Kiriteswari Shakti Peeth Temple: তারাপীঠ নয়! এই সতীপীঠে দেবী কালীর ভোগে মাছ থাকবেই, বাংলার আদি তীর্থক্ষেত্র

।।প্রথম কলকাতা।।

Kiriteswari Shakti Peeth Temple: জাগ্রত দেবী কিরীটেশ্বরী(Kiriteswari Shakti Peeth)।দেবীর গোপন রূপ দেখে অন্ধ হয়েছিল ভক্তরা!তারা মায়ের (tarapith)মতোই এখানে মায়ের প্রিয় খাবার মাছ।বাংলার অন্যতম আদি তীর্থক্ষেত্র। মন্দিরের( temple) পরতে পরতে নবাবি আমলের ইতিহাস। জাতি -ধর্ম মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । কিরীটেশ্বরী সতীপীঠে(Kiriteswari Shakti Peeth) আজও যেন জীবন্ত মায়ের রূপ।

মুর্শিদাবাদে( Murshidabad) কালী মায়ের এই প্রাচীন -জাগ্রত মন্দিরে গিয়েছেন?৫১ সতীপীঠের অন্যতম ।এখানে দেবী সতীর মুকুটের কণা বা কিরীট পড়েছিল। তাই এই পীঠের নাম কিরীটেশ্বরী।যেহেতু দেবীর কোনও অঙ্গ পড়েনি।তাই শক্তিসাধকদের অনেকে একে উপপীঠও বলেন। কেউ এই তীর্থস্থানকে ডাকেন কীর্তিশ্বরী (Kiriteswari Shakti Peeth)বলে।আবার, দেবীর মুকুটের অংশ পড়েছিল বলে অনেকে ডাকেন মুকুটেশ্বরী বা মুক্তেশ্বরী বলে। শাস্ত্র অনুযায়ী দেবী এখানে বিমলা রূপে পরিচিত আর তাঁর ভৈরবের নাম সম্বর্ত।কিন্তু মন্দিরে ঢুকলে আপনি দেখতে পাবেন দেবীর এখানে কোনও মূর্তি নেই।

এখানে দেবীর কোনও নিয়তাকার মূর্তি নেই কোনও ছবিও এখানে পূজিত হয় না।একটি লাল( red) রঙের শিলাকেই এখানে দেবীরূপে পূজা করা হয়। শিলাটি একটি আবরণে দিয়ে ঢাকা।নিয়ম মেনে প্রতি বছর দুর্গাষ্টমীতে এই আবরণটি পাল্টানো হয়।শোনা যায়,যে মুকুটের মহিমাতেই এই শক্তিপীঠের উৎপত্তি তা রানি ভবানীর গুপ্তমঠে সুরক্ষিত রয়েছে। গুপ্তমঠ দেবী মন্দিরের কাছেই ।এমনকী দেবীর প্রাচীন মন্দিরের( temple) ধ্বংসাবশেষ নতুন মন্দিরের সামনেই রয়েছে এখনও।অতীতের সেই ভগ্ন মন্দির দক্ষিণদুয়ারী।ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৪০৫ সালে দেবীর প্রাচীন মন্দিরটি ভেঙে পড়ে। তার পরে ১৯ শতকে লালগোলার( lalgola) রাজা দর্পনারায়ণ রায় নতুন মন্দির নির্মাণ করান।

মুর্শিদাবাদের( murshidabad) অলি-গলির সঙ্গে নবাবি আমলের ইতিহাস জড়িয়ে। কথিত রয়েছে,পলাশীর( palashi war) যুদ্ধের পর যখন মিরজাফর, নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে তাঁর অন্যতম সঙ্গী রাজা রাজবল্লভকে ডুবিয়ে মারেন। সেই দিন এই মন্দিরের এক শিবলিঙ্গ নাকি নিজে থেকেই ফেটে গিয়েছিলমল।স্থানীয়রা বলেন, মিরজাফর শেষ বয়সে কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত হন তাঁর বিশ্বাস জন্মায় দেবীর চরণামৃত পান করলে তিনি রোগমুক্ত হবেন। দেবীর চরণামৃত যখন তাঁর কাছে পৌঁছয়,তখন বাংলার নবাব শেষ নিশ্বাস নিচ্ছেন।দেবীর চরণামৃত মুখে নিয়েই নাকি প্রয়াত হন বাংলার ইতিহাসের অন্যতম বিতর্তিক চরিত্র মিরজাফর।

লোকমুখে শোনা যায় একসময় আফগান আক্রমণের আশঙ্কায় পাণ্ডারা মূল মন্দির থেকে গুপ্তমঠে সরিয়ে নিয়ে আসতে চান।প্রথমে জনাকয়েক পাণ্ডা মায়ের রূপ দেখেন তারপরেই নাকি তারা অন্ধ হয়ে যান।ভাগীরথী তীরে এই মন্দিরে কালীপুজোর দিনে এখনও প্রচলিত প্রাচীন রীতিনিতি। প্রতিদিন দেবীর নিত্যপুজো হলেও কালীপুজোয় ( kali puja) কিছু বিশেষ নিয়ম এখনও মানা হয়। দুপুরে ভাজা, তরকারি ও মাছ-সহ অন্নভোগ হয়।তারাপীঠে মা তারার যেমন প্রিয় পোড়া শোল মাছ।তেমনই এখানে মায়ের অন্নভোগে মাছ থাকবেই।কালীপুজোর দিন রাতভর দেবীর আরাধনা চলে।
কালী-মাকে তুষ্ট করতে পুজো শেষে ছাগলও বলি রীতি এখনও প্রচলিত । মুর্শিদাবাদ ( murshidabad)নাম শুনলেই যে চোখের সামনে ভেসে উঠে প্রাচীন বাংলার নবাবি আমল।তিন ধর্মের স্থাপত্যের মিশেল রয়েছে এই মন্দিরে। ইতিহাসবিদরা বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মের স্থাপত্যের নিদর্শন রয়েছে।তবে অনান্য সতীপিঠের তুলনায় এই মন্দির বেশিরভাগ মানুষের কাছে এখনও অজানাই থেকে গিয়েছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version