ডুবছে ফিলিপাইন! বাংলাদেশের পরিণতি কী ? চীনের ভয়ঙ্কর ফাঁদে পা, BRI মিথ্যে মোহ

।। প্রথম কলকাতা ।।

ডুবে যাচ্ছে ফিলিপাইন! বাংলাদেশের কী হবে? চীনের ভয়ানক খেলা থেকে একটু একটু করে পর্দা সরছে। সাগরের মাঝে পাঁচিল তোলার পর হাত গুটাচ্ছে বেইজিং। ফিলিপাইনের রেল প্রজেক্টে বিশাল ধস। মীমাংসার সব চেষ্টাই কি তবে ফেল করলো? চীন ফিলিপাইন সম্পর্কে বড় চির। চোখে সর্ষেফুল দেখছে ফিলিপাইন। দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং এর দাদাগিরি সীমা পার করার পর, ফিলিপাইনের রেল প্রজেক্টকে ভাসিয়ে দিল বেইজিং।বাংলাদেশও কিন্তু চীন ইনভেস্ট করছে। এরপর কোনো বিপদ আসছে না তো? ফিলিপাইনের বিপদটা কিভাবে এলো জানেন? ফিলিপাইনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের জন্যই কী এতো বড় বিপদে পড়ে গেল ফিলিপাইন? আসল ঘটনাটা কী?

ফিলিপাইনের ৩ টে চলমান রেল প্রজেক্ট, এখন চীন যেগুলো থেকে হাত তুলে নিচ্ছে, আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। প্রকল্পগুলির মধ্যে প্রথমটি ২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ক্যালাম্বা শহর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দুরে লুজান প্রদেশ পর্যন্ত, দ্বিতীয়টি দক্ষিণ ফিলিপাইনের মিন্দানাও থেকে ১.৪৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ১০০ কিলোমিটারের কমিউটার রেল লাইন, তৃতীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিক সাগরে ৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল লাইনটি। এত এত টাকার প্রজেক্ট তাও আবার চীনের উপর নির্ভর করে। ফিলিপাইনের রেল প্রজেক্টগুলোর ভরাডুবি অবস্থা। এটা কী স্বাভাবিক নয়? হিসেবটা বুঝতে হবে। দুতের্তের চীন-বান্ধব নীতি ছিল সর্বজন বিদিত। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন প্রেসিডেন্ট দুতের্তের ‘বিল্ড বিল্ড বিল্ড’ অবকাঠামো উন্নয়নের অধীনে থাকা এই তিনটি রেল প্রজেক্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের উপর নির্ভর করেই। ফলে প্রজেক্টগুলো নিয়ে বরাবরই বিতর্ক ছিল। আর, এখন পরিস্থিতিটাই অন্য। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দুতের্তের সাথে চীনের সম্পর্ক ভালো থাকলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্কোসের সাথে বেইজিংয়ের সম্পর্কে দূরত্ব আছে। তাহলে কী সেই কারণেই ফিলিপাইনকে প্যাঁচে ফেলতে, বলা ভালো সবক শেখাতে বেইজিং ওই তিনটে রেল প্রজেক্টের উপর থেকে হাত তুলে নিচ্ছে? আর্থিক সাহায্য করা বন্ধ করে দিচ্ছে?

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মার্কোস শাসনের কাছ ষ থেকে রাজনৈতিক পুশব্যাকের প্রত্যাশায় প্রজেক্টগুলোকে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু চীনের এই আশা পূরণ হবে কি? চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রজেক্টে যেসব দেশ সামিল হয়েছে তাদের কাছে শি এর এই ড্রিম প্রজেক্ট ঋণের ফাঁদ ছাড়া আর কিছু না। সমালোচকরাও বলেন, চীন তার ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ প্রজেক্টকে। ভারত চীনকে চেনে। তাই চীনের আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করার বিষয়ে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভেট সদস্য দেশগুলোকে সতর্ক করেছিল ভারত। কিন্তু ভারতের কথা না শুনে এখন যেমন পস্তাচ্ছে ইতালির মতো দেশ, তেমনই ফিলিপাইনকেও ভুগতে হচ্ছে। শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও এই তালিকায় রয়েছে। শুধু রেল প্রজেক্ট নয় দক্ষিণ চীন সাগরে রীতিমতো কোণঠাসা হচ্ছে ফিলিপাইন। মনে করিয়ে দিই কিছুদিন আগেই দক্ষিণসাগরে ভাসমান ব্যারিয়ার বসিয়ে দিয়েছিল বেইজিং। দক্ষিণ চীন সাগরের তীরবর্তী দেশ ফিলিপাইন। অন্যান্য দেশের মতো দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বেইজিং এর সঙ্গে টানা পড়েন রয়েছে এই দেশটারও। আর তাই ভাসমান ব্যারিয়ারের কারণে মাঝ সমুদ্রে মহাবিপদে পড়তে হয় ফিলিপাইন কে।

ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পাশাপাশি দক্ষিণ চীন সাগরে ও নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করতে চায় বেইজিং। প্রায় গোটা জলরাশি নিজেদের বলে দাবি করে ড্রাগনের দেশ। বরাবরই দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়ে আসছে জিংপিং প্রশাসন। প্রথমে সম্পূর্ণ নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে সাগরটির প্রায় ৯০% এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে বিতর্ক উসকে দেয় বেইজিং, আর এবার ভাসমান ব্যারিয়ার দিয়ে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইকে আরো বেশি পক্ষ করার চেষ্টা। যাতে ফিলিপাইনের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের ফাটল আরো বেশি চওড়া হলো। আর ফিলিপাইনের রেল প্রজেক্ট থেকে হাত তুলে নিয়ে কফিনে শেষ পেরেক টা পুতে দিল জিংপিং প্রশাসন। এই জল এখন কত দূর গড়ায় সেটাই দেখার অপেক্ষা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version