South China Sea: চিন সাগরে লুকিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ, ক্রমাগত উস্কানি চিনের! অপেক্ষায় ভয়ঙ্কর পরিণতি

।। প্রথম কলকাতা ।।

South China Sea: চিন সাগর নিয়ে চিনের (China) যেন মাথা ব্যাথার শেষ নেই। বারংবার দক্ষিণ চিন সাগরকে (South China Sea) কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। যার মূল কেন্দ্রে রয়েছে চিন। দক্ষিণ চিন সাগরের অধিকাংশ অংশ ড্রাগনের দেশ নিজের বলে দাবি করে। এই সাগরকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্বজুড়ে বাঁধতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ (Third World War)। গোটা বিশ্বজুড়ে শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে চিন সাগরকে নিয়ে উত্তেজনাময় পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। যেখানে মাঝে মাঝে উস্কানি দেয় চিনের গতিধারা।

চিনের দাবি অবৈধ!

২০২০ সালে আমেরিকার তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি বলে দিয়েছিলেন, দক্ষিণ চিন সাগরের যেসব অঞ্চল চিন নিজের বলে দাবি করছে, সেই দাবি একেবারেই অবৈধ। আসলে দক্ষিণ চিন সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক নৌ চলাচল পথ। কিন্তু বেশ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সাগরের বুকে অসংখ্য দ্বীপে রাজত্ব চালাচ্ছে চিন। যার মধ্যে কিছু রয়েছে প্রবাল দ্বীপ ও প্রবাল প্রাচীর রয়েছে। চিন মাঝেমধ্যেই এই প্রবাল দ্বীপ, প্রবাল প্রাচীর এবং দ্বীপগুলোর সম্পদের মালিকানা দাবি করে। যার কারণে তৈরি হয় বিতর্ক। চিন যতবার চিন সাগরে তার মালিকানার দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে, ততবারই গোটা বিশ্বজুড়ে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। চিন সামরিক উপস্থিতি আরো জোরদার করার চেষ্টা করছে, যা মানতে পারছে না আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশগুলো। মাঝেমধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীন আর আমেরিকার মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়। কখনোই এই দুই শক্তিধর রাষ্ট্র চিন সাগর নিয়ে এক মতে আসতে পারেনি। যদিও আমেরিকা চিন সাগরে মালিকানা নিয়ে সোচ্চার হয়নি। মূলত ওই অঞ্চলে জাহাজ চলাচলের স্বাধীনতার দাবি করে এসেছে।

এই সাগর নিয়ে চিনের এত লাফালাফি কেন ?

দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে চিনের এত লাফালাফি করার বেশ কয়েকটি কারণ আছে। আসলে এই সাগরের সমুদ্র এলাকার গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশকে নিজের বলে মনে করে চিন। চিনের বিশাল বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রকল্প, বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে সিল্ক রোডে ক্ষেত্রে সামুদ্রিক পথ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে দক্ষিণ চিন সাগর। চিনের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে এই সাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই চিন সেই ২০১২ সাল থেকে সাগরের দ্বীপগুলোতে বসতি আর উন্নয়ন করার কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে আমেরিকা চায় সমুদ্র পথের স্বাধীনতা। আমেরিকা চাইলেই চিন সাগরের উপর চিন যে অঞ্চল গুলোকে নিজের বলে দাবি করে নানান কাজকর্ম চালাচ্ছে তা নিমেষে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু সেটা করা মানেই চিনের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের জড়িয়ে পড়া।

প্রায় ১৪ লক্ষ বর্গমাইল আয়তনের এই সাগরে প্রচুর শাখা নদী এসে মিশেছে। লোকমুখে শোনা যায়, প্রায় সাড়ে চার কোটি বছর পূর্বে ভূমির মধ্যকার এক বিশাল ফাটলের মাধ্যমে এই বৃহৎ সাগরের উৎপত্তি হয়। ১৫০০ শতাব্দীর থেকে চম্পা সাম্রাজ্যের নাম অনুসারে এই সাগরকে বলা হত চম্পা সাগর বা চামের সাগর। বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ প্রবাল পাওয়া যায় দক্ষিণ চিন সাগরে। এছাড়াও বিশ্বের সামুদ্রিক মাছের প্রায় ১০ শতাংশের যোগান দেয় এই সাগর, যা দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।

শুধু চিনের নয়, সম্পত্তি ৭ দেশের!

চিনের দক্ষিণ উপকূল ভেসে থাকা এই সাগর নিয়ে মাঝেমধ্যেই মাথাচাড়া দেয় নানান বিতর্ক। আন্তর্জাতিক রাজনীতি মাঝে মাঝে উত্তাল হয় এই সাগরকে কেন্দ্র করে। দক্ষিণ চিন সাগরে চিন শব্দ থাকলেও চিনের সম্পূর্ণ অধিকার নেই। চিন সাগরকে ঘিরে রয়েছে সাতটি দেশ। পশ্চিমে রয়েছে ভিয়েতনাম, পূর্ব দিকে ফিলিপিন্স দ্বীপপুঞ্জ, উত্তর-দক্ষিণে চীন এবং তাইওয়ান, দক্ষিণে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া আর ব্রুনেই । সাত দেশ ছাড়াও এই সাগরকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা, জাপান, থাইল্যান্ড এবং ভারতও। বাণিজ্যিক মুনাফার দিক থেকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কাছে অমূল্য সম্পদ এই সাগর। এর নিচেই রয়েছে খনিজ তেলের বিপুল ভাণ্ডার। বলা হয় প্রাকৃতিক গ্যাস রয়েছে প্রায় ২৬৬ লক্ষ কোটি ঘন ফুট। সেই জায়গায় দাঁড়িয়েছি দক্ষিণ চিন সাগরকে নিজের বলে দাবি করে চিন। অন্যান্য দেশের যে অংশ রয়েছে তা মানতেই চায় না। একবার যদি আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশ চিনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় কিংবা চিনের এই আগ্রাসনকে ধ্বংস করতে চায় তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version