।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশীদের ভিসা ট্র্যাপে ফেলে দিল ওমান। কোন ট্রেন্ডে হাসিনার দেশের রিস্ক বাড়ছে? লাখ লাখ বাংলাদেশীর সঙ্গে কী ঘটতে যাচ্ছে? যারা আটকে আছে ওমানে। বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টাকে কোন অ্যাঙ্গেলে দেখছে? ওপার বাংলায় পড়তে যাচ্ছে মারাত্মক এফেক্ট। ভিসা বন্ধের জন্য কত বড় সংকটে পড়তে চলেছে বাংলাদেশ? কী বলছেন বিশ্লেষকরা? আগে পিছে না ভেবেই কাতারে কাতারে বাংলাদেশী ওমানে পাড়ি দেয়, আর তার ফল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটা এবার হারে হারে টের পাচ্ছে বাংলাদেশ। ওমান ভিসা দেবে না বাংলাদেশিদের একদম স্ট্রেটকাট জানিয়ে দিয়েছে ওমানের দেশটির রয়্যাল পুলিশ। আর, বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা যেসব দেশকে বেছে নেয় তার মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছে এই ওমান। আগে একটা প্রতিবেদনে জানিয়েছিলাম কাজের প্রয়োজনে বিশেষত ব্যবসার জন্য, লাইফ রিস্ক নিয়েও মধ্যপ্রাচ্যে যায় বাংলাদেশিরা। তাহলে, এখন সেইসব বাংলাদেশিদের কী হবে? জানেন দিনে রাতে ওই দেশে কি ঘটে বাংলাদেশীদের সাথে?
তাহলে জানুন ওমানে যত বাংলাদেশি আছেন সেই তুলনায় কর্মসংস্থান নেই। ফলে যারা আগে থেকে চাকরি নিশ্চিত করে যাচ্ছেন না, তাদেরকে বেকার থাকতে হচ্ছে। অথবা স্বল্প মজুরিতে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। না, এখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশিদের সঙ্গে ঘটছে আরও বড় কিছু। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেক সময় কাজ না পেয়ে বাংলাদেশীরা দালালদের খপ্পরে পড়ে পাচারও হয়ে যাচ্ছে। অনেকে ইরান বা তুরস্কের মতো দেশ হয়ে ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে। সব থেকে বড় কথা কি জানেন বাংলাদেশিরা সাধারণত ‘টুরিস্ট ভিসায়’ না গেলেও ‘ভিজিট ভিসায়’ ওমান যান, যাদের অনেকেই আর কাজ পান না। এমন বিভিন্ন কারণে শ্রমিকদের সেফটি এবং অধিকার নিশ্চিত করতেই ভিসা বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার বড়সড়ো এফেক্ট পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশে। ওমানে এমন সিদ্ধান্তের প্রাথমিক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের উপর। রিজার্ভ সংকটের মধ্যে বিদেশে একটি বড় চাকরির বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়া বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও ওমান বলছে ওমানি চাকরি বাজারের চাহিদা ও স্থিতিশীলতার সাথে ব্যালেন্স করার জন্য এই স্টেপ নেওয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, এটা টেম্পোরারি সিচুয়েশন তাহলে কি আগের পরিস্থিতিতে ফেরার চান্স আছে এখনও? ফিরতে কতটা সময় লাগবে? আদৌ কি বাংলাদেশীরা ভিসা পাবে? রেমিট্যান্সের ফ্লো স্বাভাবিক হবে? চান্স আছে! পুরো জিনিসটা রিস্ট্রাকচার করে যদি কোনো পলিসিগত পরিবর্তন করতে হয় সেটা করে তারা আবার ভিসা চালু করবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ওমানের জনসংখ্যা ৫০ লাখের মতো। বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, ওমানে ২০ লাখের মতো প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা ৭ লাখের উপরে। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ লাখের বেশি বাংলাদেশি এর মধ্যে অলরেডি ওমানে পাড়ি দিয়েছে। এত এত বাংলাদেশি ওমানে চলে যাচ্ছে। বিষয়টা শুনতে খুবই অস্বাভাবিক লাগলেও এটাই ঘটছে বাস্তবে। কিন্তু তাই বলে ভিসা বন্ধের পদক্ষেপ?
এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন বাংলাদেশের একটা ট্রেন্ড, যে একটা দেশে মানুষ কাজের প্রয়োজনে যেতে শুরু করলে সেখানে আরো অনেকেই যেতে শুরু করে। তখন এরকম ‘নিষেধাজ্ঞা’ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। যেটা হাসিনা সরকার জানে বোঝে। আর তাই ওমানে ভিসা বন্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ঠিকমতো চাকরির বন্দোবস্ত না করেই অনেকে চলে যাচ্ছেন, এই কারণে সাময়িকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে অবৈধ অভিবাসনে না যান সেই অনুরোধও করেছেন তিনি। তবে শুধু ওমান নয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবেও এরকম নিষেধাজ্ঞা ছিল। নানান কারণে মালয়েশিয়াতেও চার বছরের মতো বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া বন্ধ ছিল, যেটা ২০২২ সালের অগাস্ট থেকে আবার শুরু হয়েছে। বাহরাইনেও বাংলাদেশিদের জন্য চাকরির বাজার বন্ধ ছিল প্রায় সাড়ে চার বছর। পরবর্তীতে আবারও চালু হয়েছে এতেই, বাংলাদেশিদের টেনশন বাড়ছে। বলছেন আবুধাবি বন্ধ হয়ে গেলো, এখন ওমান, এরপর কুয়েত বা কাতার বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশের মানুষ যাবে কোথায়? তবে, এতোটাও দুশ্চিন্তার বিষয় নেই বলে মনে মত বিশেষজ্ঞদের আরেকাংশের। এই মুহূর্তে ওমানের ভিসা বন্ধ হয়ে যাবার বিষয়টা বাংলাদেশের উপর এখনই খুব বড় এফেক্ট ফেলবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা বাকিটা বলবে সময়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম