।। প্রথম কলকাতা ।।
Tasrif Khan: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘কুঁড়েঘর’ এর তাশরিফ খান (Tasrif Khan) অসুস্থ। তাঁর মুখ সামান্য বেঁকে গিয়েছে। তিনি আক্রান্ত হয়েছেন ফেসিয়াল প্যারালাইসিসে (Facial paralysis)। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চারিদিকে হৈচৈ পড়ে যায়। অবশেষে তিনি নিজেই ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেন। যেখানে বলতে শোনা যায়, তিনি ফেসিয়াল প্যারালাইসিসে আক্রান্ত, তবে এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যদি সঠিক ভাবে চিকিৎসা হয় তাহলে রোগী ১০০% সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফিজিওথেরাপি। মূলত তাঁর মুখের একপাশ একটু বেঁকে গেছে এবং বাম চোখেও একটু অসুবিধা দেখা দিয়েছে। ঠোঁটও বাঁকা। তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি করছেন এবং ওষুধ খাচ্ছেন। তাঁর গানে মুগ্ধ দুই বাংলা। কুঁড়েঘরের একাধিক গান বাঙালিদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। এর আগে গায়ক জাস্টিন বিবারকেও দেখা গিয়েছিল ফেস প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হতে। সেই সময় তিনি সেই মুখের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। যদিও বর্তমানে গায়ক সম্পূর্ণ সুস্থ। তাশরিফের ভক্তরাও আশা করছেন তাদের প্রিয় গায়ক দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ফেসিয়াল প্যারালাইসিস কী?
ফেসিয়াল প্যারালাইসিসকে বলা হয় বেলস পলসি। এক্ষেত্রে মুখের এক পাশের পেশি হঠাৎ করে শক্ত হয়ে অবশ হতে শুরু করে। যার কারণে ভুক্তভোগী ব্যক্তি মুখের এক পাশের অংশ সঠিক ভাবে নাড়তে পারেন না। এমনকি হাসি হাসতে গেলে বা স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে গেলে বেশ অসুবিধা হয়। এই ধরনের প্যারালাইসিসের ঝুঁকি বেশি বাড়ে শীতকালে। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফেসিয়াল প্যারালাইসিসকে ব্রেন স্ট্রোক বলে মনে করেন, তবে ব্রেন স্ট্রোক আর ফেসিয়াল প্যারালাইসিস সম্পূর্ণ আলাদা। ফেসিয়াল প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তার প্রভাব পড়বে আপনার মুখে। প্রতিবছর গড়ে পাঁচ হাজারের মধ্যে মাত্র একজন ফেসিয়াল প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হন। এই রোগে আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। তার জন্য প্রয়োজন যথাযথ চিকিৎসা এবং ফিজিওথেরাপি। অনেকের কয়েক সপ্তাহ লাগে আবার অনেকে সুস্থ হতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগে। এক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক কম। ফেসিয়াল প্যারালাইসিস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৪৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের দেখা গেলেও বর্তমানে কম বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে। এই রোগ থেকে বাঁচতে দীর্ঘক্ষণ ঠান্ডা এড়িয়ে চলতে হবে। মস্তিষ্ক আর মুখের মধ্যে থাকা সংযোগকারী নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তখন মস্তিষ্ক থেকে মুখের পেশীতে সঠিক ভাবে সংকেত প্রেরণ করতে পারে না। যার কারণে ধীরে ধীরে অবশ হতে থাকে মুখের বেশি। ফেসিয়াল প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ রয়েছে, যেমন কানের পিছনে হঠাৎ ব্যথা, চোখে মুখে জ্বালাপোড়া ভাব, মাথার একপাশে হঠাৎ করে ব্যথা শুরু হওয়া, মুখের এক পাশ ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসা এবং তীব্র ব্যথা প্রভৃতি। এই ধরনের উপসর্গগুলি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে।
এই রোগ যে কোন বয়সের নারী ও পুরুষদের হতে পারে, তবে নারীদের এই রোগ বেশি দেখা যায়। সাধারণত ফুসফুসে ইনফেকশন, ডায়াবেটিস, প্রেগনেন্সির সময় কিংবা পরিবারে কেউ যদি আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ফেসিয়াল পলসি বা এই প্যারালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই রোগের অন্যতম কারণ ঠান্ডা, আঘাত এবং মস্তিষ্কে আঘাত, ভাইরাল ইনফেকশন, ফেসিয়াল টিউমার, কানের অপারেশন প্রভৃতি। সাধারণত এগুলির ফলে ফেসিয়াল নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে ফেসিয়াল প্যারালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম