মুসলিমরাই সাজেন এখানে রাম-রাবণ ! ইসলামের দেশে হিন্দু মন্দিরের অপার মহিমা, চমকে যাবেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

মুসলিমরা এখানে হন রাম, রাবনও হন তারাই। আপাদমস্তক এই মুসলিম দেশে রামায়ন চলে প্রতিদিন। একটা সনাতন মন্দিরের ভেতরে ২৪০ টা মন্দির। পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নয়, এদেশের হিন্দু মন্দির নজর কাড়ে সকলের। নীল সমুদ্রে ঘেরা বালি বিচ বা গিলি আইল্যান্ড। ইন্দোনেশিয়ায় আরও এমন কিছু রয়েছে যা অবাক করবে আপনাকে। সবথেকে বড় এখানকার ধর্ম আচার অনুষ্ঠান। গোটা একটা মুসলিম দেশের একের পর এক হিন্দু মন্দিরের সমাহার। এদের মধ্যে সবথেকে অবাক করা মন্দিরই হল প্রমবানন মন্দির। এমন এলাকায় তৈরি এ মন্দির যা অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ তা সত্ত্বেও কোনও ক্ষতি হয় না এই মন্দিরের। বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হল ইন্দোনেশিয়া। খ্রিস্টিয় নবম শতাব্দীর হিন্দু দেবালয়টিকে ১৯৯১-তে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বলে ঘোষণা করে UNESCO। কোন ভগবানকে পুজো করা হয় এই মন্দিরে? রাম, শিব, ব্রহ্মা নাকি কোনও দেবীর প্রত্যহ পুজো হয়?

ভারতের বাইরের অন্যতম বড় দেবালয় হিসেবে বিশেষ খ্যাতি রয়েছে প্রাম্বানান মন্দিরের। গোটা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় হিন্দু তীর্থস্থান এটি। আর এই বিশাল হিন্দু মন্দির প্রাঙ্গণেই প্রতিদিন হয় ‘রামায়ণ ব্যালে’-র অনুষ্ঠান। তাতে যারা অংশগ্রহণ করেন তাদের সিংহভাগই কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী। মানে বেশিরভাগ মুসলিম অভিনেতারাই পারফর্ম করেন রামায়ন। ১৯৬১-তে প্রথমবার প্রাম্বানান মন্দির প্রাঙ্গণে রামায়ণ ব্যালে-র অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ততদিনে অবশ্য মুসলিম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ফেলেছে ইন্দোনেশিয়া। তাতে কিন্তু এই অনুষ্ঠানের উপরে কোনও আঁচ আসেনি। উলটে ওই বছর থেকে রামায়ণ ব্যালে নিয়মিত হয়ে যায়। পর্যটকদের দর্শনের একটা বড় স্থানই হল এই প্রমবানন মন্দির কিন্তু মুসলিম সাম্রাজ্যের মধ্যে কে তৈরি করেছিলেন এই মন্দির? আসলে নির্মাণের পিছনে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভূত ইতিহাস।

ইন্দোনেশিয়ার প্রাচীন নাম ছিল জাভা। একটা সময় সেখানে রাজত্ব করতেন হিন্দু সঞ্জয় রাজবংশের রাকাই পিকাতান। তাঁর সময় বৌদ্ধ ধর্ম গোটা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। গড়ে ওঠে একাধিক মঠ ও স্তূপ। স্থাপত্য কীর্তির দিক থেকে সেগুলিকে হারিয়ে দিতেই সুবিশাল মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন রাকাই পিকাতান। এখানে পুজো হয় মূলত ত্রিমূর্তি অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের। মূল মন্দিরটির ভিতরে রয়েছে আরও কয়েকটি ছোট ছোট মন্দির। স্থানীয় ভাষায় এই প্রমবানন মন্দিরকে লোরো জংগ্রাঙ্গও বলা হয়। বলা হয় প্রায় ৫০৮ ধরনের নানা আকৃতির পাথর দিয়ে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এই এলাকা অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ হওয়ার জেরে পরবর্তীতে এর রক্ষণাবেক্ষণ শুরু করা হয়। জানা যায় একাদশ শতকে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুত্পাতের ফলে মন্দিরের বিশাল অংশ ধসে গিয়েছিল। পরে রাজনৈতিক ক্ষমতা শুরুর পর সপ্তদশ শতকে এর রক্ষণাবেক্ষণ শুরু করা হয়। প্রতি বছর সেখানে পা পড়ে হাজার হাজার সনাতনীর।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version