের ভেতর দিয়ে চলে গেছে আরও এক টানেল। সমুদ্রের নীচে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম রেললাইন, চ্যানেল সুড়ঙ্গ। যুক্তরাজ্যের ফোকস্টোন শহরকে ফ্রান্সের ক্লেঁ শহরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এই সুড়ঙ্গ। ৫০.৪ কিলোমিটার টানেলের ৩৭.৯ কিলোমিটার রয়েছে সাগরের তলায়। ৬ বছর ধরে নির্মাণের পর ১৯৯৪ সালে এই সুড়ঙ্গের উদ্বোধন করা হয়। এর জেরে বর্তমানে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রীরা প্যারিস ও লন্ডনের মধ্যে যাতায়াত করতে পারেন। লিস্টে আছে আরেকটা টানেল। এটাও সাগরের তলদেশে অবস্থিত।

জাপানের কিসারাজু ও কাওয়াসাকি শহরকে সংযুক্ত করেছে টোকিও বে অ্যাকুয়া-লাইন সুড়ঙ্গ। জাপান উপসাগরের তলদেশে তৈরি টানেলটি ট্রান্স টোকিও বে এক্সপ্রেসওয়ে নামেও পরিচিত। সব মিলিয়ে ২৩.৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এক্সপ্রেসওয়েটির ৯.৬ কিলোমিটার ছুঁয়েছে সাগরের তলদেশ। ১৯৯৭ সাল থেকে যান চলাচল করছে এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে। নাম শুনে থাকতে পারেন বমলাফেয়ার্ড টানেল। এর ও ৭.৮২ কিলোমিটার লম্বা বমলাফিয়র্ড টানেল নরওয়ের ফয়নো দ্বীপকে স্থলভাগের দালসভদা এলাকার সঙ্গে যুক্ত করছে। তিন লেনের টানেলটি ২০০০ সালে গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল।আর আইকস্যান্ড বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ২০০টির মতো ডুবো টানেল রয়েছে। তার মধ্যে আইকস্যন্ড একটা। ২০০৮ সালে চালু হওয়া টানেলটিও নরওয়েতে আছে। ৭.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ আইকস্যান্ড সুড়ঙ্গ নরওয়ের মূল অংশের সঙ্গে এইকা দ্বীপকে যুক্ত করেছে। না, এখানেই শেষ নয়। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে একাধিক সুড়ঙ্গ।

তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর সুরঙ্গ গুলোর মধ্যে রয়েছে। সুইজারল্যান্ড গথার্ড বেজ টানেল। আল্পস পর্বতমালার ভেতর দিয়ে নির্মিত ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেলটি বিশ্বের দীর্ঘতম ও গভীরতম রেল সুড়ঙ্গ। এছাড়াও রয়েছে ভিয়েতনামের কু চি টানেল‌। ১৯৬০ ও ১৯৭০ এর দশকে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভিয়েতনামিদের বিভিন্ন অবস্থানে আক্রমণের জন্য এবং গোলাবারুদ সংরক্ষণের জন্য এই টানেলটিকে ব্যবাহার করা হয়। জানা যায়, ৭৫ মাইল দীর্ঘ এই বিশাল টানেল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করার জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীর বারবার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এটাকে ধ্বংস করা যায়নি। বর্তমানে ভিয়েতনাম সরকার এটিকে স্মৃতিসৌধ হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণ করছে। তবে একটা জিনিস পরিষ্কার, বহু বছর আগে থেকেই মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে কখনো মাটির নীচে কখনো সমুদ্রের তলায় আবার কখনো বরফ কেটে সুরঙ্গ তৈরি করেছে বিভিন্ন প্রয়োজনে। আর দিনে দিনে সুড়ঙ্গের ওপর গোটা পৃথিবীর সেই ভরসা বাড়ছে বই কমছে না।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version