Aral Sea: আরাল সাগর শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে গেল! কী ঘটছে পৃথিবীতে?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Aral sea: বিস্তীর্ণ জলাভূমি অথচ একসময় এখানেই থৈ থৈ করত জল। ছিল প্রাণের প্রাচুর্য। হঠাৎ করেই যেন কোন অভিশাপে গায়েব আস্ত একটা সাগর। মাত্র ২ দশক আগেও এখানে খেলতো জলের ঢেউ। কিন্তু সেসব যেন চোখের নিমেষে উধাও। বেরিয়ে পড়েছে খটখটে বিস্তীর্ণ মরুভূমি। ভাবছেন টা কি? গল্প বলছি! সাগর আবার কিভাবে শুকাবে? না এমনটাই হয়েছে বাস্তবে। শুকিয়ে গিয়েছে উজবেকিস্তানের আরাল সাগর। জল নেই, তাই এই সাগরে আর জলযান চলাচল করে না। মরচে পড়েছে মাস্তুলে। বন্দরে পড়ে রয়েছে অচল যান। চারিদিকে এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার।

চারিদিকে এখন শুধুই যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। অথচ একসময় এলাকাটা গমগম করত। জেলে থেকে মাঝি মাল্লা আর নাবিকদের হাঁক ডাকে সে এলাহি ব্যাপার। এখন মরুভূমির মধ্যে দিয়ে হাঁটলে মাঝে মাঝে চোখে পড়বে দু-একটা ভাঙা জাহাজ। বোঝাই যাবে, এখানে একটা সময় বন্দর ছিল। বলা হয় এটাই নাকি ২১ শতকের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ভাবলে আশ্চর্য লাগে, উজবেকিস্তানের আরাল সাগর বিশ্বের চতুর্থতম বৃহত্তম হ্রদ ছিল। নামের সাথে সাগর শব্দ জুড়লেও এটি মূলত হ্রদ। বিশালতার কারণে আরবদের কাছে আগাগোড়া এটা পরিচিত ছিল সাগর হিসেবে। প্রায় ৬৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ছিল এর রাজত্ব। নৌ পথে দিব্যি চলে যাওয়া যেত কাজাখস্তান পর্যন্ত। আরাল সাগর শুকিয়ে যাওয়ার পিছনে অনেকে দায়ী করেন সোভিয়েত রাশিয়াকে। চাষবাসের জন্য প্রচুর খাল খেটে ব্যবহার করা হতো হ্রদের জল। পুরোটাই অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। যার কারণে ধীরে ধীরে জলরাশি কমতে থাকে। তার উপর তো বিশ্ব উষ্ণায়নের এফেক্ট রয়েছে। ১৯৯৭ তে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছিলে যে হ্রদের প্রায় ১০% শুকিয়ে গেছে। তখন কেউ কানে দেয়নি বিষয়টা। দেখতে দেখতে তার মাত্র ১৩ বছরের মধ্যেই পুরো শুকিয়ে যায় কয়েক হাজার কিউবিক জল। এখন প্রচন্ড জলকষ্টে ভুগছেন উজবেকিস্তানের মানুষ। জল শুকিয়ে যাওয়ায় বেরিয়ে এসেছে নুনের চাদর।

এটা কিন্তু একেবারেই সাধারণ ঘটনা নয়, হালকা ভাবে নেবেন না। ধরে নিন পরিবেশে ধ্বংস হচ্ছে। তার জ্বলন্ত উদাহরণ এটা। যে সাগরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল জনজীবন, এখন সেটাই পৃথিবীর চোখের আড়ালে চলে গিয়েছে। শুধুমাত্র রেখে গিয়েছে একটা নির্জন ল্যান্ডস্কেপ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে, যে এই জলের উৎসকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব। প্রকৃতি এখানে মত্ত ও প্রতিশোধের নেশায়।

তবে চেষ্টা যে চলছে না একেবারেই নয়। ভবিষ্যতে যাতে আরাল সাগর তার জীবন যৌবন ফিরে পায়, তার পরিকল্পনা করছে উজবেকিস্তান। পাশে দাঁড়িয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, নরওয়ে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। স্থানীয় জেলেরা স্বপ্ন দেখছেন, আবার এখানে জাল ফেলে ধরা হবে কেজি কেজি মাছ। সাগর পাড়ে চাষ হবে তরমুজ গম। সেই আশাতেই বিভোর তারা।

https://www.facebook.com/100069378195160/posts/707564351566165/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version