World Cup Qatar 2022: সত্যি হল গুঞ্জন, ইসলাম ধর্ম প্রচারে কাতার কাজে লাগাচ্ছে বিশ্বকাপকে!

।। প্রথম কলকাতা ।।

World Cup Qatar 2022: সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং শীতকালে অনুষ্ঠিত হওয়া কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজনে সারা বিশ্বজুড়ে সাড়া পড়ে গিয়েছে। কাতার মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম কোনো মুসলিম দেশ, যেখানে বিশ্বকাপের আয়োজন হয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে, কাতার ইসলামিক শিক্ষা এবং পরিচিতি তুলে ধরতে কাজে লাগাচ্ছে বিশ্বকাপকে। বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে ছুটে আসা অগণিত বিভিন্ন ধর্মে- বর্ণের দর্শক আর ভক্তরা এখন কাতারে জড়ো হয়েছেন। এখানে আসা আগত অতিথিদের সামনে নানান ভাবে তুলে ধরা হয়েছে ইসলামিক শিক্ষা এবং পরিচিতি। যদিও গুঞ্জন অনেক দিন আগেই উঠেছিল। এবার সেই গুঞ্জন সত্যি হল। জমকালো আয়োজনে ব্যতিক্রমী ছকে কামাল দেখালো কাতার। এত বছর ধরে চলে আসা বিশ্বকাপ আয়োজনের চেনা ছক বদলে গেল কাতারের মাটিতে। বিশ্বকাপ উদ্বোধনীতে ছিল না কোন লাস্যময়ী নারীদের পারফরমেন্স। অথচ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে হলিউডের বড় বড় স্টারদের নাচ আর গানে মুখরিত স্টেডিয়াম। নাচ অবশ্যই ছিল কিন্তু সেখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন একদল পুরুষ। শেখরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে খেলা দেখছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম, যেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছিল কোরআন তেলাওয়াতের। জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যানের সঙ্গে কোরাআন তেলাওয়াত করেন ২০ বছর বয়সী ঘানিম (ঘানেম) আর মুফতাও। বিরল রোগের কারণে জন্ম থেকেই ঘানেম আল মুফতাহের পা নেই। দুজনের বক্তব্যে উঠে এসেছে বিশ্ব ঐক্য এবং সাম্যের কথা।

স্টেডিয়ামে রয়েছে নামাজ এবং অজুর জায়গা। বিভিন্ন ভাষায় আওকাফ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রয়েছে ইসলামিক প্রদর্শনীর আয়োজন। বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী। আরবিতে লেখা বিভিন্ন হাদিস গুলোর পাশাপাশি ইংরেজি অনুবাদও সংযুক্ত করা হয়েছে। হোটেলে ঘর গুলিতে একটি করে বারকোড রয়েছে যা, পরিচয় করিয়ে দেয় ইসলামিক শিক্ষা, ইসলামিক বিশ্বাস এবং হাদিসের সঙ্গে। আজানের জন্য স্টেডিয়ামে রয়েছে মাইক্রোফোন। কাতারে আরব এবং ইসলামী স্থাপত্য শৈলীর আদলে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আটটি স্টেডিয়াম। কাতারের অভিনব এই আয়োজনের প্রশংসা করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ মুসলিম স্কলারসের মহাসচিব। বর্তমানে কাতারের রাজধানী দোহার কাটরা কালচারাল ভিলেজ মসজিদ বহু বিশ্বকাপ ভক্তদের নজর কেড়েছে।

নাচ গান ছাড়া যে মানুষকে বিনোদন দেওয়া যায় তা দেখিয়ে দিয়েছে কাতার। আয়োজনকে সফল করতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি আয়োজক কমিটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আল বায়ত স্টেডিয়ামে চলেছে আলোর খেলা। সেখানে থাকা প্রায় ৬০ হাজার দর্শকের সামনে দেখানো হয় মাসকট লা’ইব কে। আরবি শব্দ লা’ইব এর বাংলা অর্থ বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন খেলোয়াড়। ঐতিহ্যবাহী সাদা রংয়ের পোশাক পরা লা’ইব-কে দেখতে অনেকটা ক্যাসপার দ্য ফ্রেন্ডলি ঘোস্টের মত। আলোর খেলার পাশাপাশি ছিল জমকালো গ্রাফিক্সের কাজ এবং অনবদ্য ড্রামস পারফরম্যান্স। মঞ্চে আলো ছায়ার খেলার মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রের উপর মরুভূমি এবং মহাসাগরের আবহাওয়া তৈরি করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফুটে উঠেছে কাতারের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিক নানান দিক। উদ্বোধনী ম্যাচের স্টেডিয়ামে থাকা স্টেডিয়ামের প্রত্যেকটি আসনে দর্শকদের জন্য রাখা হয়েছিল গিফট ব্যাগ। যেখানে ছিল এক বোতল ওউড অর্থাৎ আতর। যা, গোটা বিশ্বকে কাতারের ইতিহাসের কথা মনে করিয়ে দেবে।

কাতারের বিশ্বকাপে ছিল না হলিউডের নামিদামি অভিনেত্রী কিংবা পপ তারকা। এখানে শুধুমাত্র মঞ্চ মাতিয়েছেন দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় ব্র্যান্ড বিটিএস-এর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য জাংকুক। তিনি বিশ্বকাপের মঞ্চে ‘ ড্রিমার্স’ গানে রীতিমত ঝড় তোলেন। ঠিক সেই সময় আনন্দকে দ্বিগুণ করে মসকট লাইব। জাংকুকের পাশাপাশি গেয়েছেন কাতারের গায়ক ফাহাদ আল কুবাইশিও। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী এবং আয়োজনের এমন বৈশিষ্ট্য দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বিশ্বকাপে ইসলামের কথা তুলে ধরেছে কাতার। ফিফা বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোন মুসলিম রাষ্ট্রে সবথেকে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হলো। যেখানে বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে শুরু করে আলোকসজ্জার আয়োজনে রয়েছে মুসলিম সংস্কৃতি আর বিশ্বাসের ছোঁয়া।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version