Point Nemo: মহাকাশযানের কবরস্থান পয়েন্ট নিমো পৃথিবীর সবচেয়ে নির্জন জায়গা! যা হয় শুনলে চমকাবেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

Point Nemo: এই জায়গাটা মহাকাশযানের শ্মশান। একদম শুনশান। এটা পৃথিবীর সবথেকে নির্জন এবং রহস্যময় জায়গা। জায়গাটা আবিষ্কার হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখানে কেউ যেতে পারে না। অদ্ভুত রোমাঞ্চে মোড়া। নাম পয়েন্ট নিমো। পৃথিবীতে থেকেও যেন পৃথিবী থেকে একদম আলাদা। চলে নিজের নিয়মে, এখানে নেই কোন সংবিধান। চলুন আজ এখান থেকে আপনাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

একদম প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে, যেন দুর্গম মেরু। চাইলেই আপনি এখানে যেতে পারবেন না। অবস্থিত ইস্টার দ্বীপের দক্ষিনে আর আন্টার্কটিকার উত্তরে। পয়েন্ট নিমো থেকে আপনি যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই শুধু চোখে পড়বে সমুদ্রে ঘেরা জলরাশি। গোরস্থান, কবরস্থান নামগুলো শুনলেই আমাদের গা টা কেমন একটা ছমছমে ভাব আসে না? তেমনি, এটাই নাকি উপগ্রহের কবরস্থান। যে সমস্ত স্যাটেলাইট গুলো আর কাজ করে না, মহাকাশে অকেজো, তাদেরকে ঠিক এই জায়গায় নিয়ে এসে সমাধি করা হয়। জায়গাটা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার নিচে। এখানে মানুষ পৌঁছাতেই তো অনেকটা দিন সময় লেগে যাবে। কয়েকটা ছোট ছোট দ্বীপ আছে বটে, কিন্তু দু একটা পাখি ছাড়া অন্য কোন প্রাণী বসবাস করতেই পারে না। পরিকল্পনা রয়েছে, যখন ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন কাজ করবে না তখন সেটিকেও সমাধি করা হবে এখানে। জায়গাটার গড় গভীরতা প্রায় ৪ হাজার মিটারেরও বেশি। এতটাই গভীরতা যেখানে সবচেয়ে বড় জাহাজও চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। ১৯৭০ এর দশকে প্রায় ৩০০ টিরও বেশি খারাপ হয়ে যাওয়া স্যাটেলাইট এখানে রেখে দেওয়া হয়েছে।

সোজা কোথায়, মহাকাশযানের শ্মশান মহাকাশে নয়, বরং রয়েছে আমাদের পৃথিবীতে। একদম গভীর সমুদ্রে। আশ্চর্যের ব্যাপার, এটি কোন দেশের অংশ নয়। যার কারণে এখানে কোন আইনও প্রচলিত নেই। সবচেয়ে কাছের দ্বীপপুঞ্জটা হল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ডুকি দ্বীপপুঞ্জ। পয়েন্ট নিমো থেকে এর দূরত্ব প্রায় দুই হাজার সাতশ চার কিলোমিটার। নৌকায় করে নিকটবর্তী জনবসতি থেকে যাওয়া যায়, কিন্তু দু সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে। বিমানে করে যাওয়ার তো কোনো প্রশ্নই আসে না। সমুদ্রের প্রায় ১৬০১ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে শুধু পড়ে রয়েছে মহাকাশযানের অবশিষ্ট অংশ, যার অধিকাংশটাই টাইটেনিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম আর স্টিল। এছাড়াও রয়েছে কিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ। আর হ্যাঁ, ওই যে বললাম, এখানে সেভাবে প্রাণী লক্ষ্য করা যায় না। তার কারণ একটাই। জলের মধ্যে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ। যার কারণে এখানে সামুদ্রিক প্রাণী বাঁচতে পারে না। পয়েন্ট নিমো থেকে আসে হালকা কম্পনের আওয়াজ, যা মূলত তৈরি হয় হিমবাহের চলনের ফলে। ল্যাটিন ভাষায় এই নিমো কথার অর্থ ‘কেউ নয়’, আসলে এখানে কোন প্রাণীর অস্তিত্ব নেই বলেই এমন নামকরণ। কিন্তু সমুদ্রে আগ্নেয়গিরির ফলে যে সমস্ত ফাটল তৈরি হয়, সেখানে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি টের পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

https://www.facebook.com/100069378195160/posts/719366227052644/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz

প্রসঙ্গত বলে রাখি, জাপান পরিবেশ বান্ধব স্যাটেলাইট আনার জন্য ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা করে ফেলেছে। কারণ মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিশ্বের অধিকাংশ দেশই স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে। যার কারণে বাড়ছে ধ্বংসাবশেষের অংশ। প্রতিনিয়ত এভাবে স্যাটেলাইট পাঠানো হলে সেগুলো যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সঠিকভাবে পুনর্ব্যবহার করা হয় না। এই ধ্বংসাবশেষ কিন্তু ভবিষ্যতে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন নাসাও। তাই বেশ কিছু দেশ একত্রিত হয়ে একটা চুক্তি করেছে। যার মূল লক্ষ্য অকেজো বস্তুগুলোকে একত্রিত করা। আর এই কাজের ফলাফল পয়েন্ট নিমো। তাই এখানেই নিক্ষেপ করা হয় বাতিল হয়ে যাওয়া স্যাটেলাইট।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version