Indonesia earthquake: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬৮, ভূমিকম্পের পরবর্তী ধাক্কার সঙ্গে লড়ছে উদ্ধারকারী দল

।। প্রথম কলকাতা ।।

Indonesia earthquake: সোমবার ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। শিশু সহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৮-তে। ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৫.৬। এই কম্পনের উৎপত্তিস্থল ছিল পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর শহরের ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার নিচে। এই বিপর্যয়ের সময়ে ইন্দোনেশিয়ার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে।

পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল বিবিসিকে জানিয়েছেন, সোমবারের ভূমিকম্পের পর থেকে এই অঞ্চল‌ প্রায় ছোটো-বড় মিলিয়ে ১৪০টি ধাক্কা খেয়েছে। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ প্রায় ১৫১ জন, আহত হাজারেরও বেশি। কিন্তু ক্রমাগত কম্পনের জেরে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিবিসি নিউজকে কামিল বলেছেন যে, ‘কম্পনের পরের ধাক্কাগুলি কিছু ক্ষেত্রে উদ্ধারকারীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। বর্তমানে আমরা অনুসন্ধান এবং উদ্ধারে ফোকাস করার জন্য কো-অর্ডিনেট করছি। এখনও অনেক লোক নিখোঁজ রয়েছে। বেশিরভাগই দুর্গম এলাকায় এবং পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে’। যেখানে রাস্তা দুর্গম সেখানে, উদ্ধারকারী দলগুলি পায়ে হেঁটে অথবা মোটরবাইকে করে যাচ্ছে উদ্ধারে। তবে লোকেদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের কাছে হেলিকপ্টার রয়েছে স্ট্যান্ডবাইতে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন খুঁজছেন।

ভূমিকম্পটির আঘাতের কেন্দ্র ছিল ঘনবসতিপূর্ণ সিয়ানজুরের কাছে, যার ফলে বাড়ি-ঘর সহ সমস্তকিছু ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দেওয়াল ও ছাদ ধসে পড়লে অনেক লোক আটকা পড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। এলাকার প্রায় ৮০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সি থেকে হেনরি আলফিয়ান্দি বলেছেন, ‘হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু। কারণ দুপুরের সেই সময় সকল বাচ্চারাই স্কুলে ছিল। ভূমিকম্পের সময় এপ্রিজাল মুলিয়াদি স্কুলে ছিলেন এবং স্কুল রুমটি ধসে পড়লে আটকা পড়ে গিয়েছিলেন। ১৪ বছর বয়সী জানিয়েছে, পা ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁর বন্ধু জুলফিকার নিরাপদে তাঁকে টেনে নিয়ে আসে। যে আবার পরে নিজে আটকা পড়ে মারা যায়।

গভর্নর বলেছেন, এলাকার চারপাশে কয়েক ডজন শরণার্থী শিবির খুলে অন্তত ৫৮ হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সির উদ্ধৃতি দিয়েছেন। যার অনুমান অনুযায়ী, ২২ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে আবার ভূমিধস হয়, যার দরুণ পুরো গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি জোকো উইডোডো দুর্গম অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে পড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সরিয়ে নিয়ে আসার দিকে আগে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি সম্প্রদায়কে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। মিঃ কামিল বলেছেন যে, সরকার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি মেরামত করবে। সেইসঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী বাসিন্দাদের সেখানে ভবিষ্যতে বাড়ি তৈরি করতে না বলা হবে। এমনিতেই দেশটিতে কম্পন, সুনামির ইতিহাস রয়েছে। ২০১৮-তে সুলাওয়েসি দ্বীপে ভূমিকম্পে দুই হাজার জনেরও বেশী লোক নিহত হয়েছিল। এদিকে এই মুহূর্তে উদ্ধারকারীরা ভূমিকম্পের পরের কম্পনের সঙ্গে লড়াই জারি রেখেছে, কারণ উদ্ধারকার্য এখনও চলছে।

এর আগে ২০২১-এ শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়াকে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। বন্যায় সেখানকার দক্ষিণ কালিমন্টানে অন্ততপক্ষে ১৫ জন এবং নর্থ সুলাওয়েসিতে ৫ জন মারা গিয়েছেন। সেইসঙ্গে পশ্চিম জাভায় ভূমিধসে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৩২ জন। ২০০৪-এ সুমাত্রা উপকূলে ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প ও পরে সুনামিতে এই অঞ্চলজুড়ে ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় মারা যায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের মতো ঘটনা ঘটে থাকে ইন্দোনেশিয়ায়।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version