পোশাক খাতে বাংলাদেশের একচেটিয়া আধিপত্য, টক্কর দিচ্ছে চীনকে! কোন সিক্রেটে এত উন্নতি?

।। প্রথম কলকাতা ।।

বিশ্বে পোশাক খাতে একচেটিয়া আধিপত্য চালাচ্ছে বাংলাদেশ। এক চুলও জায়গা ছাড়বে না। এশিয়ার ছোট্ট দেশ বিশ্ববাজারে নিজের জায়গা ধরে রেখেছে কীভাবে? টক্কর দিচ্ছে চীনের সাথে, পেরে উঠছে না ভিয়েতনাম, ভারত, আমেরিকার মতো দেশ। সিক্রেটা কী? কোন জাদুতে বাংলাদেশের পোশাক বিশ্ব বিখ্যাত? শুনুন তবে, জানলে কিছুটা হতবাক হবেন।

গোটা বিশ্ব বাংলাদেশের পোশাক এক ডাকে চেনে। কম্পিটিশন করছে চীনের মতো শক্তিশালী দেশের সঙ্গে। পিছনে রয়েছে ভিয়েতনাম। ভারতও পোশাকশিল্পে বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে। যদি বলা হয়, বাংলাদেশের এই উন্নতির আসল সিক্রেটটা কি? তাহলে অনেক গুলো প্রসঙ্গ চলে আসবে। বিশ্বের শীর্ষ ৫ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীন, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, তুরস্ক এবং ভারত। পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে, প্রথমে রয়েছে চীন। তবে চীনের জায়গায়ও বাংলাদেশ কোনো দিন নিয়ে নিতে পারে। বাড়িয়ে বলা নয়। ২০২১ সালে পোশাক মার্কেটে, বাংলাদেশের দখল ছিল ৬.৩৭ শতাংশ। ২০২২ এ তা এক ধাক্কায় বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৮৭ শতাংশ। ২০২২ সালে বিশ্বে মোট পোশাক বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৫৭৬ বিলিয়ন ডলার। যার বিশাল মার্কেট দখল করে রেখেছে চীন। হিসাব অনুযায়ী মোট বাজারের প্রায় ৩১ শতাংশের বেশি দখল করেছে চীন। কিন্তু ২০২১ এর তুলনায় চীনের মার্কেটে শেয়ার কিন্তু কমছে। অপরদিকে তুলনামূলকভাবে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে বাংলাদেশের। ২০২২ সালে দেশটা পোশাক রপ্তানি করেছে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ৩২.৬০। প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অর্জন কিন্তু বাংলাদেশের ঝুলিতে। বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশ এখন টাফেস্ট কম্পিটিশনে।

প্রশ্নটা এখানেই, বাংলাদেশের মতো ছোট্ট একটা দেশ কিভাবে এই প্রতিপত্তি ধরে রেখেছে? এর মূলে রয়েছে দেশটার নীতি সহায়তা। দেশটাতে যাই ঘটে যাক না কেন তার আঁচ পড়েনি পোশাক রপ্তানিতে করোনাকালীন অবস্থায় দেশটার সরকার পোশাক শিল্পে ক্ষতি মোকাবিলায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। আর একটা সিক্রেট ফ্যাক্ট রয়েছে। আসলে বাংলাদেশ এই শিল্প গড়ে তুলেছে নিজেদের ভরসায়। শিল্পের প্রয়োজনীয় পণ্য খুব কম আমদানি করে। মাত্র ১৫ বছর আগেও কিন্তু স্থানীয় উৎপাদকরা চীন হংকং থেকে বোতাম কিনে আনত। কিন্তু একজন পোশাক শিল্পের আনুষঙ্গিক পণ্য দেশটা নিজেই তৈরি করে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম কম্বোডিয়ায় চলে যাচ্ছে এই সমস্ত জিনিস। যার পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকারও বেশি। আসলে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে ১৯৯০ সালের পর থেকে। যখন স্থানীয় উৎপাদকরা ছোট ছোট পণ্যের কারখানা তৈরি করতে শুরু করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ খেয়াল রেখেছে ক্রেতাদের চাহিদার দিকে। উদ্যোক্তারা গত ১৫ বছরে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। উন্নত হয়েছে পোশাকের আনুষাঙ্গিক পণ্যসহ প্যাকেজিং শিল্পের খাত। তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। সাশ্রয় হয়েছে বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিদেশী মুদ্রা। পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে মজবুত হয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। দেশটার অর্থনীতির অন্যতম মেরুদন্ড এই পোশাক শিল্প।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version