।। প্রথম কলকাতা ।।
Gourd cultivation: সারা বছরের প্রয়োজনের সবজি লাউ। বছরভর তার চাহিদা। আধুনিক পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে বিশেষ লাভবান হওয়া যায়। চারা রোপণের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে প্রথম ফল তোলা যায়। লাউ প্রধানত শীত মরশুমের সবজি। শীতকালে ফলন বেশি মেলে। এটি উচ্চতাপ ও অতিবৃষ্টি সহিষ্ণু। ফলে সারা বছরও চাষ করা যায়।
জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ এঁটেল দো-আঁশ মাটি লাউ চাষের জন্য উত্তম।বেশি শীতও না আবার বেশি গরমও না এমন আবহাওয়া লাউ চাষের জন্য উত্তম। লাউ গাছের জীবনকাল গড়ে ১৬৫-১৮৫ দিন।
আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। তবে অক্টোবরের শেষ দিকে বীজ বোনা ভালো। বিঘাপ্রতি ৭০০-৮০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয় বীজবাহিত রোগ প্রতিরোধ এবং সবল সতেজ চারা উৎপাদনের জন্য বীজ শোধন জরুরি।
লাউ চাষের জন্য নার্সারিতে পলিব্যাগে চারা উৎপাদন করে নিতে হবে। বীজ বোনার জন্য ৮x ১০ সেমি. বা তার থেকে কিছুটা বড় আকারের পলিব্যাগ ব্যবহার করা যায়। প্রথমে অর্থেক মাটি ও অর্ধেক গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। মাটিতে বীজ গজানোর জন্য জো নিশ্চিত করে তা পলিব্যাগে ভরতে হবে। এরপর প্রতি ব্যাগে দুটি করে বীজ বুনতে হবে। বীজের আকারের দ্বিগুণ মাটির গভীরে বীজ পুঁতে দিতে হবে।
বেশি শীতে বীজ গজানোর সমস্যা হয়। এজন্য শীতকালে চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ গজানোর আগে পর্যন্ত প্রতি রাতে প্লাস্টিক দিয়ে পলিব্যাগ ঢেকে রাখতে হবে এবং দিনে খোলা রাখতে হবে। চারায় প্রয়োজন অনুসারে জল দিতে হবে তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে চারার গায়ে জল না পড়ে। পলিব্যাগ এর মাটি চটা বাঁধলে তা ভেঙে দিতে হবে। লাউয়ের বীজের খোসা কিছুটা শক্ত। তাই সহজ অংকুরোদগমের জন্য শুধু পরিষ্কার জলে ১৫-২০ ঘণ্টা অথবা শতকরা ১% পটাশিয়াম (potassium) নাইট্রেট দ্রবণে এক রাত ভিজিয়ে পলিব্যাগে বুনতে হবে।
লাউ চাষে সেচ ও নিকাশের সুবিধাযুক্ত এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায় এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। ব্যাপক শিকড় বৃদ্ধির জন্য জমি এবং গর্ত ভালোভাবে তৈরি করতে হবে।
লাউগাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে এবং অনেক লম্বা সময় ধরে ফল দিয়ে থাকে। তাই গাছের জন্য পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে। পর্যাপ্ত খাবার (Food)সংগ্রহের জন্য গাছ অনেক দূর পর্যন্ত শেকড় বিস্তৃত করে। তাই জমি তৈরির জন্য পর্যাপ্ত গোবর সার, ডিএপি, জিপসাম ও বোরক্স সার প্রয়োগ করতে হবে।
বীজ গজানোর পর ১৬-১৭ দিন বয়সের চারা মাঠে লাগানোর জন্য উপযুক্ত। চারাগুলো বসানোর আগের দিন বিকালে জল (Water) দিয়ে ভালোবাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। পরের দিন বিকালে চারা বসাতে হবে। চারা লাগানোর পর গর্তে জল দিতে হবে।
লাউ জলের প্রতি খুবই সংবেদনশীল। প্রয়োজনীয় জলের অভার হলে ফল ধারণ ব্যাহত হয় এবং ফল আস্তে আস্তে ঝরে যায়। কাজেই সেচনালা দিয়ে প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। লাউয়ের জমিতে কখনো সব জমি ভিজিয়ে সেচ দেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র সেচ নালায় জল দিয়ে আটকে রাখলে গাছ জল টেনে নেবে। লাউয়ের কাঙ্খিত ফলন পেতে হলে অবশ্যই মাচায় চাষ করতে হবে। লাউ মাটিতে চাষ করলে ফলের একদিক বিবর্ণ হয়ে বাজারমূল্য কমে যায়। পচনও ধরে এবং প্রাকৃতিক পরাগায়ন কমে যায়। ফলে ফলনও কমে যায়। এই পদ্ধতি মেনে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম