।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh Market price: আমাদের নয়, এই প্রশ্নটা বাংলাদেশের মানুষ এর প্রশ্ন। কেন নিত্য পণ্যের দাম এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে? দাম বাড়তে বাড়তে চিনির স্বাদও তেতো লাগছে। কাঁচা লঙ্কা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মসলা, দাম ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু কেন ৬ মাসেও কমলো না চিনির দাম? দায় কার? বিক্রেতারা কি বলছেন? কেন হু হু করে বেড়ে চলেছে কাঁচা লঙ্কা, মশলাপাতির দাম? কি চাইছে ক্রেতা বিক্রেতারা? শুধুই কি কাঁচা লঙ্কা, চিনি, মশলাপাতি? মাছ, মাংসের দর কেমন? ভারত পাশে দাঁড়ালেই সমস্যার সমাধান হবে কি? চিনি, মশলা, কাঁচা লঙ্কা। কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবেন?
চিনির বাজারে অস্থিরতা থামছে না। দফায় দফায় দাম নির্ধারণ করা হলেও সেই দামে ভোক্তারা চিনি কিনতে পারছেন না। সরকার কী করছে? সর্বশেষ সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১২০ টাকা ঠিক করলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে সেই ১৪০ টাকায়। রাশ টানা যাচ্ছে না। এই গোটা পরিস্থিতির নেপথ্যে আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করছেন আমদানিকারকরা। অলরেডি এই নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েকবার বৈঠক হয়ে গেছে। তবে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশে ভারত থাকলে কী ইক্যুয়েশন টা অন্যরকম হতো? বছরে বাংলাদেশে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন। এর মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই থেকে মে পর্যন্ত চিনির চাহিদা ১৭ লাখ ৬০ হাজার টন। এই সময়ে দেশে উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার টন। আমদানি করা হয়েছে ১৬ লাখ ৬৭ হাজার টন। অভ্যন্তরীণ ও আমদানি নিয়ে মোট সরবরাহের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৮ হাজার টন। ঘাটতি আছে ৭২ হাজার টন চিনি। ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে চিনি আমদানি করা হলেও চলতি সময়ে তা হচ্ছে না। সেইজন্য ব্রাজিল থেকে আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাকে করে খোলা বাজারে চিনি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ সময়ে নির্ধারিত দাম কার্যকর না হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বশেষ গত ১০ মে দাম ঠিক করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনির কেজি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, দাম চাহিদার ওপর নির্ভার করছে, যা চাহিদা তার থেকে আমদানি কিছুটা কম। সমাধানের চেষ্টা চলছে। কিন্তু, কবে সমস্যার সমাধান হবে সেই উত্তর জানা নেই কারোর। অন্যদিকে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা লঙ্কার দাম। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। গত সপ্তাহ যা ছিল ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত ক্রেতারা বলছেন বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। আর বিক্রেতাদের দাবি, সরবরাহ ঘাটতি ও পরিবহন সংকটের কারণে বাড়ছে কাঁচা লঙ্কার দাম। তবে, কাঁচা লঙ্কার দাম আকাশছোঁয়া হলেও টমেটো, করলা, বেগুন, ঢেঁড়স, শসা, পেঁপে, কচুর লতি, আলু, বরবটি, পটোল, কাঁচা আম, গাজরের দাম স্থিতিশীল।
আর মশলাপাতি? সে তো ধরাছোঁয়ার বাইরে। দারচিনি ৪৪০ থেকে ৪৫০ টাকা, এলাচ প্রকারভেদে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, গোলমরিচ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৭০০ টাকা, আলুবোখারা ৮০০ টাকা, কাজুবাদাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, ধনিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।এ তো গেল নিত্যপণ্য। কিন্তু মাছ মাংস। ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। মূলত বাজারে মুরগির সরবরাহ বাড়ায় ও চাহিদা কম থাকায় দাম কমতির দিকে। এদিকে বাজারে দেশি মাছের দাম কিছুটা বাড়তি হলেও স্থিতিশীল রয়েছে চাষের ও সামুদ্রিক মাছের দাম। তবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নাগালের মধ্যে আনার কৌশল টা কী? সেটাই এখন বাংলাদেশে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে ক্রেতা বিক্রেতারা বলছে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। তাহলেই রাশ টানা সম্ভব। যদিও, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, অলরেডি বাংলাদেশ হাঁটছে সেই পথেই।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম