Pakistan: পাক প্রধানমন্ত্রীর অভিশপ্ত কুর্সি! আজ পর্যন্ত ৫ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি কেউ

।। প্রথম কলকাতা ।।

Pakistan: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিটাই অভিশপ্ত। কেন জানেন? (৫ বছর একটানা কেউ টিকতে পারেননি) ইমারান খান প্রধানমন্ত্রী না হলে এমন পরিণাম কি হত? ইমরান খানের লন্ডনে নির্বাসিত হওয়ার চান্স কতটা এমূহুর্তে। পাকিস্তান ব্যান হতে পারে তেহেরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। অনেকেই বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে একটা কালো ছায়া লেগে থাকে সবসময়৷ শাহবাজ শরিফের পারবেন তো ৫ বছরের মেয়াদ ছুঁতেও। ১৯৪৭এর লিয়াকত আলি থেকে শুরু করে বেনজির ভুট্টো ফিরোজ খান নুন থেকে নওয়াজ শরিফ কেউ পারেনি পাঁচ বছরের পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে। কিন্তু কেন?

১) লিয়াকত আলী খান (৪ বছর)

লিয়াকত আলী খান পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট নির্বাচিত হন। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডিতে হত্যার শিকার হন তিনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালন করতে পেরেছেন।

২) খাজা নাজিমুদ্দিন (২ বছরের কম সময়)

লিয়াকত আলী খান মারা যাওয়ার পর ১৯৫১ সাল খাজা নাজিমুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী হন। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাত বেঁধে যাওয়ায় নাজিমুদ্দিনকে পদত্যাগ করতে বলেন তৎকালীন গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন। পদত্যাগে রাজি ছিলেন না তাই এরপর ১৯৫৩ সালে গভর্নর জেনারেল তাঁকে পদচ্যুত করেন।

৩) মোহাম্মদ আলী বগরা (২ বছর)

১৯৫৩ সালের ১৭ এপ্রিল মোহাম্মদ আলী বগরাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল
আঞ্চলিক ইস্যুজনিত দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে ও জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ১৯৫৫ সালে ভারপ্রাপ্ত গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা তাঁকে সরিয়ে দেন।

৪) চৌধুরী মোহাম্মদ আলী (মাত্র ১ বছর)

১৯৫৫ সাল পাকিস্তানের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী মোহাম্মদ আলী। নিজ দলের সদস্যদের কোন্দলকে কেন্দ্র করে ১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন তিনি। আইয়ুব খানের একনায়কতন্ত্র নিয়ে কথা বলার কারণেও চাপে ছিলেন।

৫) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (১ বছর)

১৯৫৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। তবে গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জার সঙ্গে বিরোধের জেরে ১৯৫৭ সালের ১৭ অক্টোবর পদত্যাগে বাধ্য হন।

৬) ইব্রাহিম ইসমাইল চুন্দ্রিগড় (২ মাস)

১৯৫৭ পাকিস্তানের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ ইব্রাহিম ইসমাইল চুন্দ্রিগড়। তবে তিনি মাত্র দুই মাস ক্ষমতায় ছিলেন।

৭) ফিরোজ খান নুন (১ বছরের কম সময়)

১৯৫৭ সালেই ১৭ ডিসেম্বর ফিরোজ খান নুনকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা। জেনারেল আইয়ুব খান দেশে সামরিক আইন জারির পর ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর তাঁকে পদচ্যুত করা হয়।

৮) নুরুল আমিন (১৩ দিন)

১৩ বছর ধরে সামরিক আইন জারি থাকার পর নুরুল আমিনকে ইয়াহিয়া খানের প্রশাসনের অধীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দায়িত্ব নেওয়ার ১৩ দিনের মাথায় ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।

৯) জুলফিকার আলী ভুট্টো (৩ বছর ১১ মাস)

১৯৭৩ সাল জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর ১৯৭৭ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পান তিনি। তবে সামরিক একনায়ক জেনারেল মোহাম্মদ জিয়াউল হক ক্ষমতা দখল করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। ১৯৭৯ সালে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয় ভুট্টোকে।

১০) মোহাম্মদ খান জুনেজো (৩ বছর)

সেনাশাসনের অধীন ১৯৮৫ সাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন মোহাম্মদ খান জুনেজো। তবে ১৯৮৮ সালের ২৯ মে জুনেজো সরকারকে বাতিল করা হয়।

১১) বেনজির ভুট্টো (২ বছর)

দীর্ঘদিন ধরে জেনারেল জিয়াউল হকের সেনাশাসনের অধীন থাকার পর। ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা বেনজির ভুট্টো। ১৯৮৯ সালে অভিশংসন প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যায় তাঁর দল। শেষ পর্যন্ত তাঁর সরকারও ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পারেনি। ১৯৯০ সালের ৬ আগস্ট প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খান
তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করেন।

১২) নওয়াজ শরিফ (৩ বছর)

১৯৯০ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নওয়াজ শরিফ। ১৯৯৩ সালের ১৮ জুলাই নওয়াজ শরিফ ও গোলাম ইসহাক খানকে পদত্যাগে বাধ্য করেন সেনাপ্রধান ওয়াহিদ কাকার।

বেনজির ভুট্টো (দ্বিতীয় মেয়াদে ৩ বছর)

১৯৯৩ সালে আবারও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বেনজির ভুট্টো। তবে এ দফায়ও তিনি তাঁর মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট ফারুক লেঘারি তাঁর সরকারকে বরখাস্ত করেন।

নওয়াজ শরিফ (দ্বিতীয় মেয়াদে ২ বছর)

১৯৯৭ সালে নওয়াজ শরিফ আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর জেনারেল পারভেজ মোশাররফ জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং নওয়াজকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।

এরপর মির জাফরুল্লাহ খান জামালি ১৯ মাস ও ইউসুফ রাজা গিলানি ৪ বছর। ২০১৩ সালের জুনে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন নওয়াজ শরিফ তবে ৫ বছর পূরণ করা হয়নি। এরপর ইমরান খান সাড়ে তিন বছরেরও বেশি কাটালেন পিএম কুর্সিতে৷ তবে এবার পরিণামটা কি? আন্দাজ করেই আঁতকে উঠছেন অনেকে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version