বাঁশির সুরে শান্ত হন সবুজ কালী, দেবী ভীষণ জাগ্রত

।। প্রথম কলকাতা ।।

দূর থেকেই ভেসে আসছে জুঁই ফুলের গন্ধ। একটু এগোলেই কানে আসছে বাঁশির সুর। হরিনাম সংকীর্তনের ধ্বনিতে চারিদিক মুখরিত। এই অভিজ্ঞতা হবে এক কালী মন্দিরে পা রাখলে। সাধারণ কালী মূর্তির থেকে একেবারে আলাদা সেই দেবীর রূপ। কৃষ্ণ-কালী একই অঙ্গে বিরাজমান। বাংলার বুকে শুধু এই জায়গাতেই রয়েছেন সবুজ কালী। বাঁশির সুরে যেখানে জাগ্রত হয়ে উঠেন দেবী স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ কালীর রূপ ধরেন এখানে সাধারণ পুজোর নিয়ম নয়। সবুজ কালীকে প্রসন্ন করতে কী করতে হয় জানেন? মা কালীর গায়ের রঙ কচি কলাপাতার মতো সবুজ। ৭৪ বছর ধরে পূজিত হন সবুজ কালী।

হুগলি হরিপালের শ্রীপতিপুর গ্রাম অধিকারী পরিবারে প্রতিষ্ঠিত মা সবুজ কালী। মাকে বাঁশি বাজিয়ে শোনানো হয়। যেহেতু মা কৃষ্ণ ও কালির রূপ তাই এখানে নেই কোনও বলি প্রথা। দেবী পূজার আসন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে পঞ্চ মুণ্ডির আসন এখানে দেবী কালীও পরম বৈষ্ণব বিগ্রহের কপালে বৈষ্ণব তিলক তার প্রমাণ দেয়। স্বয়ং বামদেবের সঙ্গেও এই পরিবারের যোগ রয়েছে। সবুজ কালী মায়ের পছন্দ ইলিশ মাছ আর জুই ফুল। এক দরিদ্র বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম বটকৃষ্ণ অধিকারীর শ্রীপতিপুর গ্রামের বাসিন্দা। শ্মশানে সাধনা করতে করতে সিদ্ধিলাভ করেন।

নতুন দুর্বা ঘাসের উপর শ্যাম ও শ্যামাকে একই অঙ্গে দেখেন স্বপ্নে বটকৃষ্ণ অধিকারী রটন্তী কালিপুজোর দিন প্রতিষ্ঠা করেন এই সবুজ কালীকে। বাড়িতেই নিত্য সেবা পান নারায়ণ। কুলীন বৈষ্ণব পরিবারেকেউ তিলক সেবা রাধা গোবিন্দের নাম না করে জল স্পর্শ করেন না। সেই বৈষ্ণব বাড়িতে কালীপুজো। সেদিন কিন্তু কারোর বারণ শোনেননি বটকৃষ্ণ অধিকারী এখনও রীতি মেনে পুজো হয়ে আসছে।

পুরনো রীতি মেনে এখনও মাকে বাঁশি বাজিয়ে শোনান মন্দিরের সেবায়েতরা। মায়ের পুজো শুরু হয় মঙ্গলারতির মাধ্যমে। বেলায় হয় নিত্যপুজো। সেইসঙ্গে নিবেদন করা হয় ভোগ। বছরের তিনটি অমাবস্যায় মন্দিরে ভিড় থাকে চোখে পরার মতো।সবুজ কালীর এই বিশেষ রূপ দর্শন করতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন এই বাড়িতে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version