।। প্রথম কলকাতা ।।
Antarctica: আন্টার্কটিকায় ঝরছে রক্তের ঝর্ণা। বরফের মহাদেশে থরে থরে সাজানো খাজানা। আছে তাল তাল সোনা। কিন্তু ছুঁয়ে দেখার সাহস কারোর নেই। রাজত্ব চালায় ভয়ঙ্কর আক্রমণাত্মক প্রাণী। জানলে গায়ে কাঁটা দেবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, আন্টার্কটিকা এত ভয়াবহ কেন? এখানে কারা থাকে? কেনই বা রহস্যের পাহাড় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে? এখানে যা আছে, জানলে চমকে যাবেন।
আন্টার্কটিকা এমন একটা মহাদেশ, যেখানে না আছে কোন দেশ, না আছে কোন সরকার। এই মহাদেশ চলে নিজের মর্জিতে। শাসন করার কেউ নেই। ভাঁড়ারে জমা আছে কাঁড়ি কাঁড়ি কয়লা, তেল, গ্যাস, নিকেল, সোনা। হাত দিতে গেলেই রুখে দাঁড়াবে ভয়ঙ্কর প্রকৃতি। পৃথিবীর সবথেকে ঠান্ডা মহাদেশ। তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে প্রায় -৮৯° সেলসিয়াসে। ৩০০ কিলোমিটার বেগে বয় বরফের ঝড়। এটা পৃথিবীর সবথেকে শুষ্কতম এবং দক্ষিণতম মহাদেশ। বৃষ্টি ঝরে পড়ার আগেই হয়ে যায় বরফ। কিন্তু বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ স্বাদু জলের রিজার্ভ আছে এখানেই।
সারা বছরই ঢাকা থাকে প্রায় ২ কিমি পুরু বরফে। সাদা মহাদেশকে ঘিরে রেখেছে বহু সাগর উপসাগর হিমবাহ। এখানেই আছে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। যুগ যুগ ধরে এখানে টেলর হিমাবাহ থেকে বইছে রক্তের ঝর্ণা। ফেরিক হাইড্রোক্সাইডকে দায়ী করা হলেও, কোনো পোক্ত কারণ পাওয়া যায়নি। পুরু বরফের নিচে আছে বিশাল পর্বতমালা। এখানে সূর্যের তেজও ম্লান। মাঝে মাঝে আকাশ জুড়ে থাকে সবুজ নীল লাল রামধনু রঙের আলোর খেলা। আন্টার্কটিকাকে জানতে রয়েছে প্রায় ৪০টা দেশের ১০০টারও বেশি গবেষণা কেন্দ্র।
এখানে পুরু বরফের নিচে অজানা জগতে ঘোরাফেরা করছে অ্যান্টেনা সহ হেলমেট পরা জাপানের শীল। তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে গবেষকদের কাছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায় আক্রমণাত্মক অ্যাডেলাই পেঙ্গুইন। ১৮ থেকে ২০ ইঞ্চি লম্বা, সাড়ে তিন থেকে ছয় কেজি ওজনের এই পেঙ্গুইন ৭২ কিমি কিলোমিটার বেগে সাঁতার কাটতে পারে। শিকার খুঁজতে চলে যায় প্রায় ১৭৫ মিটার গভীর জলে। এক দলের পেঙ্গুইন যদি অন্য দলে আসতে চায় তাকে একদম সহ্য করে না। দেখতে পাবেন লেপার্ড এর মতো দেখতে শীল। ওজন ৩০০ কেজিরও বেশি। মুখ দেখলে মনে হবে সবসময় হাসছে, কিন্তু খতরনাক শিকারি। এরা বরফের নিচে জলে থাকতেই ভালবাসে। আর আছে সাদা ধবধবে স্নো পেটরেল। দেখতে অদ্ভুত সুন্দর। ওজন পায়রার মতো। কিন্তু ডানা বিশাল বড়, যখন ওড়ে মনে হবে যেন সাদা এরোপ্লেন ভাসছে। আর আছে স্কুয়া, ভীষণ ডেঞ্জারাস পাখি, পেঙ্গুইনদের ছানা থেকে শুরু করে ডিম, ছিনিয়ে নেয়। অন্যান্য প্রাণীর মুখ থেকেও খাবার ছিনিয়ে নিতে এরা ওস্তাদ। বরফ জলে রহস্যজনক ভাবে বাস করে আইস ফিস। দেখতে বরফের মত। গায়ে হিমোগ্লোবিন নেই। এরা যে কিভাবে বেঁচে থাকে তা কেউ জানে না । এখানেই দেখা মিলবে, নীল তিমির, যাদের হৃদয়ের ওজন একটা গাড়ির ওজনের সমান। এরকমই রোমাঞ্চে মোড়া বহু প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল আন্টার্কটিকা।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ৪০ বছর পর আমুল বদলে যাবে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র। আন্টার্কটিকা থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ জলস্রোত আর পাওয়া যাবে না। তাপমাত্রা বাড়বে জলের। বিলুপ্ত হয়ে যাবে সামুদ্রিক প্রাণী। ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলবে পৃথিবীর সকল সাগর-মহাসাগর। তাই গোটা পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখতে আন্টার্কটিকার ভূমিকা অনেক বড়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম