Bangladesh and US Relationship: ভূ-রাজনৈতিক গেম প্ল্যান বদলে দেবে সেন্ট মার্টিন, কতটা রিস্কে বাংলাদেশ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh and US Relationship: যুক্তরাষ্ট্রের নজর কি সত্যি বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিনের দিকে? কিন্তু কেন? হঠাৎ সেন্ট মার্টিন নিয়ে দেশ বিদেশে এত মাথাব্যথা কেন বলুন তো? চাতক পাখির মতো সেন্ট মার্টিনের উপর নজর পড়ার কারণটাই বা কি? এই সেন্ট মার্টিনে কি এমন যকের ধন আছে? ভূ-রাজনৈতিক গেম প্ল্যান বদলে দিতে পারে এই ছোট্ট দ্বীপ। আয়তনের ছোট্ট কিন্তু ক্ষমতা প্রচুর। জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের মর্যাদা। হারিয়ে ফেললে সমূহ বিপদ। এই দ্বীপ নিয়ে কতটা রিস্কে বাংলাদেশ?

নীল জলে ঘিরে থাকা এক মায়াবি দ্বীপ। দ্বীপের মানুষগুলোও বড্ড সহজ সরল। গেলেই পাবেন উষ্ণ আতিথেয়তা। প্রকৃতি মা তার মায়া মমতা দিয়ে দ্বীপকে আগলে রেখেছে। কিন্তু আর কতদিন? অবশেষে এই দ্বীপটা বিশ্ব রাজনীতির তুরুপের তাস হবে না তো? সম্প্রতি সেন্ট মার্টিন নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বেশ বিতর্ক দেখা দিয়েছে। যা দেশটার সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, এই যে বারংবার গুঞ্জন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্র সেন্ট মার্টিন চাইছে, আদৌ কি তা সত্যি?

৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। বহু সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র নাকি সেন্ট মার্টিন দাবি করেছে। যদিও বিষয়টা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে মার্কিন দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ একটা গণতান্ত্রিক দেশ তারা কখনোই সেন্ট মার্টিন চায়নি। বলা হয়, সেন্ট মার্টিন ছিল বলেই আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ মামলায়, বাংলাদেশ বিশাল বড় সমুদ্র অঞ্চল পেয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে প্রায় আটটি দেশ রয়েছে। কিন্তু উত্তর অঞ্চলে রয়েছে তিনটি দেশ। যার মধ্যে একটি মিয়ানমার, বেশির ভাগ অঞ্চল ভারতের আর বাকিটা বাংলাদেশের। এর মধ্যে সেন্ট মার্টিন এমন একটা জায়গায় অবস্থান করছে যেখান থেকে সমুদ্রপথে বিশ্বের যে কোন জায়গায় যাতায়াত অনেক সহজ। উপরন্তু এই দ্বীপ জীববৈচিত্র আর প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার। যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ভীষণ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ভূ-রাজনীতির গুরুত্বের কারণে মায়ানমার বারংবার সেন্ট মার্টিনকে টার্গেট করেছে। কিন্তু সুযোগ পায়নি।

আসলে এশিয়ার ভারসাম্যের কেন্দ্রে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। দক্ষিণ আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করছে বঙ্গোপসাগর। সেক্ষেত্রে যদি হঠাৎ যুদ্ধ বাঁধে তাহলে সেন্ট মার্টিন থেকে সহজেই সব জায়গায় সংযোগ স্থাপন করা যাবে। যদি কখনো যুক্তরাষ্ট্র সেন্ট মার্টিন হাতের মুঠো নিয়ে নেয় তাহলে একসঙ্গে চীন ভারত সহ বহু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যদিও বাংলাদেশ কোনভাবেই সেন্ট মার্টিন হাতছাড়া করবে না। গত কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া কেন্দ্রিক যে তৎপরতা সেখানে কিছুটা হলেও স্বার্থের গন্ধ রয়েছে। কৌশলগত স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরেও ঘাঁটি গড়তে চেয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের শক্তি বৃদ্ধিতে বেশ উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আকসা ও জিসোমিয়া নামের দুটি চুক্তি সই করতে চায়। আকসার (অ্যাকুজিশান অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট) অধীনে মার্কিন বাহিনী খাদ্য, জ্বালানি, গোলাবারুদ ও সরঞ্জামাদি বিনিময় হবে। জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট) চুক্তির অধীনে হবে সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের বিনিময়। বাংলাদেশে খুব ভালোভাবে বুঝে গিয়েছে, এই চুক্তি সই করা মানে দেশটার মাটিতে মার্কিন সেনার সমাবেশ। তাই এই চুক্তি নিয়ে খুব একটা টুঁ শব্দ করে না। এমত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বারংবার এমন মাথাব্যথার কারণে সেন্টমার্টিন নিয়ে যেন একটু বেশি জল ঘোলা হচ্ছে। যদিও এই দ্বীপ নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রের লম্ফঝম্ফ একদম বরদাস্ত করবে না বাংলাদেশ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version